“In a gentle way, you can shake the world.” এই মহাবিশ্বে কি আমরা একা ? নাকি বর্হিবিশ্বের অন্য কোথাও ছড়িয়ে আছে আমাদের মত কিংবা আমাদের চেয়ে উন্নত অনেক সভ্যতা? আন্তঃনাক্ষত্রিক সভ্যতার মিলন মেলায় আমরা কি কখনো যোগ দিতে পারবো ? সৃষ্টির আদি থেকে দার্শনিক, বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষের মনে এ নিয়ে উৎসুক্যের শেষ নেই। উড়ন্ত সসারে (UFO) করে অন্য গ্রহ থেকে মানবাকৃতির প্রাণী আসার ঘটনা শোনেনি এমন লোকের সংখ্যা কম। ছোটবেলায় রাতের আকাশে একটি ছোট্ট অনুজ্জ্বল বস্তুকে নীচ দিয়ে উড়ে যেতে দেখেছিলাম, যা উড়ন্ত সসার দেখার একটি দুর্লভ স্মৃতি হয়ে এখনো আমাকে নাড়া দেয়। অন্য জগত থেকে আগত অতিথিদের আমরা এলিয়েন বলে থাকি। আর এই এলিয়েনদের নিয়ে রচিত হয়েছে অসংখ্য বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, পর্দা কাঁপানো চলচিত্র ও টিভি সিরিয়াল।
মঙ্গল গ্রহ থেকে ছিটকে আসা উল্কাপিন্ডের অভ্যন্তরে বিজ্ঞানীরা এককোষী প্রানীর (Bacteria) ফসিলের সন্ধান পেয়েছেন যদিও এই পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। শনির উপগ্রহ (Moon) টাইটানে পৃথিবীর মত নদী, পাহাড় ও উপত্যকার চিহৃ দেখা গেছে, ভূপৃষ্ঠে পাওয়া গেছে মিথেন (Methane) সমৃদ্ধ জলীয় পদার্থের সন্ধান। এ ছাড়া বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপার বরফের আস্তরণের নীচে রক্ত-বর্ণ জলীয় সমুদ্রের খোঁজ পাওয়া গেছে। মহাশূন্যে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত বিশ হাজার কোটি গ্যালাক্সির প্রতিটিতে রয়েছে কোটি কোটি নক্ষত্রমালা। তাই কেবল পৃথিবী ছাড়া এই সব নক্ষত্ররাজির কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকবেনা তা কি হয়?
আইনস্টাইনের পর স্টিফেন হকিংকে এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী বলে মানা হয়।
কিছুদিন আগে বিবিসি চ্যানেলের ডকুমেন্টারীতে তিনিই যখন বললেন মহাবিশ্বের কোথাও যে এলিয়েন রয়েছে এ নিয়ে তার কোন সন্দেহ নেই, তখন না শুনে কি পারা যায় ? বিজ্ঞানী হকিং মনে করেন এলিয়েনরা পৃথিবীর অস্তিত্বে¡র জন্য হুমকি সরূপ তাই ওদের এড়িয়ে চলাটাই পৃথিবীর জন্য মঙ্গলজনক। কারণ এলিয়েনরা পৃথিবীর খোঁজ পেলে তাদের চেয়ে অনুন্নত মানব জাতিকে সহজেই সেবাদাসে পরিণত করে আমাদের প্রিয় পৃথিবীকে জবর দখল করে নেবে। বিজ্ঞানী হকিংয়ের মতে এলিয়েনের আগমনের ফলে মানব জাতির পরিণতি কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের পর আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের যা হয়েছিল ঠিকই সেরকম কিছু হতে পারে। কি ভয়ংকর কথা ?
