খাগড়াছড়ির একটি লোমহর্ষক গণহত্যার কাহিনী
-বিপ্লব রহমান
কোনো পেশাগত কারণে নয়, স্রেফ বেড়াতে যাওয়ার জন্যই একবার পাহাড়ে যাওয়া হয় চাকমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব বিঝুর আমন্ত্রণে। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির উদ্দেশে বিশাল দলবলসহ ১৯৯২ সালের ১১ এপ্রিল সকালে কলাবাগান থেকে লক্কড়চঝক্কর বাস ‘ডলফিন’ ছাড়ে। সেটা শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরেরও বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। পাহাড় তখন দারুণ অশান্ত, যুদ্ধ বিক্ষুব্ধ। জনসংহতি সমিতির সাবেক গেরিলা গ্র“প শান্তিবাহিনীর সঙ্গে সেনা বাহিনী সদস্যদের রক্তক্ষয়ী বন্দুকযুদ্ধ লেগেই আছে।
পাশের আসনের সঙ্গী প্রধীরদা (প্রধীর তালুকদার, অখণ্ড পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বা পিসিপির সাবেক নেতা, পরে শান্তিবাহিনীতে যোগ দেন) পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা করছিলেন। বলছিলেন জলপাই শাসনের ভয়াল রূপ। আশৈশব দেখা তার চিরচেনা পাহাড় দিনের পর দিন বহিরাগত বাঙালি সেটেলারদের দখলে যাওয়ার বেদনাদায়ক ইতিহাস।
কুমিল্লা সেনানিবাস পার হওয়ার পথেই বোঝা যায় আতংকিত জনপদে প্রবেশের যন্ত্রণা। বেশ কয়েক জায়গায় বাঁশকল দিয়ে গাড়ি আটকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যাত্রীদের নামধাম ইত্যাদির তালিকা তৈরি করে।
লাগেজ ব্যাগেজও তল্লাশি হয় কয়েকবার।
সফরসঙ্গী ইলিয়াস ভাই (প্রয়াত লেখক আখতারুজ্জামন ইলিয়াস), আনু ভাই (অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ), শাজাহান ভাই (প্রয়াত ব্যারিস্টার লুৎফর রহমান শাজাহান), সারা আপা (ব্যারিস্টার সারা হোসেন), আহাদ ভাই (আহাদ আহমেদ খন্দকার, তৎকালীন অখণ্ড ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি); তারাই নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বাস রামগড় প্রবেশের সময় চোখে পড়ে পথের দুপাশের উঁচু উঁচু পাহাড়ে এক কিলোমিটার অন্তর অন্তর নিরাপত্তা বাহিনীর ওয়াচপোস্ট। বাস খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর আগেই পথের মধ্যে দুএক জায়াগায় কয়েকজন পাহাড়ি বাস থামিয়ে সঙ্গী অপরাপর পাহাড়ি বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন সেরে নেন। এভাবে বাসের মধ্যেই লোকমুখে জানা হয়ে যায় সেই লোমহর্ষক গণহত্যার কাহিনী।
আগের দিনই (১০ এপ্রিল, ১৯৯২) খাগড়াছড়ির পানছড়ির লোগাং নামক পাহাড়ি গ্রামে সেনাবাহিনী, ভিডিপি, আনসার ও সেটেলাররা একযোগে আক্রমণ চালায়। নিরস্ত্র, হতদরিদ্র সাধারণ পাহাড়িদের বাড়িঘর জ্বালিয়েপুড়িয়ে নির্বিচারে গুলি করা হয়। সেটেলারদের দায়ের আঘাতে প্রাণ যায় অনেকের। হতাহতের সংখ্যা কতো হবে, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারছে না। পুরো এলাকায় নাকি কারফিউ বলবৎ করা হয়েছেÑ ইত্যাদি ইত্যাদি।
খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর পর পিসিপির ছেলেমেয়েরা ফুল দিয়ে স্বাগত জানায়। তবে লোগাঙের কথা শুনে সবারই চোখমুখ কেমন যেন শুকনো বলে মনে হয়। শান্তিবাহিনীর প্রতিশোধমূলক আক্রমণ, আর নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের আশংকায় ছোট্ট পাহাড়ি শহর খাগড়াছড়ি একেবারেই সুনসান হয়ে পড়ে। ঝপ করে সন্ধ্যা নামে কালা পাহাড়ের দেশে।
জেলা সার্কিট হাউজে অতিথিদের থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
সাড়ে সাতটার বিবিসি খাগড়াছড়ি সংবাদদাতার বরাত দিয়ে প্রচার করে উল্টো খবর। ওই খবরে বলা হয় লোগাঙে নাকি শান্তিবাহিনীর আক্রমণে মাত্র ১০ জন পাহাড়ি ও তিনজন বাঙালিসহ মোট ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। সাংবাদিক হওয়ার সুবাদে জানা ছিলো, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলার সাংবাদিকদের তখন আসলে নিয়ন্ত্রণ করতো নিরাপত্তাবাহিনী। সেনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে সংবাদ পরিবেশনের উপায় ছিলো না। সব মিলিয়ে বিবিসির খবর বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না।
...
