আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কী তামসা ! মাত্র ৫% লোককে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই পত্রিকার খবরটা একটু সংক্ষেপে বলে নেই। খবর হল, জাতিসংঘের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মাত্র ৫% লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ১২৭ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭ তম। আর মুঠোফোনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ ১৭৭টি দেশের মধ্যে ১৫৫ তম অবস্থানে। এর আগে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশনের সূচকে ৬১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৫ তম।

মানেটা হল, বাংলাদেশ ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক দিয়ে তলানির দিকে থাকা একটা রাষ্ট্র। দুনিয়ায় সবচেয়ে কম ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে সব রাষ্ট্র, আমরা সেই সব রাষ্ট্রের দলে। কারণগুলো খুব পরিষ্কার -- ০১। শুনেছি, সরকারী আমলাদের মধ্যে অনেকে নাকি ই-মেইল পাঠানোই শিখে নাই এখনো। কবে শিখবেন কে জানে ।

আদৌ কি শিখবেন ? এত উচু মর্যাদার লোকজন ইন্টারনেট ব্যবহার না জানলে দেশ কেমনে ডিজিটাল হবে ? অন্য মানুষই বা কেন ইন্টারনেটের প্রতি আগ্রহী হবে ? ০২। কতগুলো ওয়েব সাইট বানিয়ে ভেবে বসে আছি, দেশ ডিজিটাল হয়ে গেছে। দরকার অনলাইন নাগরিক সেবা প্রদান। সেটা না পারলে ওই ওয়েব পেজ কেবল জ্ঞানের ভাণ্ডার ছাড়া আর কিছুই না। ০৩।

বাংলাদেশের কেবল একটা সাবমেরিন ক্যাবল। কাটা পড়লে হা হুতাশ করা এবং ভি স্যাট সম্বল। দ্বিতীয় সাব মেরিল ক্যাবল কবে নাগাদ লাগবে কেউ জানে না। ০৪। ইন্টারনেটের গতি ভীষণ কম।

টেক্সট পড়ার জন্য ভালো। ভিডিওর জন্য আল্লাহ ভরসা। শুনেছি, আমাদের ব্যান্ডউইথ বেশির ভাগ ব্যবহার হয় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কাজে। এই কাজে ক্ষমতাবান লোকরা জড়িত। ০৫।

ইন্টারনেটের উচ্চ মূল্য। বিশেষ ওয়াইম্যাক্স নাম দিয়া মাত্র এক গিগা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। একটা মুভি ডাউনলোড দিলেই ৩০০ টাকা খতম। ০৬। পাবলিক নেটের গতি পায় না।

অথচ শুনতে পাই বিপুল পরিমাণ ব্যান্ডইউথ অব্যহৃত আছে। ওটা নাকি পাবলিককে না দিয়ে রপ্তানী করার প্রক্রিয়া চলছে । কী বিচিত্র ... ০৭। থ্রি জি প্রযুক্তি নিয়া ব্যাপক গড়িমসির পর আসি আসি করছে এখনো। ০৮।

ইন্টারনেটের প্রতি আমাদের আম জনতার ধারণাটাও গোলমেলে। বেশির ভাগ মানুষ ইন্টারনেট মানে কেবল ব্রাউজিং মনে করে। ই-সেবা সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণাই নাই। তারপরও এই দেশের নাম ডিজিটাল বাংলাদেশ। বড়ই তামসা।

দরকার ছিল অনেকগুলো কাজ করা। তার মধ্যে নিচের এই দুইটা ফরজ কাজ : ০১। নেট ব্যবহারের চার্জ কমানো। মাসে ২ শত টাকার মধ্যে আনলিমিটেড ব্রডব্যান্ড সুবিধা দরকার। ০২।

১ এমবিপিএস এর নিচে কোন নেট রাখার দরকার নাই। ওটাই সর্বনিম্ন গতি হওয়া উচিত। এই অবস্থায় থাকা একটা দেশের নামের আগে ডিজিটাল লাগানোটা অযৌক্তিক ও হাস্যকর। ডিজিটাল বাংলাদেশ যে কাগুজে বাঘ, এটা এখন স্পষ্ট । এইবার খবরটা পড়েন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।