পক্ষী আমার উড়াল পক্ষীবুঝলি না মোর ভাষা; দুই নয়ন মেলিয়া দেখলিভবের রং তামাশা “রিতা……,রিতা আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন?”
“হ্যা, ফারজানা। আমি শুনতে পাচ্ছি। “
“সেখা্নকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের বলুন?”
“আপনারা ইতোমধ্যেই জেনেছেন যে, গতকাল অর্থাৎ,২২ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি,ব্যবসায়ী,সমাজ-সেবক ও বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন পানি সম্পদ মন্ত্রী আলহাজ্জ রুহুল কবির নিজ বাসভবনের বেডরুমে ফ্যানে রশি ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন। ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭১বছর।
তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বর্তমানে কানাডায় বসবাসরত। “
ভদ্রমহিলা কি বাংলা বুঝেন না , নাকি প্রশ্ন শোনে্ননি ?তার কাছে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে, পূর্বের ঘটনা নয়। সেটা মূল খবরে বারবার বলা হয়েছে।
“রিতা , বর্তমানে তার ধানমন্ডির বাসভবনে কে কে আছেন?”
“তার স্ত্রী আঞ্জুম আরা কবির এবং দুই ছেলে।
বড় ছেলে ইশরাক জাহান কবির ও ছোট ছেলে সালেহিন শাহরিয়ার কবির। এছাড়া মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তার আত্মীয়-স্বজন ও দেশের বিশিষ্টজনেরা ছুটে আসেন। বর্তমানে আমাদের সাথে আছেন তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও প্রাক্তন বন ও পরিবেশ মন্ত্রী সোবহান শিকদার।
মাইক সোবহান শিকদারের দিকে এগিয়ে নেয়া হল। তিনি কন্ঠে এক ছটাক শোকের সাথে দুই ছটাক গাম্ভীর্য মিশিয়ে বললেন —
“মানুষ হিসেবে ও একই সাথে একজন নেতা হিসেবে তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণ,সৎও বিচক্ষণ ।
সাধারণ মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অসীম। নিভৃতে তিনি গরীব-দু;খী মানুষের সেবা করে যেতেন। মানুষটা কি যে কাজ়পাগল ছিলেন তা বলে বোঝানো যাবে না। “
সোবহান সাহেবের সাক্ষাৎকার আরও বড় করার ইচ্ছা ছিল। ব্যাপারটা টিভি রিপোর্টার ফারজানা মিথিলা আঁচ করতে পারে।
তাকে সেই সুযোগ না দিয়ে সে অন্য প্রশ্নে চলে যায়,
“আচ্ছা, রিতা ,তার পরিবারের ভাষ্যমতে এই আত্মহত্যার কারণ কী?”
“তার পরিবারের কেউ এখনো মুখ খুলেনি। তবে ধারনা করা হচ্ছে, বড় ছেলের সাথে তার দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব এই আত্মহত্যার মূল কারণ । আবার , তার নামে যেসব দুর্নীতি মামলা রয়েছে, তাও এই আত্মহত্যার কারণ হতে পারে বলে অনেকের অভিমত। তবে, কোন কিছুই এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, ফারজানা। “
“রিতা,…………।
আমি টিভি বন্ধ করে দিলাম।
রিতা আমার নাম ভুল বলেছে। আমার নাম সালেহিন শাহরিয়ার। শেষে কোনো কবির নেই। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছিল।
এরপর আমি বাদ দিয়ে দেই।
ভাইয়া নিচ তলায়। আত্মীয়-স্বজন, সাংবাদিক ও দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সামলাচ্ছেন।
আমাদের বাড়িটা ডুপ্লেক্স। মেঝে ইতালিয়ান গ্রানাইটের।
অবশ্য নিচতলায় মানুষজনের ভিড় ও ধুলা বালিতে গ্রানাইটের চাকচিক্য ঢাকা পরেছে,যেমন আত্মহত্যার কালিমায় ঢাকা পড়েছে বাবার কৃত্রিম “ক্লিন ইমেজ” এর চাকচিক্য।
মা দোতালায়, নামাজ় ঘরে। সাথে পরিচিত,অর্ধপরিচিত ও অপরিচিত আত্মীয়-স্বজন।
বাবার পি.এ বাদশা আলমগির লাশের খাটিয়ার সামনে প্রায় গড়াগড়ি খেয়ে কাঁদছেন। তার দেখাদিখি বাবুর্চি আর কাজের লোকেরাও অতি উৎসাহে একই কাজ করছে।
বুয়ারা দ্বিধান্বিত এই ব্যাপারে। গড়াগড়ি খাওয়ার কাজটা করা ঠিক হবে কিনা বুঝে উঠতে পারছে না।
বাদশা ভাই কর্মতৎপর মানুষ। কিছু মাদ্রাসার ছাত্র যোগাড় করে তাদের দিয়ে পবিত্র কোরান শরীফ খতম দেয়াচ্ছেন। আমি এক ফাকে শুনলাম একজন জোরে জ়োরে পড়ছে—
“আলাম তা্রা কাইফা ফা আলা রাব্বুকা বি আসহা বিল ফিল;
আলাম ইয়া জাল কাইদাহুম ফি তাদলিল ;
ওয়া আরসালা আলাইহিম তাইরান আবাবিল ;
তারমিহিম বিহিজারাতিম মিন সিজ্জিল;
ফাজা আলাহুম কা-আশফিম মাকুল ।
“
অর্থটা আমার জানা ছিল।
“আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন?
তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি?
তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী,
যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল।
অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন। “
মোটামুটি সবাই যার যার ভূমিকায় অভিনয় করতে ব্যস্ত।
আর আমি?
আমি বাথরুমে।
মানুষের ভিড় ও অযাচিত প্রশ্নবাণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই ব্যবস্থা। তারা ভাবছে আমি হা-হুতাশ করে চোখের জল ফেলছি। মাঝে মাঝে অবশ্য চোখে পানির ছিটা দিয়ে দোতালা থেকে নিচের পরিস্থিতি দেখে আবার বাথরুমে ঢুকি। বাথরুমে এ.সি আছে,১৪ ইঞ্চি টিভি আছে, বই পত্রের ব্যবস্থাও আছে। আমার হাতে Chetan Bhagat এর হইচই ফেলে দেয়া বই ‘FIVE POINT SOMEONE’. এই বই থেকেই পরর্বতীতে ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে ব্যাবসা সফল ফিল্ম “3 IDIOTS” বানানো হয়।
কানে হেডফোন গুজে দিলাম। আপাতত বই পড়া বন্ধ, ফোন থেকে রেডিও শোনা শুরু। রেডিও স্টেশনগুলো সবকিছুতেই আবার এক কাঠি সরেশ। এক স্টেশনে রবীন্দ্র সংগীত চলছে-
“সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো, শোনো পিতা,
কহ কানে কানে ,শোনাও প্রানে প্রানে মঙ্গল বার্তা । “
মৃত্যু উপলক্ষ্যে এই গান, নাকি ঘটনা ভিন্ন ,জানি না।
রেডিও বন্ধ করলাম। সূরা আল ফীল-এর একটা কথা বারবার মনে ঘুরছে-
“তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি ?”
ভাইয়ার সাথে বাবার সম্পর্ক ভালো না,সম্ভবত কোনো কালেই ছিল না। অন্তত আমি কখনো তাদেরকে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে দেখিনি। ভাইয়া প্রায়ই মদ,গাজা খেয়ে বাসায় ফিরতেন। ফিরেই বিশাল হুংকার দিয়ে বাবাকে বলতেন-
“অই কুত্তার বাচ্চা,টেকা বাইর কর।
…………………………………“
ভদ্র ভাষায় মোটামুটি এই বাক্যটা লেখা যায়। বাকি বাক্যগুলো সভ্য সমাজের জন্য না। অবশ্য সভ্য সমাজ কি জিনিস, তাও প্রশ্ন-সাপেক্ষ। থাক,সেই প্রশ্নে না গেলাম।
ভাইয়া অবশ্য অন্য সময় সম্পুর্ণ ভিন্ন মানুষ।
শুনেছিলাম,TROY নগরীর রাজপুত্র,PARIS নাকি ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে রুপবান ছিলেন। তিনিও সম্ভবত ভাইয়াকে দেখলে লজ্জায় পরে যেতেন।
উনি প্রথম প্রথম বাইরে মদ খেতেন। ইদানিং যা করার বাসায়ই করেন। আমার অবশ্য একদিক দিয়ে লাভই হয়েছে।
উনি যেসব মদ খেতেন,তার বোতলগুলো আমি জমিয়ে রাখতাম। বোতলগুলো দেখতে অপূর্ব।
এবার আমার সম্পর্কে কিছু বলি। আমি OXFORD এ পড়ি। না, England এর oxford এ না, ধানমন্ডি ২৭ এ অবস্থিত Oxford International School এ।
English Medium School . BRITISH CURRICULUM অনুসরণ করে। আমি এবার O’level দিব। ক্লাসে আমদের ইউরোপিয় ইতিহাস পড়ানো হয় কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিস্তৃতভাবে কিছুই পড়ানো হয় না। ক্লাস এইট পর্যন্ত HISTORY & CULTURE OF BANGLADESH নামে একটা বিষয় পড়ানো হত। তা পড়লে আর যাই হোক,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মনে জাগে না।
ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ছিল আমাদের কাছে DOTTA বা CALL OF DUTY খেলার মত একটি বিষয়। অবশ্য আমি সেই দলে ছিলাম না। এর মূল কারণ ভাইয়া। উনি এই বিষয়ে আমার সাথে নানান কথা বলতেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কতগুলো বইও দিয়েছিলেন।
বইগুলো আমি মনযোগ সহকারে পড়েছি।
আমার জীবনের লক্ষ্য কী?