সার্কিট হাউজে যখন অতিথিদের রাতের খাবার হিসেবে পাহাড়ি ছেলে মেয়েরা প্লেটে পোলাওমাংস তুলে দিচ্ছিলেন, তখন বাইরের বারান্দায় দেখা মেলে এক গামলা মুড়ি খাওয়ায় রত দরিদ্র একজন পাহাড়ি লোককে। কোলে একরত্তি এক দুধের শিশু। লোকটিকে ক্লান্তি আর অজানা এক অনুভূতি ঘিরে রাখে। সে যত না মুড়ি খায়, তার চেয়েও বেশি পানি খায় ঢক ঢক করে। কোলের শিশুটিকেও পানি খাওয়ায় কয়েকবার।
তার পরিচর্যা করছিলো যে সব ছেলেমেয়ে তাদের কাছ থেকে জানা গেলো, এই ভাগ্যহতের ইতিকথা। দ্রুত নোট প্যাড বের করে টুকে নেয়া হতে থাকে সেই বিস্মৃত নামের পাহাড়িটির কথা।
লোকটি লোগাং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী, প্রাণে বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন। তাদের গ্রামে আক্রমণ হতেই শিশুটিকে কোলে করে দুর্গম পাহাড়জঙ্গল ভেঙে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রথমে পৌঁছান সদরে। পিসিপির নেতারা সার্কিট হাউজে আছে এই খবর শুনে আসেন এখানে।
অনর্গল চাকমা ভাষায় শুধু একটা কথাই বলেন তিনি, বাবারা আমাকে একটু আশ্রয় দাও। চিদরেরা (নিরাপত্তা বাহিনী) আমার কথা জানতে পারলে হয়তো আমাকেও তারা মেরে ফেলবে! ছাত্রনেতারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে সিদ্ধান্ত নেন, পিসিপির কাছে ভাষ্য দেয়ার অপরাধে লোকটিকে নিরাপত্তা বাহিনী হয়তো ছেড়ে কথা বলবে না। তাই দ্রুত তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় কোনো একটি নিরাপদ আশ্রয়ে। আহাদ ভাইয়ের ক্যামেরা ধার করে লোকটির কয়েকটি ফটো নেয়া হয়।
সেদিন রাত কাটে বর্ষীয়ান পাহাড়ি নেতা অনন্ত মাস্টার তথা রামগড়ের স্কুল শিক্ষক অনন্ত বিহারী খীসার নারানখাইয়ার বাসায়।
উনি অখণ্ড পিসিপির সাবেক নেতা, বর্তমান শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফের আহ্বায়ক প্রসিত বিকাশ খীসার বাবা। পরদিন ১২ এপ্রিল ছিলো ফুল বিঝু। খুব ভোরে নাস্তার টেবিলে অনন্ত মাস্টার সুন্দর করে বুঝিয়ে বলছিলেন ফুল বিঝু, মূল বিঝু ও গজ্যাপজ্যা বিঝুর কথা। এমন সময় কোথা থেকে যেন একদল পাহাড়ি শিশুকিশোর কিচির মিচির করতে করতে হাজির হয় সেখানে। ঝুপ ঝুপ করে সকলে অনন্ত মাস্টারকে করে ফুল বিঝুর প্রণাম।
বাঙাল অতিথির দিকে ওরা ফিরেও তাকায় না।
সার্কিট হাউজে এসে শোনা গেলো ইলিয়াস ভাই, আনু ভাই, শাজাহান ভাই সবাই পিসিপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই সকালেই লোগাং যাওয়া হবে। সরেজমিনে দেখা হবে আসলে কি হয়েছে সেখানে। কয়েকটি ভাঙাচোরা জিপ (স্থানীয় নাম চাঁদের গাড়ি) ভাড়া করে রওনা দেয়া হয় লোগাঙের উদ্দেশে। আবারও পথে পথে তল−াসি, জেরা, তালিকা নির্মাণ ইত্যাদি।
লোগাঙের আগেই চাঁদের গাড়িগুলোকে আটকে দেয়া হয় পানছড়ি বাজার সংলগ্ন সেনা চেক পোস্টে। সেখানে হাজির হন ৩৩ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জোন কমান্ডার মেজর খালিদ রেজা। তিনি তখন পানছড়ির ক্যাম্পের দায়িত্বে। লোগাং যাওয়া না যাওয়ার প্রশ্নে তুমুল তর্কাতর্কি বাধে দুপক্ষের মধ্যে। মেজর খালিদের কথা একটাই, লোগাঙে যাওয়া নাকি নিরাপদ নয়।
যে কোনো মুহূর্তে সেখানে শান্তিবাহিনী আবারও পাল্টা হামলা করতে পারে। তাছাড়া তার সন্দেহ, এই দলটি বোধহয় শান্তিবাহিনীর আমন্ত্রণে লোগাং যাওয়ার জন্যই ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি এসেছে। বিঝুটিঝু আসলে নাকি ফালতু অজুহাত!