পানিকে জীবনের আধার হিসাবে ধরে নিয়ে এ পর্যন্ত আমাদের সৌর জগতের বাইরে ৪০০টির বেশী গ্র্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে যেখানকার তাপমাত্রা পানি কিংবা তরল গ্যাস উৎপত্তির জন্য খুবই উপযোগী। পৃথিবীর মতই নক্ষত্রকে পরিভ্রমনরত এই সব গ্রহে প্রানের অস্তিত্ব¡ থাকাটা অসম্ভব কিছু নয়।
এই ধরণের গ্রহমালাকে বলা হয় "Goldilocks Planets"। তবে এলিয়েনরা মানুষের মত আলো ও পানির উপর নির্ভরশীল না হয়ে বিকল্প হিসেবে বিকিরণ, বিদ্যুৎ কিংবা অতিবেগুনী (ultra-violet) তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারনা। এ পর্যন্ত যে সব গ্রহের সন্ধান মিলেছে তাদের অধিকাংশই বৃহস্পতির মত ঘন গ্যাসের বলয়ে আবৃত এবং আকারে পৃথিবীর চেয়ে শত সহস্র গুন বড়। বর্তমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি পর্যাপ্ত না হওয়ায় মহাশূন্যের অদূরে পৃথিবীর সম আকারের জীবন সহায়ক গ্রহমালা খুঁজে বের করা সম্ভব হচ্ছেনা।
মহাশূন্যে কোথাও কেউ আছে কিনা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য চলছে বিরামহীন প্রচেষ্টা।
উন্ন্ত বিশ্বের দেশগুলো রিসার্চ প্রজেক্টের পেছনে ব্যয় করছে কোটি কোটি ডলার। আমেরিকান জ্যোর্তিবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ড্রেক ১৯৬০ সালে সর্বপ্রথম বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে সৌরজগতের বাইরের কোনো সভ্যতার সাথে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে SETI (Search for Extraterrestrial Intelligence) চালু করেন যার নাম ছিল প্রজেক্ট ওজমা। এখন ১০টিরও বেশী দেশে সেটি অনুসন্ধান কাজ চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছুরিত কোনো সঙ্কেত ধরা পড়েনি। বিশাল মহাশূন্যে এই খোঁজার শুরু আর শেষ কোথায় সেটা নির্ণয় করাটাই হল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
আমাদের পৃথিবী যে গ্যালাক্সির বাসিন্দা তার নাম হল মিল্কিওয়ে। অন্য হাজার কোটি গ্যালাক্সির কথা বাদই দিলাম শুধু মিল্কিওয়ে ছায়াপথেই রয়েছে ২০,০০০-৪০,০০০ কোটি নক্ষত্র আবার এই নক্ষত্র পরিভ্রমনরত প্রাণের উপযোগী কোনো গ্রহ খুঁজে ফেরা অনেকটা পাগলামোই মনে হতে পারে। SETI'র রেডিও টেলিস্কোপে বিরাজমান সীমাহীন নিরবতা দেখে তাই অনেকে ভাবছেন আমরা ভুল জায়গায় ভুল সময়ে ভুল কিছু খুঁজছিনাতো ? এলিয়েনের খোঁজে জোর্তিবিদদের সাথে সাথে ইদানিং মনোবিজ্ঞানীরাও এগিয়ে এসেছেন। মনোবিজ্ঞানীরা মনে করছেন প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে আধ্যাত্মিক মাত্রায় যেমন টেলিপ্যাথির মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা উচিত।
আমরা জানি আলোর গতিবেগ হচ্ছে সেকেন্ডে প্রায় ৩ লক্ষ কিলোমিটার।
বিজ্ঞানের নীতি অনুযায়ী আলোর গতি সকল সময়ে সকল স্থানে, পর্যবেক্ষণ নির্বিশেষে একই রকম বা ধ্রুবক (Constant) এবং জগতের ভর-বিশিষ্ট কোন বস্তুই আলোর গতির চেয়ে দ্রুত চলতে পারবেনা। মহাজাগতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এখানেই হল যত সমস্যা। সাধারণতঃ কোন বস্তু থেকে বিচ্ছূরিত আলো আমাদের চোখে এসে পড়লেই তা আমরা দেখতে পাই। আমাদের কাছাকাছি কোন বস্তুকে যখন আমরা দেখি, আলোর অস্বাভাবিক দ্রুত গতির জন্য সময়ের যে হেরফের হয় তা বোঝা যায়না কিন্তু অতি দূরের কোনো বস্তুর জন্য ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণ সরূপ পৃথিবী থেকে ১০০০ আলোক-বর্ষ দূরে অবস্থিত একটি উন্নত এলিয়েন সভ্যতার কথাই ধরা যাক।
এক আলোক বর্ষ দুরত্বের মানে হল সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কিলোমিটার বেগে চললে এক বছরে যে দুরত্ব পাড়ি দেয়া যাবে। তার মানে পৃথিবী থেকে বিচ্ছুরিত আলোক রশ্মি আমাদের কথিত ওই সভ্যতার গ্রাহক যন্ত্রে পৌছতে সময় লাগবে ১০০০ বছর !