প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বাবাকে খুন করা। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।
বহু আগেই এই ব্যাপারটা ঠিক করেছিলাম। ইদানিং বাবার কর্মকান্ড ও কথাবার্তা আগুনে ঘি ঢালে।
কথাবার্তার নমুনা—
“বাদশা, আকিজ মোল্লার খবর কি? কাম হইছে?”
“না,স্যার। মারি নাই। “
“মারছ নাই মানে?ও সব ফাঁস কইরা দিলে?”
বাদশা আলমগিরের চোখে-মুখে হাসি ফুটে উঠল,”মেরে দিলেই তো খেল খতম হয়না। ওকে আটকে রেখেছি। আগে ওর কাছ থেকে জেনে নেই, ঘটনা আর কে কে জানে।
আর মারবই যখন ; তখন, ভয় দেখিয়ে আগে ওর পরিবারের কাছ থেকে কিছু টাকা উঠাই। “
“সাব্বাস, বাদশা। শিক্ষিত মাইনষের বুদ্ধিই আলাদা। তুই জানি কি পাশ?”
“IBA থেকে FINANCE এ BBA করেছি। সব আপনার দোয়া স্যার।
“বাদশা আলমগিরের মুখে তেলতেলে হাসির আভা।
“ভালো,ভালো। কূটবুদ্ধি শিক্ষিত মাইনষের মাথায়ই বেশি থাকে। তর নাম যেমন বাদশা, কামও তেমন। “
“থ্যাংক ইউ, স্যার।
“
“থ্যাংক ইউ না, কবি জাযাকাল্লাহ খায়রান। “((মহান আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুক )
“ভুল হয়ে গিয়েছে,স্যার। জাযাকাল্লাহ খায়রান। “
“ওয়া ইয়্যাকুম। “(আল্লাহ তোমাকেও দান করুক)
বাবার মন-মেজাজ সেদিন বেশ খুশি খুশি ছিল।
খুশি থাকলে তিনি হালকা মদ্যপান করেন, ভাঙ্গা ভাঙ্গা উর্দুতে কথা বলতে শুরু করেন আর সুন্দর সুন্দর গালি দেন।
“সাব সালে, শুয়র কা বাচ্চা। কাম নাই কাইজ নাই……। ও কেয়া কেহতে হ্যায়…, যুদ্ধাপরাধী। হাম লোগোকা বিচার…।
বেহেনচোদ। খাতাম কার দো, সাবকো খাতাম কার দো। “
বাবা গুনগুনিয়ে উঠলেন-
“আশেক তেরা স্যাযা কেয়া হ্যায়?
যো দারদ হি নেহি, উস্কা দাওয়া কেয়া হ্যায়?“
রুহুল কবির অর্থাৎ আমার বাবা অতি ধুরন্ধর মানুষ। যুদ্ধাপরাধী তকমা উনি অসাধারণ দক্ষতার সাথে ধামাচাপা দিয়েছেন। উনি ঠিকই বলেছেন-“ যে রোগই নাই, তার আবার ঔষধ কি?” তার নামে এই ব্যাপারে কোন মামলাই নেই, বিচারের তো প্রশ্নই উঠে না।
সমস্যা হল, আমি তারচেয়েও উঁচু শ্রেণীর ধুরন্ধর। কী আর করা? তারই তো সন্তান।
কিছুদিন আগে দারোয়ান এসে আমাকে বলে-“ছোট সাহেব, কুয়েত যাইতাছি। দোয়া কইরেন।
“তাই নাকি?ভালো খবর তো।
কবে যাবা?”
“আল্লাহ দিলে ২০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে। “
“টাকা পয়সার যোগাড় হয়েছে?”
