আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সত্যিই সেলুকাস !! :/

!স্লেট কিংবা খাতা ,সর্বত্রই লেখি যা তা! আজকে একটা লেখা পড়ে আমাদের সময়ের (এইচ এস সি) রসায়ন ব্যাবহারিক পরীক্ষার কথা মনে পরে গেলো । ব্যাবহারিক পরীক্ষা যেঁ কেন্দ্রে নেয়া হতো সেটায় ল্যাব এর সংখা অপ্রতুল হওয়ার কারণে ৩ শিফট এ পরীক্ষা নেয়া হতো । আমার ছিলাম ৩য় শিফট এ । আগের শিফটের পরীক্ষা চলাকালীন টাকা'র বিনিময়ে লবণের নাম বলে দেয়ার কারণে লবন সরবরাহকারী কে আমাদের সময় সরিয়ে নেয়া হয় । অস্বীকার করবো না , আমরা মহা বিপদে পড়ি ।

সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে । বই দেখে লেখা যায় । কিন্তু সমস্যা হয় আরেক জায়গায় । আমরা মোটামুটি ৩০ জন একসাথে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম ৬/৭ টি গ্রুপ এ ভাগ হয়ে । আমার পাশের টেবিলে আমার যেঁ গ্রুপ ছিলো তাতে আমার ২ কাছের বন্ধুও ছিলো।

তাদের এবং আরেকটি গ্রুপ এর এক ই লবণ সনাক্ত করতে দেয়া হয় । দুটোর রং ই ছিলো বাদামী । সিংহ হাজারি স্যার এর বই এ লেখা এটা ফেরাস নাইট্রেট । কবীর স্যার এর বই এ লেখা ফেরাস সালফেট । (যদিও মনে নাই ঠিক মতো ,তবে ইন্টারচেঞ্জেবল এটা নিশ্চিত) ।

অনেকক্ষণ ২ গ্রুপ এর ছেলেরাই অনেক দৌড়াদৌড়ি করলো মামা কে খুজে বের করে টাকা দিয়ে নাম জানার জন্য । আমার ঐ বন্ধুরা লেখলো ফেরাস সালফেট । অন্য গ্রুপ লিখলো ফেরাস নাইট্রেট । পরীক্ষা চলাকালীন ঐ গ্রুপ এর কেউই বলে নাই যে তারা মামার কাছ থেকে নাম জেনে এসেছে । যা হওয়ার তাই হয় ।

আমার ঐ বন্ধু রা কেউ ই কেমেস্ট্রি তে আর এ+ পায়নি । কিন্তু অপর গ্রুপ এর প্রায় সবাই ই এ/এ+ পায় । আমি আমার নিজের কথা বলতেও রাজি আছি । এডমিট কার্ড এর জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছি শুধু মাত্র সিট কই পরবে জানার জন্য । আমার অনেক ক্লাসমেট ই খুশি তে চিল্লাইসে যখন জানতে পারসে সরকারী কলেজে সিট পরেছে ।

আমি নিজেই দেখেছি সরকারী কলেজ এ যাদের সিট পড়ে তারা আশাতীত ভালো রেজাল্ট করে । অন্তত যেটা এক্সপেক্টেড তার চেয়ে ভালো করে । অপরপক্ষে ক্যান্টন্মেন্ট কিংবা প্রাইভেট কলেজ গুলো তে সিট পরায় অনেক ভালো ছাত্রের ই রেজাল্ট খারাপ হয় । এমন ও হয় ছাত্রের কোনও আচরণ খারাপ লাগলে স্যার রা রাগের মাথায় কম নাম্বার দেয় ব্যাবহারিক পরিক্ষায় । আমার এক ফ্রেন্ড এর কাকা সরকারী কলেজে গার্ড দিতে যেতো প্রায় প্রত্যেক বছর ই ।

এবং এটার সুযোগ আমার ঐ ফ্রেন্ড কিভাবে নিয়েছে আমি দেখেছি । একটা নির্দিষ্ট সময়ে ২ রুম এর ২ ছাত্র বাথ্রুম এ যাওয়ার পরিকল্পনা করে এবং এতে সাহায্যকারী থাকে কোনো পরিচিত স্যার । স্যার না থাকলেও ঘণ্টা পড়ার সাথে সাথে অনেক ছাত্র ই বাথ্রুম এ যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে উঠতো । বিশেষ করে ইংলিশ পরিক্ষায় কতো গরু গাধা এভাবে এ+ পেয়েছে তা আমার নিজের চোখে দেখা । থিওরি পরীক্ষার কথা বাদ ই দিলাম ।

ব্যাবহারিক পরীক্ষায় ২৫x৮=২০০ নাম্বার এ ২০০ পাওয়া কত সহজ তা তো দেখেছি ই । আত্মীয় হওয়াও লাগে না । পাশের বাসার কোনো আঙ্কেল হলেও হয় । আমার ২য় ব্যাবহারিক পরীক্ষার দিনের কথা । যে কলেজে আমাদের সিট পরেছিলো সেই কলেজের এক স্যার থাকতো আমাদের পাড়ায় ।

তিনি সায়েন্স এর ও নন । রাস্ট্রবিজ্ঞান এর লেকচারার ছিলেন তিনি । আমকে দেখে তিনি বললেন । "তুমি আমাকে তোমার রোল নাম্বার দাও নাই কেন !?" বলে তিনি আমার রোল নাম্বার নিয়ে গেলেন । যাই হোক এসব আর বলে কি লাভ ।

সারা জীবন বিশ্বাস করেছি এস এস সি , এইচ এস সি তে মোটামুটি বা ভালো রেজাল্ট করতে এতো পড়া লাগে না । এগুলো ভবিষ্যতে তেমন কাজে আসে না । ছোট ভাই দের ও বলেছি এসব কথা কত তার কোনো ইয়ত্তা নেই । রেজাল্ট এর উপর ভিত্তি করে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পাদন করার মতো আইডিয়া কিভাবে এই সব তথাকথিত জ্ঞানী লোকদের উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বের হলো তাই আমার এই গোবর ভরা মাথায় ঢুকতে চাচ্ছে না । :/ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।