কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :)
** ফটিক ভাইয়ের সাথে প্যেচগী এবং দিলের রানী আয়না সুন্দরী **
বাদামতলার মোড়ের কাছাকাছি আসিতেই দে্খিলাম , ফটিক ভাই জব্বার কাকু’র দোকানে ! কাঠের বেঞ্চিটাতে ঠ্যাঙের উপরে ঠ্যাঙ তুলিয়া বসিয়া আছেন । ভাবটা যেন শ্রী শ্রী শ্রী যুক্ত রাজা গুরুধারীষ রায় বাহাদুর ( হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে ‘’ নো অফেন্স ‘’ প্লীজ ) ! পরনে একখান সাদা চেক লুঙ্গি । তাহা আবার ভীতিজনক উচ্চতায় উঠিয়া রহিয়াছে !
ভাবলাম , ওনাকে একখান মোক্ষম ডলা দিতে হইবে ! উনি পাশের কলোনির । এলাকার হিট সুন্দরী পলি’র নিকট সাম্প্রতিক ছ্যাকা খাইয়া বিদ্ধস্থ । এইটাই সুযোগ ! আমার এতো বিদ্বেষ কেন ? কারণ উনি অন্য কলোনির হইয়া আমাদের কলোনির আয়না সুন্দরীর দিকে উনার রাহুর কু নজর ফালাইয়াছেন ! আমি আবার আয়না সুন্দরী মেরিন’রে আমার ব্যাক্তিগত সম্পত্তি বলিয়া মনে করিয়া থাকি ।
ফিল্মি কায়দায় উড়োজাহাজটা দোকানের পার্শ্বে রাখিলাম । উড়োজাহাজ চিনিলেন না ? আমার লাল রঙের ক্যাপ্টেন বাইসাইকেল !
ফটিক ভাই আমাকে দেখিয়া , চায়ের কাপে ( খালি কাপ কি না তা নিয়া ব্যাপক সন্দেহ রহিয়াছে ) সুরুৎ সুরুৎ করিয়া চুমুক দিয়া একখান উদাস উদাস ভাব ধরিলেন । আমি মনে মনে কহিলাম – খাড়া , শালা এন্টি , তোরে মজা দেহাইতাছি !
মুখে কহিলাম – ঐ জব্বার কাকু , ভাইয়েরে চা পানি দিছো কিছু ?
-হ ! ভাইজান ! দিছি ।
ফুলাইয়া দিলাম । ফুলুক ! পরে ফাটামু !
-ভাই , কেমন আছেন ?
- হু ! ভালো ! তোর কি অবস্থা ?
-এইত ভাই চলতাছে , আপ্নেগো দোয়ায় !
-হুম !
-ভাই’র কি মন খারাপ ?
-ক্যান ? মন খারাপ থাকবো ক্যান ?
-না , মানে শুনলাম , পলি আপুর ব্যাপারটা ...............
-আরে নাহ নাহ ! ঐ সব কিচ্ছু না ।
সব বানোয়াট । মিথ্যা কথা বুঝলি ! ষড়যন্ত্র বুঝলি !
-তা তো ভাই অবশ্যই ! অবশ্যই !
-আইজকালকার পোলাপানগুলা .............
বলিয়া হতাশার ভঙ্গি করিয়া ঘাড় নাড়িতে লাগিলেন । ভয় হইল , মস্তক না আবার খুলিয়া পড়িয়া যায় ! বলিলাম – তাইলে কি ভাই পলি আপু আপনেরে ছ্যাকা দেয় নাই ?
-আরে নাহ্ ! টাইম আছে ওইসবের ? আমি তো পলিরে পছন্দই করি না ।
-কি বলেন ? পছন্দই করেন না ?
-হুম ! ও তো দেখতে পুরাই ভেটকি মাছের লেহান !
- কি কন ? তয় যে হুনলাম , আপনে নাকি আয়না সুন্দরীর পিছে পিছে ঘুরেন দেইখাই নাকি পলি আপু আপনেরে রিফিউজ দিছে ?