মনে করুণ ওই এলিয়েনরা উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে পৃথিবীতে কি ঘটছে তা পরিস্কার দেখতে পাবে। কিন্তু কি দেখবে তারা? অবাক করা কথা হল ওরা ২০১০ সালের পৃথিবীর বদলে দেখবে ১০০০ বছর আগের অর্থাৎ ১০১০ সালের পৃথিবী। দেখবে বাগদাদে বসে আব্বাসীয়রা শাসন করছে মুসলিম সাম্রাজ্য আর অন্যদিকে রয়েছে ক্ষমতাধর খৃষ্টান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য। বিজ্ঞানী স্টিফেন হুকিংয়ের বদলে তারা দেখবে আরব বিজ্ঞানী ইব্নে আল-হাইতামকে।
মিসরের পিরামিড হয়ত ওদের চোখে পড়বে কিন্তু কোনো রেডিও টেলিস্কোপ কিংবা রকেট তারা দেখেবেনা কারণ মার্কনী বেতার আবিস্কার করেছেন মাত্র ১৮৯৫ সালে। এক্ষেত্রে কোন সংকেত না পাঠানোই হয়ত এলিয়েন সভ্যতা যুক্তিযুক্ত মনে করবে কারণ তারা ভাবছে সঙ্কেত সনাক্ত করার মত প্রযুক্তি ১০১০ সালে আমাদের ছিলনা। আজকের অর্থাৎ ২০১০ সালের উন্নত পৃথিবীর কথা এলিয়েনরা জানতে পারবে আমাদের সময়ের ৩০১০ সালে আর তারা যদি সাথে সাথে পাল্টা বার্তা পাঠায় সেটা আমরা পাবো ৪০১০ সালে! এলিয়েন সভ্যতা যত দুরে হবে এই অপেক্ষা হবে তত বেশী। আমাদের রেডিও প্রযুক্তির বয়স ১০০ বছরের চেয়ে কিছু বেশী। সেই হিসাবে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫০ আলোকবর্ষ দূরের কোন সভ্যতার পক্ষেই পৃথিবী থেকে পাঠানো বেতার সঙ্কেত পেয়ে আবার উত্তর পাঠানো সম্ভব।
কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি। কারণ জোর্তিবিজ্ঞানীরা ৫০ আলোকবর্ষ দুরত্বের মধ্যেকার প্রায় সব নক্ষত্রই নীরিক্ষা করে প্রাণের উপযোগী কোনো নক্ষত্র খুঁজে পাননি। ।
বিজ্ঞানী আলবার্ট হ্যারিসনের মতে আমরা যে সংকেত পাঠাচ্ছি তা হয়তো এলিয়েনদের কাছে পৌছতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই শুধু রেডিও সঙ্কেত না পঠিয়ে অন্য মাধ্যমের কথাও ভাবা হচ্ছে।
রেডিও সঙ্কেত হচ্ছে তড়িৎ-চুম্বক তরঙ্গ যা ক্ষুদ্র কনিকা/তরঙ্গ ফোটনের (photon) মাধ্যমে বার্তা প্রেরণ করে। যদিও গ্যালাক্সিতে ভাসমান গ্যাস ও ধুলোর বলয় ভেদ করার ক্ষমতা ফোটন রাখে, তবে এখন ফোটনের বদলে নিউট্রিনো (neutrino) কনিকার রশ্মি দিয়ে বার্তা প্রেরনের কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। মহাশুন্যে ভাসমান গ্যাসীয় ও ধূলিকণার অস্বচ্ছ স্তর ভেদ করে যাবার ক্ষমতা ফোটনের চেয়ে নিউট্রিনোর অনেক বেশী, তাই নিউট্রিনো চোখ দিয়ে দেখলে হয়ত বুদ্ধিমান প্রানী খুঁজে পাওয়ার কাজ কিছুটা সহজ হবে। উল্লেখ্য আমাদের আশেপাশের অসংখ্য টিভি ও বেতার চ্যানেল, মোবাইল ফোন ও রাডার থেকে সৃষ্ট বেতার তরঙ্গ অনুসন্ধানে বিঘ্ন সৃষ্টি করে থাকে। তাই চাঁদে একটি সেটি পর্যবেক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলার কথাও ভাবা হচ্ছে।
তবে যোগাযোগের মাধ্যম যেটাই হোক না কেন, আলোর ধ্রুব গতির ফলে বার্তা চালাচালিতে যে সময় ক্ষেপন হবে তাতে এলিয়েন সভ্যতা ও পৃথিবীর মানুষ, কেউ কারো নাগাল পাবেনা বলেই মনে হচ্ছে।
