আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সচিত্র ওযুর পদ্ধতি

ওযুর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা। শরীয়াতের পরিভাষায় পরিষ্কার পানি দ্বারা এক বিশেষ পদ্ধতিতে মুখমন্ডল, হাত ও পা ধৌত করা এবং মাথা মাসেহ্‌ করাকে ওযু বলে। পবিত্র কুরআন এ আল্লাহ্‌ পাক বলেছেন, “হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখ মন্ডল ও দুই হাত কনুই সহ ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করবে, আর দুই পা গোড়ালীসহ ধৌত করবে” [সূরা মায়িদাহঃ আয়াত ৬] সুতরাং ওযুর গুরুত্ব অনেক। এই লেখাটাতে আমি চেষ্টা করব আপানাদের ওযুর সহীহ পদ্ধতি সম্পর্কে (ছবি সহ) পরিষ্কার ধারণা দিতে। ওযুর ফরয চারটি।

যথা- ১। মুখ মন্ডল ধৌত করা ২। দুই হাত কনুই সহ ধৌত করা ৩। মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা এবং ৪। দুই পা টাখনু সহ ধৌত করা এছাড়াও আমরা যে মিসওয়াক করি বা নাকে পানি দেই ইত্যাদি করি, এগুলো সুন্নত।

তাই পরিপূর্ণ ওযু করতে গেলে সময়ের এবং পানির অভাব না থাকলে অবশ্যই এগুলোও পালন করতে হবে এবং তিনবার করে। চলুন যাওয়া যাক ওযুর পদ্ধতিতে- ১। ওযুর সংকল্প আনতে হবে মনে ২। এরপর বলতে হবে- “ বিস্‌মিল্লাহির্‌ রাহ্‌মানির্‌ রাহিম” ৩। দুই হাতের কবজি পর্যন্ত ধৌত করতে হবে, প্রথমে বাম হাত দিয়ে ডান হাতের কবজি পর্যন্ত তিনবার এবং এরপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কবজি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করতে হবে ৪।

ডান হাতে পানি নিয়ে তা মুখে দিয়ে ভাল্ মত কুলি করতে হবে । এভাবে তিনবার যেন কোন প্রকার খাদ্যকণা না থাকে মুখের ভিতর ( রোজা থাকা অবস্থায়ও এটাই করতে হবে, তবে অনেক হুঁশিয়ার থাকতে হবে যেন পানি পেটে না যায়))। ৫। ডান হাতে পানি নিয়ে নাকে পানি দিয়ে বাম হাতের বৃদ্ধাংগুলি আর কনিষ্ঠাংগুলি দ্বারা নাকের ভিতর পরিষ্কার করতে হবে। এমনভাবে পানি প্রবেশ করাতে হবে যেন নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছায়।

নাকের ভিতর কিছু থাকলে নাক ঝাড়তে হবে। এভাবে তিনবার। প্রতিবারই পরিষ্কার পানি দিতে হবে নাকে। ৬। এবারে মুখমন্ডল অর্থাৎ কপালের উপরে যেখান থেকে স্বাভাবিকভাবে মাথার চুল গজায় সেখান থেকে নিচের থুতনির নীচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে আরেক কানের লতি পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থান পানি দিয়ে তিনবার ধৌত করতে হবে।

দাঁড়ি থাকলে তা খিলাল করতে হবে হাতে পানি নিয়ে যেন দাঁড়ি পরিষ্কার হয় এবং সম্ভব হলে দাঁড়ির গোড়ায় পানি পৌঁছায় (পাতলা দাঁড়ির ক্ষেত্রে)। গোঁফের খেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এভাবে তিনবার করতে হবে। ৭। এবারে বাম হাত দিয়ে পানি দ্বারা ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ভালভাবে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।

তারপর একি ভাবে ডান হাত দিয়ে বাম হাতও পরিষ্কার করতে হবে। কারো হাতে আংটি থাকলে দেখতে হবে আংটির নিচেও যেন পানি প্রবেশ করে। নখেও যেন কোন ময়লা না থাকে। ৮। মাথা মাসেহ করাটা একটু খেয়াল করে করতে হবে।

উপরের ছবির মত করে বৃদ্ধাংগুলি আর শাহাদাত আংগুলি আলাদা রেখে দুই হাত দিয়ে কপালে চুল শুরু হবার জায়গা থেকে পিছনে মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসেহ করতে হবে, তারপর একই ভাবে হাত উল্টিয়ে মাথার তিন-চতুর্থাংশ পিছন থেকে সামনে মাসেহ করতে হবে। এবারে শাহাদাত আংগুলি দ্বারা কানের ভিতরের অংশ আর বৃদ্ধাংগুলি দ্বারা কানের বাইরের অংশ পরিষ্কার করতে হবে। এরপর হাতের পিছনের অংশ দিয়ে ঘাড় মাসেহ করতে হবে। এভাবে তিনবার। ৯।

এরপর ডান হাত দিয়ে পানি ঢেলে বাম হাত দিয়ে ডান পা টাখনু বা গোঁড়ালি পর্যন্ত ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে এমনভাবে যেন আংগুলের ভিতরও কোন ময়লা না থাকে। প্রথমে ডান পায়ের কনিষ্ঠ আংগুল থেকে খিলাল করতে হবে, বাম পা এর ক্ষেত্রে বৃদ্ধাংগুলি থেকে শুরু করতে হবে। এভাবে তিনবার। ওযু শেষ হবার পর নিচের দু’আ পড়তে হবে- “আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু-লা-শারীকা লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আ’বদুহু-ওয়া রাসূলুহু। ” অর্থঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কোন মা’বুদ নাই।

আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রাসূল । উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করে youtube এ ওযুর প্রচুর ভিডিও-ও পাবেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.