সাধারন ব্লগার ঘুরে এলাম পুণ্যভূমি সিলেট ওরফে বাংলার লন্ডন
বাবা মায়ের সাথে কখনই কোথাও জেতে ভাল লাগে না । কিন্তু এবার গেলাম । কারন আগে সিলেট যাওয়া হয় নাই ।
রাতের উপবন এর টিকেট পাওয়া যায় নাই । তাই ভোরের ‘’ পারাবত ‘’ এর টিকেট করলাম ।
একে তো জানতাম বাবা মায়ের সাথে যাচ্ছি , কোন রকম মজাই করা যাবে না । এর উপর টিকেট করল এসি কেবিনের । না পেলাম ট্রেন জার্নির কোন মজা , না তুলতে পারলাম কোন ছবি । এর উপর আমার মায়ের আবার সব কিছুতে তাড়াহুড়া । ট্রেন সকাল ৬-৪০ এ ।
আমরা স্টেশন এ চলে গেলাম ৪-৩০ এ । ট্রেন জার্নিটা ভাল না হলেও , সিলেট এ ঢুকার পর বাইরের ভিউ দেখে সব ভুলে গেলাম ।
দুপুরে পোঁছালাম সিলেট । স্টেশনে ১টা হোটেল আছে । খুব ১টা খারাপ না ।
ওইটা তে রুম নিলাম ।
ওই দিন আর কিছু করার নাই । এক বন্ধু শাবিপ্রবি তে পরে । ও আসল । দেখতে বের হলাম সিলেট শহর ।
শহর টা অনেক জোস । এমসি কলেজ এ গেলাম , তারপর গেলাম শাবিপ্রবি তে । গিয়েই দেখা জাফর ইকবাল সার এর সাথে । কিছুক্ষণ কথা বললাম । এত বড় এক জন মানুষ , কিন্তু কি সুন্দর সাবলীল ব্যাবহার ।
ভাল লাগলো । রাতে হোটেল এ ফিরে দিলাম ঘুম ।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠলাম । প্ল্যান শ্রীমঙ্গল , মাধবকুণ্ড । কিন্তু বাইরে ভয়ঙ্কর রকম বৃষ্টি ।
কিন্তু বের হয়ে গেলাম বাবা , মা আর আমি । বাসে করে গেলাম শ্রীমঙ্গল । রওনা দিলাম লাউয়াছড়ার দিকে । যাওয়ার সময় চা বাগান , আনারশ বাগান এই সব দেখে খুব ভাল লাগছিল , কারন এই সবই আমার কাছে নতুন।
লাউয়াছড়া ঘুরলাম , গেলাম ভিতরে খাসিয়া পল্লীতে ।
মোট কথা , এখানে সব কিছু ভাল লাগলো । আর বৃষ্টি মনে সব কিছুর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে ।
এর পর যাব বিখ্যাত সাত লেয়ারের চা খেতে । ‘’ নীলকণ্ঠ চা কেবিন ‘’ । গ
গাড়ি , সিএনজি কিছু নাই ।
কারন তখনও বৃষ্টি হচ্ছে । পরে এক লোক তার জিপ এ নীলকণ্ঠ চা কেবিন পর্যন্ত লিফট দিল । এ সময় যেটা সব চেয়ে বেশি মিস করছিলাম , তা হল সিগারেট
এর পর মাধবকুণ্ড । শ্রীমঙ্গল থেকে মৌলভীবাজার পর্যন্ত বাস । এর পর আসা – যাওয়ার এক বারে সিএনজি নিলাম ।
গেলাম । এত বড় ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করলাম । এই রকম জায়গায় সিগারেট না খেলে হয়?? । কিন্তু কিছুই করার নাই । এর উপর ক্যামেরার চার্জ শেষ ।
ছবি তুলতে পারলাম না । এই দুঃখ নিয়ে আবার ফিরলাম সিলেটে । পরের দিন শুধু মাজারে যাব ।
মাজার । সিলেটে আসার মুল উদ্দেশ্য ।
আমার কেন জানি ভাল লাগে না এইটা । তাও গেলাম । প্রথমে গেলাম হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজারে । জুম্মার নামায পরলাম । কিন্তু মেজাজ খারাপ হল , ওই খানে পকেটমাররা মারাত্মক রকম সক্রিয় ।
এর পর খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলাম হযরত শাহপরান (রঃ) এর মাজারে । ওই খানে অবস্থা কিছুটা ভাল হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজারের তুলনায় ।
আবার সিলেটে আসলাম তাড়াতাড়ি করে । কারন আমার শর্ত ছিল , এক রাত হলেও ‘’ জৈন্তাপুর হিল রিসোর্ট ‘’ এ থাকতে হবে । বন্ধুর কাছে শুনছিলাম এই রিসোর্টের কথা ।
সন্ধ্যায় হোটেল ছেড়ে দিয়ে রওনা হলাম জৈন্তাপুর এর দিকে । রিসোর্ট টা ভালই লাগলো । কিন্তু বন্ধু যত টা ভাল বলেছিল , তেমন কিছুই না । তবে সার্ভিস ভাল ওদের । দিলাম ঘুম ।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় আসলাম । আমি নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । ঘুম থেকে উঠে এত সুন্দর ভিউ আমি আগে কখনও দেখি নাই । সামনে শুধু পাহাড় , আর বিশাল বিশাল ২টা ঝর্ণা । তখন বুঝলাম বন্ধু এই রিসোর্ট এর কথা কেন বলেছিল ।
যাই হোক রেডি হয়ে চলে গেলাম জাফ্লং । ওখানে নৌকায় ঘুরলাম , জিরো পয়েন্ট গেলাম , অনেক ছবি তুললাম ।
তারপর আসলাম তামাবিল ।
সবার শেষে লালাখাল ।
পরে হোটেলে এসে ব্যাগ নিয়ে আবার চলে গেলাম সিলেট শহরে ।
কারন রাত ১০ টায় ট্রেন । ঢাকা আসলাম ভোর ৫ টায় মনে হয় ।
প্রথমে ভেবেছিলাম ফালতু ১টা ট্যুর হবে । কিন্তু তেমন খারাপ হয় নাই ।
এই ট্যুর থেকে ১টা শিক্ষা পেয়েছি ‘’ সিগারেট বিহীন ট্যুর , আর বউ ছাড়া হানিমুন একই কথা ‘’’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।