আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তালা ধর্ষণ - তালা লাগিয়ে পড়ছে বিপদে

তুমি আমি আমরা ...... আজাদ সাহেব একজন ব্যাংক কর্মকর্তা । এক ছেলে , দুই মেয়ে নিয়ে তাহার সুখী সংসার । দীর্ঘদিন যাবত বাস করছেন ঢাকা , মিরপুর ২ এ । তার দেশেরবাড়ি জামালপুরের জেলার মেলান্দ থানা । আর তার অপরূপা স্ত্রী মনা’র দেশেরবাড়ি কিশোরগঞ্জ ।

আজাদ সাহেব স্ত্রী পাগল স্বামী তাই স্ত্রীর আবদার অনুযায়ী প্রতি বছর তিনি তার শ্বশুর বাড়ি কিশোরগঞ্জে ঈদ করেন । নিজ বাসা ফেলে বাইরে ঈদ করতে তার মোটেও ভয় করে না ,কারন তার এই ঢাকা – “ সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা , নাই চোরের ঝামেলা । “ এই ঢাকা সৃষ্টির পর কখনো চুরি চামারি হয়নি । এমনকি এই পর্যন্ত তিনি তার বাসায় তালা পর্যন্ত মেরে যাননি । তিনি সর্বদা বাসা উদাম করে , সদর দরজা ফাঁক ( ! ) করে বউয়ের দেশের বাড়িতে ঈদ করতে যান ।

দেশের বাড়িতে ঈদ করে ঢাকায় ফিরে এসে দেখেন বাসা তার আগের মতোই সেইফ এন্ড সুইট আছে । দরজা যে এঙ্গেলে কাইত করে খোলা রাখা ছিল , ঠিক তাই আছে । আলমারি , ফ্রিজ , কালার টিভি , সব সুন্দর মতো হেফাজতে । চোর পুলিস ডাকাত বাবু কেউ কোনদিন তার কিম্বা তার আশেপাশের কোথায়ও জীবনে আসে নি , আসে নি ! ইয়াহুহুহু ! জিমেইল , হটমেইল কিন্তু মুসিবত হইছে এইবার ! নিরাপত্তামন্ত্রী বলেছে এইবার নাকি বাসায় তালা মেরে যেতে হবে ! কস কি খালাম্মা ! আজাদ সাব ভাবল “ আগে কি সুন্দরদিন কাটাইতাম “ , ঘরে জিন্দেগীতে তালা মারি নাই , এইবার এমন কি হইল যে খোদ মন্ত্রীসাহেবা কয় তালা মারিতে হইবে ! বেপুক চিন্তা শেষে আজাদ সাহেব মিরপুর ১ থেকে একটা মস্ত বড় তালা কিনে আনলো । বিয়ের পর এইবারই প্রথম তিনি তার পরমা সুন্দরী স্ত্রীকে জামদানী শাড়ি কিনে দিতে পারেননি , তার পুত্রকে কিনে দিতে পারেনি এক্সটেসির ঘোড়াওয়ালা গেঞ্জি ! কন্যাদ্বয়কে নিয়ে যেতে পারেননি আড়ঙে ।

কিভাবে নিয়ে যাবে ! তালা কিনতে গিয়ে যে সব মানি শেষ ! মানিব্যাগে খুচরো যে মানি ছিল তাই দিয়ে গুলিস্তান থেকে তিনি স্ত্রী , পুত্র , কন্যার জন্য একদাম ১০০ টাকা , একদাম ১০০ টাকা ধরে কাপড় কিনে তাদের হাতে ধরিয়ে দিলেন । তারপর পরিবারের ব্যাথিত মুখ নিয়ে বাসার সদর দরজায় সেই মস্তবড় তালা লটকিয়ে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করলেন । যেদিন থেকে তিনি বাসা ছেঁড়ে শ্বশুরবাড়িতে পা রাখলেন সেদিন থেকে তার মনে শান্তি নেই । খালি ভয় করে ! তালা কি ঠিক মত টিপি দিয়েছিলেন ? তার সাধের তালা কি এখনো অক্ষত আছে ? তিনি পড়ে গেলেন সুগভীর টেনশনে । রাতে ঘুমের মধ্যে তিনি চিতকুর দিয়ে বলে উঠেন – “ মনা রে , তালা ঠিকমতো টিপি দিয়েছিলাম তো ? “ অধিক টেনশনে মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধি লোপ পায় , আজাদ সাহেবের তাই হল ।

নিজের বুড়ো শ্বশুরকে চিনতে না পেরে জিজ্ঞাস করে বসলেন – “ ও কাকু , এই গ্রামের তালা চাবির দোকানটা জানি ঠিক কোন দিকে ? “ অবস্থা যখন সহ্য ক্ষমতার বাইরে তখন তার স্ত্রী মনা বলল – “ ওগো চলো , আমরা ফিরে যাই বাসায় । এইবারের ঈদটা বরং ঢাকাতেই করি “ কথা মুখ থেকে বাতাসে মিলাবার আগেই আজাদ সাহেব বাকস ,পুটলা বেঁধে বলল – “ চলো তাড়াতাড়ি “ ঈদের আগের দিন রাতেই পরিবারসহ তিনি হাজির হলেন তার তালা দেয়া বাসায় । “ আহ মামু , কি শান্তি ! কি শান্তি ! ” তার সেই তালা দরজায় বহাল তবিয়তে লটকিতেছে । আজাদ সাহেব স্বস্তির পাদ মেরে পকেটে হাত ডুকিয়েই পুরা বনসাই হয়ে গেল ! নট নড়ন-চরন ! পকেটে তালা কেনার রশিদ আছে কিন্তুক তালার চাবি নাই ! নিশ্চই শ্বশুরবাড়িতে প্যান্ট থেকে চাবি পড়ে গেছে ! এখন কি হপে ! সবার মাথায় হাত এইদিকে আজাদ সাহেবের চেপেছে চ্রম হাগু । তালা না খুলতে পারলে খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে ।

তিনি দৌড়ে গেলেন রাস্তায় । রাত হয়েছে গভীর , দোকানপাট সব বন্ধ । তালাচাবির লোক খুঁজে পাবার কোন সম্ভাবনা নেই । তাও তিনি হাপুশ হুপুশ করে দৌড়াদৌড়ই করছেন । বিবি হাজেরা পানির জন্য ছাফা-মারওয়া ছুটেছেন আর তিনি মিরপুরের এ মাথা থেকে ও মাথা চাবির জন্য ছুটছেন ।

“ আমিও নাই দিদিও নাই , কেমন মজা হবে ! “ এইখানে চাবি নাই সাথে কোন মজাও নাই । আজাদ সাহেব ভগ্ন মনে কুতাইতে কুতাইতে ফিরে আসলেন । ইতিমধ্যে তার পুত্র কন্যারা ব্যাগে মাথা রেখে সিঁড়িতেই ঘুম ! তার সুন্দরী বউ রাগে হাতের চুরি কামড়াচ্ছে । আর আজাদ সাহেব খালি কুতিয়েই যাচ্ছে ! তার হাগু এখন বেসালাম পর্যায়ে আছে । আর কোন মতেই আঁটকে রাখা যাচ্ছে না ।

আজাদ সাহেবের কেবলই মনে পড়ছে -- “ একখান তালা মাইরা দিলাম ছাইরা , হাগু চেপে চাবি খুজি , মন আমার তালা চাবিইইইইই ... “ ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।