আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুরস্কের বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা!

অভিলাসী মন চন্দ্রে না পাক, জোছনায় পাক সামান্য ঠাই আজকে তুরস্কের বিজয় দিবস। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যে'র পরাজয়ের পর মধ্যপ্রাচ্য-উত্তর আফ্রিকা-পূর্ব ইউরোপের এলাকাগুলো সহ ব্রিটিশ-ফ্রেঞ্চ-ইটালিয়ান-আর্মেনিয়ান এবং গ্রিকদের হাতে চলে গিয়েছিল তুরস্কের মূল ভূখন্ড আনাতোলিয়া। পরাজিত সুলতান এবং বিজয়ী মিত্র বাহিনী'র মাঝে'র চুক্তি অমান্য করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জাতীয়তাবাদীদের নিয়ে আনাতোলিয়া রক্ষা'র অভুতপূর্ব এক বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীনতা যু্দ্ধে'র সূচনা করে মুস্তফা কামাল পাশা। সামরিক এবং প্রশাষনিক উভয় ক্ষেত্রই নতুন ভাবে তৈরী করায় জাতীয়তাবাদীরা ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত এবং দ্রুত! সুলতান'কে উৎখাত এবং মিত্রবাহিনী'কে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করে সুলতান ও মিত্রবাহিনীর মাঝে সম্পন্ন সকল অতীত চুক্তি'র শর্তগুলোর সাথে সাথে বিশাল অংকের ক্ষতিপূরণ, সব অমান্য করে মুস্তফা কামাল, গঠন করে তুর্কিশ প্রজাতন্ত্র! যদিও মিত্র বাহিনী'র প্রধান শক্তি ব্রিটেন ও ফ্রাঁন্স যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থায় নতুন করে তুর্কী দখলের জন্য সর্বশক্তি ব্যাবহার করে নাই, কারন ওদের ধারনা ছিল তুর্কীর মূল ভুখন্ড দখল করে রাখা কোনদিনই সম্ভব হবে না! কিন্তু গ্রীস এবং আর্মেনিয়া সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছিল পূর্ব এবং পশ্চিম তুরস্কের কিছু এলাকা স্থায়ীভাবে দখল করে নিতে। কিন্তু শোচনীয় পরাজয়ের শিকার হয় ওরা।

তুরস্কের এই সংগ্রামে একটু উল্টোভাবে হলেও, আমাদেরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। সুলতানের অনুরোধে উপমহাদেশে তৈরী "খেলাফত আন্দোলন" তৎকালীন তুর্কী শাসকদের কূটনৈতিক শক্তি দান করেছিল। এবং ব্রিটেনও উপমহাদেশীয় মুসলিমদের বিরোধীতায় তুরস্কের ছিল যথেষ্ট নমনীয়। সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত জাতীয়তাবাদি তুর্কীদেরই জয় হয়। গঠিত হয় আধুনিক তুরস্ক।

মুস্তফা কামাল পাশা ( পাশা মানে কমান্ডার) হয়ে যায় আতাতুর্ক। তিনি কোনদিনই তুরস্কের শাষনভার অফিসিয়ালি নিজ হাতে নেয় নাই, কিন্তু আধুনিক তুরস্কের সম্পূর্ণ ভিত্তিটা গড়ে গিয়েছেন তুর্কীদের অভিবাবক হিসেবে, যা আজো সবাই মান্য করে চলছে! সাহস, দৃঢ় আকাঙ্খা, দেশপ্রেম, সৌভাগ্য, একতা ও শৃঙ্খলা'র চমৎকার কিছু দৃষ্টান্ত তুর্কীরা বেশ কয়েকবারই দেখিয়েছে। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী এই স্বাধীনতার সংগ্রাম, অনন্য! পরাজিতের এমন গৌরবান্বিত বিজয় ইতিহাসে বিরল। আজকে'র এই বিজয় দিবসে, তুর্কী ভাষায় এর নাম "জাফের বাইরামে" তাদের জানাই শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.