আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার,আপনার বেলায়ও কি ঘটে?????জেনে নিন অসিডি বা অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার সম্পর্কে

মানুষের উপকার কম করলাম না,পরিনামে খেলাম শুধু বাঁশ। তবু হাল ছাড়ি নাই....উপকারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিমু রান্না ঘরে কাজ করছে। যতবারই কিছু করছে ততবারই বার বার হাত ধুয়ে নিচ্ছে আর রান্না ঘরের ওয়ার্কটপ মুছে নিচ্ছে। মা প্রায়ই বকা দেন।

বলেন সব কাজ শেষ করে একবারে ধোয়া-মুছাটা সারলেই তো হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা?তার এই অভ্যাসটা রয়েই গেছে। না মুছলে র ধুলে তার মন কেমন যেন ক্ষুত ক্ষুত করে। রীতা ঘরের কাজ শেষ করে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হলো কী না আবারও ঘরে ঢু মারতে ঢুকে পড়ে। বাচ্চাটার স্কুলে দেরী হয়ে যাচ্ছে তাও তার একবার হলেও ঢোকা চাই।

সব কিছু দেখে শুনে তালা বন্ধ করলেও তার মনে সন্দেহ থেকে যায়। কোথাও কী কিছু ভুল হয়ে খোলা রয়ে গেল?রান্না ঘরের জানালা কিংবা আলমারির তালা? এরকম চিন্তায় ভোগেন অনেকেই। আর এই চিন্তা থেকে আপনার নিজের মনে নিজের অজান্তেই সৃষ্টি হয় বলপ্রয়োগমূলক পর্যায়ক্রমিক আচ্ছন্নভাব। ধীরে ধীরে তা প্রচন্ড দুঃশ্চিন্তায় রুপ নেয়। আর বেড়ে যায় মানসিক অশান্তি।

এই অবস্থাটিই হলো অসিডি বা অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার। অসিডি এর উপসর্গ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। কম মাত্রা থেকে শুরু করে বেশি মাত্রার। প্রথমদিকে তা থাকে আচ্ছন্ন অবস্থায় যা আপনাকে দুঃশিন্তায় ফেলে দেয় তারপর তা ধীরে ধীরে নিয়ে যায় সেই চিন্তা থেকে মুক্তির পথ খোঁজার দিকে। আর এ পথ খুঁজতে আপনি মরিয়া হয়ে ওঠেন।

এর কিছু উপসর্গ রয়েছে: -আপনি মনে করতে পারেন বা ভেবে নিতে পারেন কোন কিছু খুব নোংরা। -নিজের শরীর আর রোগ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ভুগতে পারেন। -নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ের সূত্রপাত হতে পারে। -ধার্মিক অথবা বিধার্মিক চিন্তা। -আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়তে পারেন।

উপরের এসব মনোভাব যখন তৈরী হয় তখন আপনি চাইবেন তা থেকে পরিত্রাণ পেতে কিছু উপায় অবলম্বন করতে। তা হলো: -নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বার বার চেক করতে পারেন। -পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বেশী পরিমাণে আরম্ভ করেন। -কোন বিষয়ে পর্যায়ক্রমিক আচরণ লক্ষ্য করা যায়। -মানসিক এক প্রকার চাপ।

অসিডি এর সঠিক কারণ কি তা এখনও জানা যায়নি। অনেকসময় তা পরিবারগতভাবে চলে আসে। যদি আপনার পরিবারে আপনার মা-বাবা,বা ভায়-বোন কারো অসিডি থেকে থাকে তাহলে তা আপনার মাঝেও আসার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে। কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে জীবনের নানা প্রকার ঘটনা থেকে যেমন-নতুন শিশুর জন্মগ্রহণ,সম্পর্কের পরিবর্তন,কাছের কোন আত্মীয়র মৃত্যু অসিডি এর কারণ হতে পারে। অসিডি এর মারাত্মক আক্রমণে আপনার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

তাই যখনই বুঝতে পারবেন আপনি অসিডিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন তখনই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। অসিডি থেকে মুক্তির উপায়: নিজেকে নিয়ন্ত্রণ-অসিডি থেকে বাঁচতে নিজেকে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন। এর মানে এই নয় যে যা আপনার মনে আসছে তা আপনি ইচ্ছে করে দূরে ঠেলে দিবেন বা ভুলে থাকার চেষ্টা করবেন। এমন করতে গেলে সেই চিন্তা আপনার মনে আরো বেশী আসতে চাইবে। তাই মনে কোন দুঃশ্চিন্তা এলে তা লিখে রাখুন।

অনেকে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন নানা কাজে। শরীরচর্চায় মন সুস্থ থাকে। কথোপকথন চিকিৎসা-এতে আপনি বিশেষজ্ঞের সহায়তায় তার সাথে বা কোন গ্রুপের সাথে আলোচনায় নিয়োজিত হবেন। এতে আপনি নিজের মনোভাব দূর করতে যা যা করবেন তা না করে বিভিন্ন জনের সাথে তাদের ব্যপারগুলো শুনবেন আর ভাগ করে নিবেন পদ্ধতিগুলো। অনেক সময় বিশেষজ্ঞরা হয়ত সবার সামনেই আপনাকে কিছু একটা ধরতে বলল আর আপনি হয়ত তা না পরিষ্কার করে ধরতে সক্ষম হলেন।

ঔষধ-এক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারের পরামর্শে হয়ত আপনি সাইকিয়াট্রিস্ট এর স্মরণাপন্ন হলেন। তখন তার পরামর্শে কোন ঔষধ নেয়া শুরু করলেন। তবে ঔষধের প্রয়োজন তখনি হবে যখন তা মারাত্মক পর্যায়ে চলে যাবে। তাই যদি আপনি মনে করেন আপনার মধ্যে এধরণের কিছু লক্ষ্য করছেন তাহলে নিজেই তা প্রতিহত করার চেষ্টা করুন। আর প্রয়োজনে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হোন।

সুস্থ থাকুন আর মনের উপর অযৌক্তিক চাপ দূর করুন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.