রোববার সকালে নমুনা ডিম দেয়ার পর দুপুর থেকে পুরোদমে ডিম ছাড়া শুরু হয়। এরপর হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম সংগ্রহ শুরু করে আহরণকারীরা। তবে ডিম সংগ্রহের পরিমাণে হতাশ জেলেরা।
হাটহাজারী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববার বেলা একটা থেকে মাছ পুরোদমে ডিম দেয়া শুরু করে।
শনি ও রোববারে টানা ভারি বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে মাছগুলো ডিম দেয়া শুরু করে বলে জানান তিনি।
মৎস্য কর্মকর্তা জানান, হালদা নদীর হাটহাজারী ও রাউজান অংশের কাশেম নগর, আজিজের ঘাট, নাপিতের ঘাট, আমতুয়াসহ বিভিন্ন স্থানে চার থেকে পাঁচশ নৌকা নিয়ে জেলেরা ডিম সংগ্রহ করছে।
এছাড়া নদীর সত্তার ঘাট, অংকুরী ঘোনা, মদুনাঘাট, গড়দুয়ারা, কান্তার আলী চৌধুরী ঘাট, নাপিতের ঘাট, উত্তর মাদার্শা এলাকার বাঁকে ডিম ছাড়ে রুই জাতীয় মাছ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিটি নৌকা বিকাল চারটা পর্যন্ত দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করেছে।
হালদা নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেলেরা তাদের প্রত্যাশিত ডিম পায়নি। যেভাবে ডিম সংগ্রহের কথা, তা হয়নি।
তার ধারণা, এ মৌসুমের প্রথমদিনে তিন থেকে চারশ নৌকা তিন হাজার কেজির মতো ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছে।
এ মৌসুমে আবারও বজ্রসহ বৃষ্টি হলে পুনরায় মা জাতীয় রুই মাছ ডিম ছাড়বে বলে তিনি ধারণা করছেন।
প্রতি বছর এপ্রিল-জুন মাসের মধ্যে পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে অনুকূল পরিবেশে হালদা নদীতে রুই জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়ে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মিঠা পানির মৎস্যপ্রজনন ক্ষেত্র এ হালদা নদী। যেখানে মা মাছ এসে ডিম ছাড়ে এবং আহরণকারীরা ডিম সংগ্রহ করে থাকে।
সংগ্রহ করা ডিম চারদিনের মধ্যে ফুটে রেণুতে পরিণত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর কোন নদীতে তেমন হয় না। প্রতি ৬০ কেজি ডিম থেকে এক কেজি সমপরিমাণ রেণু পাওয়া যাবে।
এসব রেণু প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে।
মনজুরুল কিবরিয়ার হিসাব অনুযায়ী, ২০১২ সালে দুইদফায় প্রায় তিনশ' কেজির মতো রেণু পাওয়া যায়। ২০১১ সালে সংগ্রহ করা ডিম থেকে রেণু পাওয়া যায় ২১০ কেজি।
২০১০ সালে দেড়শ' কেজি, ২০০৯ সালে ২২০ কেজি এবং ২০০৮ সালে ৪০ কেজির মতো রেণু পাওয়া যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।