তর্কাতর্কির মুহূর্তে সে সময়ের পিসিপির নেতা (বর্তমানে ইউপিডিএফের দলছুট নেতা) সঞ্চয় চাকমাকে দেখা যায় চেক পোস্টের কাছেই একজন পাহাড়ি লোকের সঙ্গে কথা বলতে। লোকটির পিঠে এক টুকরো কাপড়ে বাঁধা ছোট্ট একটি শিশু। তার হাত ধরে আছে আরো এক শিশু।
তার সর্বাঙ্গে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ছিট। কথা হচ্ছিল ফিসফিসিয়ে। সেখানে উপস্থিত হতেই লোকটির কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বুঝে সঞ্চয়কে ক্যামেরা দিয়ে বলা হয় লোকটির একটি ফটো তুলে রাখতে। আর তার ভাষ্য সবই যেন সে নোট করে রাখে।
পরে জানা যায়, সেও লোগাং গণহত্যার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী। সামান্য এক গ্রাম্য কোন্দলকে উপলক্ষ করে সেটেলার ও নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন একসঙ্গে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরায় লোগাং গ্রামে। নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন গুলি চালায়, আর সেটেলাররা কসাইয়ের মতো কুপিয়ে কাটে নিরপরাধ পাহাড়িদের। প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকটির চোখের সামনেই কুপিয়ে খুন করা হয় তার স্ত্রী ও এক শিশুকে। কোনো রকমে গহীন জঙ্গলে শিশু দুটিকে নিয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণে রক্ষা পান।
জঙ্গলে পালানোর সময়ে বুনো কাঁটার আঘাতে তার ছিঁড়ে যায় সর্বাঙ্গ। গত দুদিন তার দানাচপানি কিছুই জোটেনি। সঞ্চয় তাকে পকেট থেকে সামান্য টাকা দিয়ে খাবার কিনে বাচ্চাদের খাওয়াতে বলে। আর পরামর্শ দেয়, অন্য কোনো পাহাড়ি গ্রামে আপাতত লুকিয়ে থাকতে।
সেদিন আর লোগাং যাওয়া হয়নি।
তবে খবংপুইজ্জা নামক পাহাড়ি গ্রামে রাতে দেখা মেলে লোগাং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী আরো কয়েকজনের। এদের মধ্যে এক কিশোরও রয়েছে, যার মাবাবা, ভাইবোন সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থেকে দূর থেকে সে প্রত্যক্ষ করে এই বেদনাদায়ক নৃশংস দৃশ্য। রাতে ইয়ংস্টার ক্লাবে পিসিপি নেতা প্রধীরদা কাপড়ে মুড়িয়ে নিয়ে আসেন আগুনে পুড়ে যাওয়া এক শিশুর কংকাল। লোগাং হত্যাযজ্ঞ এই নাম না জানা অবোধ শিশুটিকেও রেহাই দেয়নি।
পরে ঢাকায় ফিরে আরো এক সহকর্মী প্রিসিলা রাজের সঙ্গে ‘পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ : শোকার্ত লোগাং’ শীর্ষক দুই পর্বের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় সাপ্তাহিক ‘প্রিয় প্রজন্মে’ (তখন এর সম্পাদক ছিলেন ফজলুল বারী, বর্তমানে প্রবাসী)। সেখানে স্থানীয় একজন স্কুল শিক্ষিকা, পানছড়ি হেলথ কমপে−ক্সের সরকারি চিকিৎসক, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি আহত কয়েকজনসহ অন্তত ১০ জন প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়, লোগাং গণহত্যার লোমহর্ষক সব তথ্য। জানানো হয়, পাহাড়ের অসুস্থ রাজনীতি এই একটি গণহত্যাতেই কেড়ে নিয়েছে অন্তত ২০০ জন নিরপরাধ পাহাড়ির জীবন। নিখোঁজ ও আহতদের একটি আনুমানিক সংখ্যাও উলে−খ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। পাশাপাশি দেয়া হয় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভাষ্য।