বিজ্ঞানমনা একজন আস্তিক হিসেবে এলিয়েনের অস্তিত্ব নিয়ে কোরানে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করতে গিয়ে বিস্মিত হয়েছি এলিয়েন সভ্যতার ব্যাপারে কুরানের সুস্পষ্ট ভবিষ্যতবানী দেখে। সুরা ফাতিহার ২য় আয়াতের ‘রাব্বিল আলামিন” বাক্যটি লক্ষ্য করুণ। “আলাম” মানে হল বিশ্ব (world) যার বহুবচন হল আলামীন। তার মানে বহুবচন আলামীন দিয়ে আমাদের সৌরজগত/গ্যালাক্সি ছাড়া অন্যান্য অনেক বিশ্ব/গ্যালাক্সিও যে মহাজগতে ছড়িয়ে আছে সে কথা বলা হয়েছে।
কুরানের ৪০টিরও বেশী জায়গায় “রাব্বিল আলামিন” কথাটির উল্লেখ আছে। ১৪০০ বছর আগে কুরান যখন বহুবিশ্বের কথা বলছে তখন মানুষ গ্রীক দার্শনিক টলেমীর ভূকেন্দ্রিক (পৃথিবী হচ্ছে জগতের কেন্দ্রবিন্দু) মডেলের বাইরে কিছুই জানতোনা।
৪২ঃ২৯ আয়াতে বলা হয়েছে - “তাঁর এক নিদর্শন (sign) আকাশসমূহ (সামাওয়াত) ও ভূমন্ডলের (আরদুন, পৃথিবী) সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি জীব-জন্তু (দাব্বাতুন, living creatures) ছড়িয়ে দিয়েছেন ......... । ” সামা’র মানে হল আকাশ আর এখানে বহুবচনে সামাওয়াত ব্যবহার করা হয়েছে যা অধিকাংশ ইংরেজী অনুবাদে Heavens বলা হয়েছে। অন্যদিকে আল-আরদি দিয়ে সুষ্পষ্ট করে শুধু পৃথিবীকে চিহিৃত করা হয়েছে।
আকাশ বা আসমানের অর্থ শূন্যস্থান যা মহাবিশ্বকেই বোঝায়। একজন জ্যোর্তিবিদ যদি এই আয়াতটি পড়েন তাহলে অসংখ্য গ্যালাক্সির (সামাওয়াত) সমাহারে গঠিত পুরো মহাজগতকেই বুঝবেন যেখানে ছড়িয়ে আছে আমাদের মত অসংখ্য বুদ্ধিমান প্রাণী (এলিয়েন) আর অন্যান্য জীব জন্তু। কেউ হয়ত দাব্বতুন মানে আকাশের পাখীকে বোঝাতে চাইবেন কিন্তু ২৪ঃ৪১তে আলাদাভাবে পাখীর উল্লেখ আছে। কুরানের অনেক বিখ্যাত তফসীরবিদগন ৪২ঃ২৯ আয়াতে যে এলিয়েনের কথাই বলা হয়েছে সেই ব্যাপারে একমত। তাছাড়া “নিদর্শন” বা চিহৃ শব্দটি দিয়ে মহাবিশ্বের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা বুদ্ধিমান প্রাণীর সাথে মানুষের যে একদিন যোগাযোগ হবে তারই পরিস্কার ইঙ্গিত মেলে।
নীচে এলিয়েন সম্পর্কিত আরো কয়েকটি আয়াতের উল্লেখ করছিঃ
১৭ঃ৫৫ - “আপনার পালনকর্তা তাদের সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞাত আছেন, যারা আকাশসমূহে ও ভূপৃষ্ঠে রয়েছে”। এখানে যারা অকাশসমূহে ও ভুপৃষ্ঠে রয়েছে বলতে মানুষ সহ আল্লাহর সৃষ্ট জিন, ফেরেশতা , এলিয়েন সহ অন্যান্য সকল প্রাণী ও বস্তুর কথাই বলা হয়েছে।
২৭ঃ৬৫ - “বলুন আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়েবের খবর জানেনা এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পূনরুত্থিত হবে। ” দেখা যাচ্ছে মানুষ ছাড়া বুদ্ধিমান এলিয়েনদেরও শেষ বিচারের দিন কৃতকর্মের জবাব দিতে হবে।
৫৫ঃ২৯ - “ নভোমন্ডল (আকাশসমূহে) ও ভূপৃষ্ঠের সবাই তাঁর কাছে প্রার্থী ......... ।
”
