আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিয়ম ভেঙে এয়ারটেলের মোবাইল ব্যাংকিং

দেশে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানই কেবল মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিতে পারে। সেলফোন অপারেটর এ ক্ষেত্রে গেটওয়ে হিসেবে ওই ব্যাংককে সহায়তা দেয় মাত্র। কিন্তু এয়ারটেলের ক্ষেত্রে ঘটেছে ঠিক এর উল্টো। নিয়ম ভেঙে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সহযোগিতায় মোবাইল ব্যাংকিং করছে অপারেটরটি। তাদের প্রচারণায়ও ডাচ্-বাংলার সহযোগিতায় এ সেবার বিষয়টি জানিয়েছে এয়ারটেল।

সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যাংকের বদলে সেলফোন অপারেটরদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকেরও নজরে এসেছে বিষয়টি। ডাচ্-বাংলাকে চিঠি দিয়ে নিয়ম মেনে মোবাইল ব্যাংকিং করার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এয়ারটেলের সহযোগিতায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, কোনো সেলফোন অপারেটরকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অনুমতি দেয় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংককে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশ না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এয়ারটেলের সঙ্গে ডাচ্-বাংলার সম্প্রতি চালু করা সেবাটি বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং মডেলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই নিয়ম মেনে মোবাইল ব্যাংকিং করার জন্য ডাচ্-বাংলাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাংক ও নন-ব্যাংক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিলেও বাংলাদেশে শুধু ব্যাংক প্রতিষ্ঠানকে এর অনুমতি দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত মোবাইলে আর্থিক সেবার নীতিমালার ধারা ৬-এ বলা আছে, বিশ্বব্যাপী ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত দুই মাধ্যমেই মোবাইলের সাহায্যে আর্থিক সেবা প্রদানের বিধান রয়েছে। তবে বাংলাদেশের আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে শুধু ব্যাংকের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেয়া যাবে। তবে এয়ারটেল ডাচ্-বাংলার সহযোগিতায় এ সেবা দিচ্ছে। এয়ারটেলের এজেন্ট এখন ডাচ্-বাংলার মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের ভূমিকা পালন করছে। ফলে এয়ারটেলের এজেন্টেদের কাছে জমা হওয়া আমানতের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, ডাচ্-বাংলা শুরু থেকেই বাংলালিংক ও সিটিসেলের সহযোগিতায় সেবাটি দিয়ে আসছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য যে নম্বর দেয়া হয়েছে তা হলো *৩২২#। এ ক্ষেত্রে বিকাশ ব্যবহার করছে *২৪৭# নম্বরটি। তবে এয়ারটেল নিজেদের *৪০০# নম্বরের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। এয়ারটেল থেকে এ নম্বরে ক্লিক করলেই স্ক্রিনে ভেসে উঠছে ওয়েলকাম টু এয়ারটেল।

এর ১-এ ক্লিক করলে ডাচ্-বাংলা এবং ২-এ ক্লিক করে অন্য সেবায় যাওয়া যায়। এভাবে এয়ারটেল নিজের নম্বর ব্যবহার করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে এ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে গ্রাহকদের এ সেবা পেতে প্রথমে এয়ারটেলে প্রবেশ করে পরে ডাচ্-বাংলার হিসাবে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এয়ারটেল সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে মানি ট্রান্সফার সার্ভিস চালু করতে চায় এয়ারটেল। এরই অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশে ৪০০ নম্বরটি জনপ্রিয় করতে চায়।

পরে এ নম্বরের মাধ্যমে সব ব্যাংককে মোবাইল সার্ভিস দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে ব্যাংকাররা বলছেন, এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে জিম্মি করতে চায় এয়ারটেল। পরে সেবাটি নিজেদের আয়ত্তে নিতে চায় তারা। এটা হলে দেশের ব্যাংকগুলো মোবাইল ব্যাংকিং খাতে যে বিনিয়োগ করছে তা তাদের জন্য আত্মঘাতী হয়ে উঠবে। এ বিষয়ে এয়ারটেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, ‘সেবাটি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের।

তবে আমরা নতুন করে সেবাটি নিয়ে এসেছি। আর এয়ারটেলের শর্ট কোড ৪০০ শুধু মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য বরাদ্দ। ভবিষ্যতে এয়ারটেলের গ্রাহকরা ৪০০ নম্বরে ডাচ্-বাংলা ছাড়াও অন্য ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা পেতে পারে। আর মূলত ডাচ্-বাংলার এ সেবায় এয়ারটেল সহযোগিতা করেছে। তবে কী কারণে প্রচারণার সময় ডাচ্-বাংলাকে সহযোগী লেখা হচ্ছে তা আমরা জানি না।

’ এ বিষয়ে ডাচ্-বাংলার একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সুত্রঃ বনিক বার্তা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১২ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।