“এই হইছে আর কি…। সব আল্লাহ পাকের মেহেরবানি। “
“তুমি দাড়াও। আমি আসছি।
“
রুম থেকে ৫০০ টাকার একটা বান্ডিল আর ভাইয়ার একটা মদের বোতল নিয়ে এলাম।
“এখানে ১০০০০ টাকা আছে। আপাতত আমার কাছে আর নেই। পরে এসো আরেকবার। আর ভাইয়া এই বোতলটা দিয়েছে।
বাদশা ভাইকে বলবা, ভাইয়া বলেছে এই বোতলে ক্লোরফর্ম ভর্তি করে নিয়ে আসতে। “
“কি জিনিস?”
“ক্লোরফর্ম। নাম মনে থাকবে তো?”
উনি উপর নিচে মাথা নাড়ালেন। টাকাটা নিয়ে বললেন “সব আপনাগো দোয়া। আল্লাহ আপনারে বাঁচায় রাখুক।
“
কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লোরফর্মভর্তি বোতল ভাইয়ার দরজার ডান দিকের টেবিলের উপর রেখে দেয়া হল। সচরাচর আমি ছাড়া কেউ ভাইয়ার রুমে ঢোকার সাহস পায় না। যা দেয়ার তা ওই টেবিলের উপর রেখে দেয়। আমি বোতল নিয়ে রুমে চলে এলাম। ওয়াইনের বোতল।
বোতলের গায়ে লেখা,” JACOB’S CREEK : PINOT NOIR” আমার কাছে ওয়াইন ভর্তি এরকম আরেকটি বোতল আছে। গ্লাভস পরে ভাইয়ার রুম থেকে চুরি করেছিলাম। প্রথমে গ্লাভস পরে একটা পানির বোতলে সম্পুর্ণ ওয়াইন ঢেলে,নাক চাপা দিয়ে ওয়াইনের বোতলে খানিক ক্লোরফর্ম ঢাললাম আর বাকি ক্লোরফর্ম একটা খালি ফুলদানিতে রাখলাম। অর্থাৎ এখন চুরি করা ওয়াইনের বোতলে আছে ক্লোরফর্ম। যেভাবে চুরি করেছিলাম,ঠিক সেভাবেই গ্লাভস পরে ভাইয়ার অন্যান্য বোতলের সাথে ওই বোতলটা রেখে এলাম।
ভাইয়া রুমে অঘোরে ঘুমাচ্ছিল। সব শেষে, যে বোতলে বাদশা ভাই ক্লোরফর্ম ভরে এনেছিলেন,তা একটা ব্যাগে ভরে ধানমন্ডি লেকে হাটতে বের হলাম। তখন প্রায় রাত ১০টা । লেকে মানুষজন কম। এদিক-ওদিক তাকিয়ে লেকের বাধানো ঘাটে বোতল্ টা আঁছড়ে মারলাম।
টুকরাগুলো পা দিয়ে পানিতে ফেলে দিলাম। সমস্যা হয়নি, পায়ে জুতা ছিল। এত ঝামেলা করার কারণ, কেউ যেন পরে আমার ফিঙ্গার প্রিন্ট না পায়। ক্লোরফর্ম এর বোতলে এখন শুধুই ভাইয়ার ফিঙ্গার প্রিন্ট।
আমি মনে মনে হিসাব করছি, রুমালে ক্লোরফর্ম চেপে অজ্ঞান করে বাবাকে ফ্যানে ঝুলাতে কতক্ষ্ন লাগবে।
উনার শরীরের তেল-চর্বির স্তরের কথা মাথায় রেখে বলা যায়, কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট লাগবে। দড়ি আর বাড়ির মাস্টার কি আগেই যোগাড় করেছি। প্রথমে অবশ্য মাকে ক্লোরফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করতে হবে।
রাত ৩টা। আমি বাবার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
এগিয়ে যাওয়ার সাহস হচ্ছে না। মনে হচ্ছে,কে যেন পায়ে শিকল বেধে দিয়েছে। বেশ শক্ত বাধন। আমি বাধন ছিড়ে সামনে এগোলাম। রুমের দরজা খোলাই ছিল।
ভিতরে ঢুকে দেখি বাবা সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। জিহবা বের করা। বীভৎস দৃশ্য।
হঠাৎ যেন কেউ থাবা মারল বুকে, ভয়ের কালো থাবা। দরজার ওপাশের আমিতে অস্বস্তি ছিল,ভয় না।
“ছোট সাহেব”।
আমার বুক ধক করে উঠলো। আমি চমকে পিছনে ফিরে তাকালাম।
“ঘুমাতে যান, রাত অনেক হয়েছে। “
বাদশা আলমগিরের চোখমুখ যুগ যুগ ধরে পরে থাকা প্রস্তর খণ্ডের মত নির্জীব।
শুধু ঠোঁটের কোণে এক চিলতে গর্বের হাসি।
কী নির্লিপ্ত সেই আঁখি!
কী পবিত্র সেই হাসি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।