কুরান আমাদের দৃষ্টিসীমার বাইরের অসংখ্য জগত ও এলিয়েনের অস্তিত্ব নিশ্চিত করার সাথে সাথে বহির্বিশ্বের বুদ্ধিমান সভ্যতার সাথে কোনো এক সময় আমাদের যোগাযোগ হবারও ভবিষ্যতবানী করেছে যা আজকের বিজ্ঞানীদের চিন্তা ভাবনার সাথে মিলে যায়। তাই প্রশ্ন জাগে আগের ইসলামিক চিন্তাবিদরা কি এ ব্যাপারে সচেতন ছিলেন? জানা যায় ইমাম জাফর আল-সাদিক, বিখ্যাত সাহাবা ইবনে আব্বাস ও ইমাম গাজ্জালী, পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহেও উন্ন্ত সভ্যতা রয়েছে বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু যে কোন কারণেই হোক আজকের মুসলিম সমাজের একটি বিরাট অংশ এই ব্যাপারে অজ্ঞ। ৮ম শতকে মুসলিম বিজ্ঞানীরা যে জ্ঞানের ভান্ডার গড়ে তুলেছিলেন তার উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে আজকের প্রযুক্তি ভিত্তিক পশ্চিমা সভ্যতা যদিও তারা সেটা স্বীকার করেননা। কিন্তু কেন জানিনা ৮ম শতকের সেই স্বর্ণযুগ পার হবার পর বিশেষতঃ বিজ্ঞান চর্চায় মুসলিমদের অগ্রযাত্রা মুখ থুবড়ে পড়েছে।
অমুসলিমরা প্রায়ই তিরস্কার করে বলে থাকে, “বিজ্ঞান আবিস্কার করার পরই তোমরা বলছ এসব কুরানে আছে। ” তাই ভাবি, মুসলিমরা যদি বিজ্ঞান চর্চায় অগ্রগামী হয়ে বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ ও আবিষ্কারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কুরানের ব্যাখ্যা করতে পারতো, তাহলে ষ্টিফেন হকিংয়ের আগেই হয়তো কোনো মুসলিম বিজ্ঞানী বিশ্বকে বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্বের পূর্বাভাস দিতে পারতেন।
লেখক পরিচিতিঃ আল মামুন
আশির দশকের কিংবদন্তী গান 'তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে' এর গীতিকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। চট্টগ্রাম কলেজের সেই তারুণ্যের দিনগুলিতে প্রখ্যাত ব্যান্ড সোল্সের জন্য বেশ কিছু সুপারহিট গান রচনার পাশাপাশি তুখোড় কিছু কবিতাও লিখেছেন তিনি। বাড়ী সাগরপারের দেশ কক্সবাজার।
চাঁটগা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও তৎকালীন চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে প্রকৌশলী ডিগ্রী অর্জন করে পূরকৌশল বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। কিন্তু পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার হাতছানি, আল মামুনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে টেনে নিয়ে যায় স্বদেশের সীমানা ছাড়িয়ে প্রবাসে। গত দুই দশক ধরে অষ্ট্রেলিয়ার সিডনীতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন আল মামুন। প্রকৌশলী হলেও সিডনীতে তাঁর পরিচিতি হল মূলতঃ একজন অসাধারণ সঙ্গীত শিল্পী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শুদ্ধ ধারার সাংস্কৃতিক আয়োজক হিসেবে।
সিডনীর বাংলা কম্যুনিটি রেডিওর পথিকৃত আল মামুন একজন দক্ষ রেডিও সাংবাদিক ও উপস্থাপক।
১৯৯৪ সাল থেকে প্রায় দেড় দশকেরও বেশী সময় ধরে তিনি অষ্ট্রেলিয়ার বহুজাতিক রেডিও সংস্থা এস বি এস এর বাংলা অনুষ্ঠানের সহযোগী উপস্থাপক হিসাবে কাজ করেছেন। ّইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে তার একমাত্র কাব্যগ্র্রন্থ 'খুঁজে পেয়েছি প্রিয়তমা'। ২০০৮ সালের জুনে সিডনী ছেড়ে কাতারের দোহায় এসেছেন আল মামুন কনসালট্যান্টের চাকুরী নিয়ে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।