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরই পরই ফজলুল বারী ভাইয়ের ওপর ঊর্ধ্বতন মহলের চাপ আসে। জানা যায়, সেনা সদস্যরা সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের সব কয়েকটি প্রিয় প্রজন্মের কপি কিনে ফেলেছিলো, যেন এর কোনো সংখ্যাই আর সাধারণ পাঠকের হাতে না পৌঁছে। তবে পাহাড়ি বন্ধুরা প্রতিবেদনটি ফটোকপি করে নিজস্ব উদ্যোগে পাহাড়ে বিলি করেন। প্রচার করেন ওই প্রতিবেদনটি। এই কাজ করতে গিয়ে সেসময় পিসিপি নেতা সঞ্চয় চাকমা জগন্নাথ হল থেকে 'শান্তিবাহিনী' অভিযোগে প্রথমবারের মতো গ্রেফতারও হন।
তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের ছাত্র।
বলা বাহুল্য, সেবার আর বিঝু উৎসব দেখা হয়নি। লোগাঙের শোকে পাহাড়িরা বিঝু বর্জন করেন সেবার।
উপরের লেখাটি সাংবাদিক বিপ্লব রহমানের “রিপোর্টারের ডায়েরি : পাহাড়ের পথে পথে” নামক বইয়ের ‘একটি লোমহর্ষক গণহত্যার কাহিনী’ অধ্যায় থেকে সংগৃহীত। বইটির প্রকাশকাল ২০০৯ বইমেলা।
আমরা নিজেরা প্রায় ২০০ বছরের অধিককাল ব্রিটিশ ও পাকিস্তান দ্বারা শোষিত ও নিপীড়িত হয়েছি। সেই আমরাই আবার আমাদের দেশের সংখালঘু ও উপজাতি মানুষদের সাথে যে আচরন করছি তা কি ঠিক? আমি গণহত্যার কথা বলছি না, কারন এখন গণহত্যা হচ্ছে না। আমি ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করিনি কারন আমার মতে, বাংলাদেশের আদি বাসিন্দা উপজাতি জনগোষ্ঠি নয়। আমেরিকার আদি বাসিন্দা রেড ইন্ডিয়ান জনগোষ্ঠিকে হত্যা করে ইউরোপের লোকজন দেশটি দখল করেছে। একারনে রেড ইন্ডিয়ানরা আমেরিকার আদিবাসী।
কিন্তু আমরা উপজাতি জনগোষ্ঠিকে গণহত্যা করে এদেশ দখল করিনি। উপজাতি জনগোষ্ঠি এই ভুখন্ডে এসেছে বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব দিক থেকে মাত্র কয়েকশ বছর আগে, ধীরে ধীরে।
তবে তারা (উপজাতি জনগোষ্ঠি) এদেশের নাগরিক। তাদের ভুমির সমস্যার একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সমাধান হওয়া উচিৎ। ৩ পার্বত্য জেলায় আমরা কখনোই জমি কিনতে পারবোনা, এটা স্থায়ীভাবে মেনে নেয়া যায় না ।
তবে সমস্যা নিস্পত্তির স্বার্থে, যতদিন পর্যন্ত না ভুমি সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততদিন আমরা সেখানে জমি কিনতে বা বাস করতে যাবো না। আমরা চাই না পাহাড় আবার অশান্ত হয়ে উঠুক। আমরা পাহাড়ে যুদ্ধ দেখতে চাই না। আমরা পাহাড়ি জনপদে কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন চাই, চাই উপজাতি জনগণের নাগরিক সেবা নিশ্চিত হোক। আমরা চাই প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যের ভান্ডার ৩ পার্বত্য জেলায় পরিবেশ বান্ধব পর্যটন শিল্প বিকশিত হোক।
এ দাবি উপজাতি জনগোষ্ঠির বিচ্ছিন্ন দাবি নয়। এ দাবি আমাদের দেশের নির্যাতিত, পিছিয়ে পড়া কিছু নাগরিকের দাবি। পাহাড়ি উপজাতি জনগোষ্ঠির এ দাবির সাথে আমরা মূল ভুখন্ডের মানুষরাও একাত্ম। সরকার এ সমস্যা সমাধানে আন্তরিক না থাকলে পাহাড়িদের সাথে আমরা বাঙালীরাও তাদের দাবি আদায়ে সক্রিয় আন্দোলন করব। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।