আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রামু বৌদ্ধবসতিতে অগ্নিসংযোগ নিয়ে ‘রাজনীতি’ কাম্য নয়; মূল অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

রামু-উখিয়া-টেকনাফ-পটিয়ায় বৌদ্ধজনপদে হামলা ও অগ্নিসংযোগ নিঃসন্দেহে জঘন্য ও নৃশংস। আমরা এ তান্ডবের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করি। ক্ষতিগ্রস্থ ভাই-বোনদের প্রতি প্রকাশ করছি আমাদের আন্তরিক সহানুভূতি। পূর্বাপর ঘটনা প্রমাণ করে এ ধ্বংসযজ্ঞ পরিকল্পিত নয়, বরং ধর্মগ্রন্থ অবমাননায় সংক্ষুদ্ধ জনগোষ্ঠীর প্রচন্ড ক্ষোভের তাৎক্ষণিক বহিঃপ্রকাশ। ধর্মানুভূতি আহত হলে সে ধর্মের অনুসারীদের আবেগ বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মত সামনে আঘাত হানে, এটা আহত অনুভূতির স্বাভাবিক প্রবণতা।

যার প্রমাণ আরাকান, গুজরাট, আহমেদাবাদ ও আসাম। কিন্তু আমরা ভুলে যাই ব্যক্তির অপরাধের জন্য সম্প্রদায় দায়ী নয়। রামুর বৌদ্ধজনপদের মন্দির,বাড়ী-ঘর, সহায়-সম্পদের সাথে পবিত্র কুরআন অবমাননার সংশ্লিষ্টতা নেই। এ ধরণের হামলা ও অগ্নিসংযোগ ইসলাম কোন দিন অনুমোদন করে না। অনিয়ন্ত্রিত আবেগে যে আগুন জ্বলে তা নেভানো কঠিন হয়ে পড়ে,আগুনের তেজ কমে আসলে চোখের সামনে ভেসে উঠে ধ্বংসযজ্ঞের উন্মত্ততা।

সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে রামুর সহিংসতার জন্য উত্তম কুমার বড়ুয়া দায় এড়াতে পারেন না। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা-এর বক্তব্যেও তা স্পষ্ট হয়েছে ‘কথিত বৌদ্ধ যুবক নিজের ফেসবুকে প্রথমে নিজেই ছবিটি দেখে। এটি তার কাছে পাঠিয়েছে অন্য কেউ । অর্থাৎ সে নিজে এই ছবির স্রষ্টা নয়। তার অপরাধ হচ্ছে সে এটি অন্যদের কাছে পাঠিয়েছে।

কেন পাঠিয়েছে, তার কোনো সদুত্তর নেই। অর্থাৎ ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে সে ব্যর্থ হয়েছে। আর এভাবেই সে হয়ে উঠেছে ঘটনার উত্তেজক উৎস’। আমাদের জিজ্ঞাসা কথিত বৌদ্ধ যুবক নিজের ফেসবুকে অন্য কারো পাঠানো কুরআন অবমাননার ছবি মুছে না দিয়ে বন্ধুদের কাছে পাঠাতে গেল কেন ? তার এ অতিউৎসাহের নেপথ্য শক্তি কারা ? তাঁর একাউন্টে এ জাতীয় অবমাননাকর আরো ছবি কেন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এর সদুত্তর খুঁজতে হবে।

রামু কলেজে শিক্ষাগ্রহণকারী দলীল লেখক বৌদ্ধ যুবকের ইচ্ছাকৃত এ অপরাধকে জঘন্য বললে কম হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে যে কোন ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দেয়া। তদন্তের আগে একে অপরকে দায়ী করা। এক ধরনের মতলববাজ লোক আলিম-ওলামাদের প্রতি সন্দেহের আঙ্গুল তোলে। সব কাজে মৌলবাদের গন্ধ খোঁজে।

এতে করে আসল অপরাধী পার পেয়ে যায়। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিরপরাধ মানুষ যদি শাস্তি পায়, তা হলে তার পরিণতি হবে আরো ভয়াবহ। মযলুমের আর্তনাদ ব্যর্থ হয় না, ইতিহাস তার সাক্ষী। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি যে, ইসলামকে কোন না কোন ভাবে কটাক্ষ ও ব্যঙ্গ করা এক শ্রেণীর লোকের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। হোক সেটা বিদ্যালয়ের ক্লাশে, ফেইসবুকে, ব্লগে বা সংবাদপত্রের পাতায়।

এদের লাগাম টেনে ধরতে হবে এখনই। অন্যথায় রামুর ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকবে। আমরা আর ধ্বংস দেখতে চাই না, শুনতে চাই না বিপন্ন মানুষের করুণ আর্তনাদ। ধর্ম, ধর্মীয় গ্রন্থ ও ধর্মীয় উপাসনালয় অবমাননার অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়ন জরূরী হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে কক্সবাজারের রামু, উখিয়া ও পটিয়ার বৌদ্ধ বসতিতে হামলা এবং বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নি সংযোগের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।

ঘটনার উত্তেজক উৎস ওই বৌদ্ধ যুবককেও আইনের আওতায় আনতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আন্তঃধর্মীয় সৌহার্দ্য ও যে কোন উস্কানীর মুখে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা প্রদর্শনের উপর আমাদের সবিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.