-আরে ধুর ! আয়না সুন্দরী তো আর একটা ! ছ্যাবলা ! হাটার সময় এক ঠ্যাং উত্তরে যায় তো আর এক ঠ্যাং যায় দক্ষিণে যায় ! আর সারাদিন লগে একটা আয়না লইয়া ঘোরে ! যে তার চেহারা , নাম রাখছে ................... কি জানি হইব ? ঐ কছ না ক্যান ?
-পেয়ারা ! পেয়ারা ভাই !
- হু ! পেয়ারা !
ফটিক ভাই উদাস মুখে আকাশপানে চাহিয়া তাহার পানির ঠাণ্ডা শরবত চা’য়ে সুরুৎ সুরুৎ করিতে লাগিলেন !
আমার আয়না সুন্দরীরে কয় পেয়ারা ? হালার ভাই দুলাগাই !!! প্রেম মানে না ভালোবাসা ! পা চুলকানোর ভান ধরিয়া নিচু হইলাম । ভাইয়ের লুঙ্গির এক কোনা কাঠের বেঞ্চির বাইর হইয়া থাকা পেরেকের সাথে লটকাইয়া দিলাম ।
সোজা হইয়া বসিতেই ভাই কহিলেন - কি রে ! তুই ছেরিগো লেহান হাতে মোবাইল লইয়া ঘুরস নি ?
-না ভাই ! এই একটু কাজ করতাছিলাম ।
বলিয়া রেকর্ড অপশনটা বন্ধ করিলাম । ভাই দেখি ইন্দুরের মতন নাক উঁচা করিয়া দেখিবার চেষ্টা করিতেছেন । মোবাইল নিয়া কি করি ! খচ্চর ! আমাকে এখন জরুরী ভিত্তিতে আয়না সুন্দরী মেরিন এর নিকট পৌছাইতে হইবে । এই রেকর্ডের অংশটুকু শুনাইয়া তাহার ঘাড় হইতে ফটিক ভাইয়ের ভূত শলার ঝাড়ু দিয়া ঝেটাইয়া নামাইতে হইবে ।
এবং আমার পথ সুগম করিতে হইবে । বোনাস হিসেবে হিট সুন্দরী পলি আপুরে দিয়া দুইটা গরম গরম চটকানা ও খাওয়ানোর সম্ভাবানাও উজ্জ্বল । সাইকেলে উঠিয়া বলিলাম – তয় ভাই , মেরিন কিন্তু আমারে কইছিল , ও আপনেরে একটু একটু ভালো পায় !
ফটিক ভাইয়ের দেখি চোখ – মুখ – জিহ্বা দিয়া নাফাখুম ঝর্ণার মতন লুল ঝড়িয়া পরিতেছে ।
-কস্কি ব্যাটা ?
-হ ! তয় এখন আর ভেটকি দিয়া লাভ নাই !
-ক্যান ?
- মানে আপনে যে আয়না সুন্দরীরে ছ্যাবলা আর পেয়ারা কইছেন , সেইটা রেকর্ড কইরা লইছি মোবাইলে ! এক্ষুনি গিয়া ওরে শুনামু !
( উল্লেখ্য যে ফটিক ভাইয়ের কাছে আয়না সুন্দরীর নাম্বার ছিল না )
ফটিক ভাই ঠাশ্ করিয়া বেলুনের মতন ফুইট্টা গেলেন । তাহার ভাবভঙ্গির পরিবর্তন হইতেছে ।
দৌরানি দিবে এক্ষুনি । আমি আমার উড়োজাহাজ স্টার্ট দিয়ে দিলাম । পেছন থেকে ফটিক ভাইয়ের অমৃত বাংলা শব্দের অমিত প্রয়োগে কানের দুই একটা পোকা মরিয়া গেল । তাহা ছাপাইয়া হঠাৎই ‘’ চড়াৎ ‘’ করিয়া কাপড় ছেঁড়ার শব্দ কর্ণকুহরে মধু বর্ষণ করিল ! তাহার সহিত আরও অনেকের হো হো হা হা হাসিতে প্রাণ মন জুড়াইয়া গেল । সাকসেসফুল !! আমার মনে তখন শুধুই বাজিতেছে – আয়না সুন্দরী ................. আয়না সুন্দরী ............ আয়না সুন্দরী .............
সাম্প্রতিক পোস্ট করা একটি গল্প গল্পঃ বৃষ্টিভেজা রাতের মেয়ে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।