আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল । দোযখের ক্রোধঃ
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন,
"যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে , তাদের জন্য রয়েছে দোযখের শাস্তি । সে প্রত্যাবর্তনের স্হানটি খুবই খারাপ । যখন তাদেরকে দোযখে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার একটি বিকট আওয়াজ শুনতে পাবে ।
তা এমনভাবে জ্বলে উঠবে যে, মনে হবে যে যেন গোসসায় ফেটে পড়ছে । (সূরা মূলক)
হাকিমূল উম্মাত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী, তাফসীরে বয়ানূল কুরআনে লিখেন , হয় আল্লাহতায়ালা দোযখকে এমন উপলইব্ধ ও ক্রোধ দান করবেন যে, বাস্তবিকই যারা আল্লাহর গজব ও শাস্তির যোগ্য , তাদের প্রতি তারও ক্রোধ সৃষ্টি হবে । অথবা উপরোক্ত আয়াতে একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝান হচ্ছে যে, মনে হবে যেন দোযখ ক্রোধে ফেটে পড়ছে ।
সূরা ফুরকানে আল্লাহতায়ালা বলেন,
"সে যখণ দূর হতে তাদেরকে দেখবে, তখন সে ক্রোধে এতটা ক্ষেপে উঠবে যে, তারা দুর হতেই তার ক্রোধের শব্দ ও জ্বালাগ্নির আওয়াজ শুনতে পাবে । আর যখন তাদের হাত-পা বেধে একটি শেলে নিক্ষেপ করা হবে , তখন সেখানে তারা কেবল মূত্যুকেই ডাকতে থাকবে ।
"
দোযখ যখন দোযখীদের থেকে একশ বছরের দুরত্বে থাকবে ,তখনই তাদের প্রতি তার দৃষ্টি পড়বে । দেখা মাত্রই সে ঘুরপাক খেতে থাকবে এবং তার থেকে ক্রেোধর শব্দ বের হতে থাকবে , যা দোযখীগণ শুনতে পাবে । আর সে দোযখে তাদেরকে ফেলার পর দুনিয়ায় যেমন মানুষ কোন বিপদে পড়লে মানুষ বলে , হায় ! আমি যদি মরে যেতাম । এভাবে তারা মৃত্যুকে ডাকতে থাকবে । বলবে , হায় মৃত্যু কোথায় ? আমাদের মৃত্যু হোক ।
আমরা এ দহন ও মর্ম জ্বালা আর সইতে পারছিনা ।
আল্লাহতায়ালা বলেন,
"দোযখ ঐসব লোকদের কে নিজেই আহ্বান করবে , যারা দুনিয়ায় সত্য গ্রহণ করা হবে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে এবং সত্য না মেনে মুখ ফিরিয়ে চলে যায় । আর যারা দুনিয়ায় ধন সম্পদ জমা করে তা সংরক্ষণ করে রাখে । সূরা মাআরেজ ।
দোযখের ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথরঃ
কুরআন মজীদে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
"হে ঈমানদারগণ ! দোযখের আগুন থেকে নিজদেরকে এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে নিরাপদে রাখ ।
যে আগুনের ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর । " (সূরা-তাহরীম)
উপরোক্ত আয়াতে পাথর দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, যে পাথর দোযখের ইন্ধন বা জ্বালানী হবে তা হচ্ছে গন্ধকের পাথর । সে পাথর আল্লাহ তায়ালা আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিনে নিকটবর্তী আকাশে সৃষ্টি করে রেখেছেন । এ পাথর কাফেরদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে । - হাকেম, আত-তারগীব ।
এ পাথর ছাড়াও সেসব পাথর মূর্তিকে দোযখের জ্বালানীরূপে ব্যবহার করা হবে, যেগুলো কাফেরগণ পূজা-অর্চনা করত । কোরআন মজীদে আল্লাহতায়ালা বলেন,
"হে মুশরিকগণ ! অবশ্যই তোমরা এবং আল্লাহকে ছেড়ে তোমরা যাদের পূজা করতে সেসব মা'বুদ সবাই দোযখে প্রবিষ্ট হবে " - সূরা আম্বিয়া ।
রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, দোযখে লম্বা গর্দান বিশিষ্ট উটের ন্যায় বিরাট বিরাট সাপ থাকবে । কোন একটি সাপ দংশন করলে দোযখী ব্যাক্তি চল্লিশ বছর পর্যন্ত তার বিষক্রিয়া অনুভব করবে । অতঃপর তিনি বললেন, নিশ্চয়ই সামান সজ্জিত খচ্চরের ন্যায় দোযখে বিরাট বিরাট বিচ্ছু রহিয়াছে ।
কোন একটি বিচ্ছু দোযখের কাউকে দংশন করলে সে চল্লিশ বছর পর্যন্ত তার জ্বালা যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকবে । আহমেদ , মিশকাত ।
কুরআনে মজীদে আল্লাহতায়ালা বলেছেন,
"আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতিদানে শাস্তির পর শাস্তি বাড়িয়ে দেব । "
"নিশ্চয়ই কাফের - মুশরেকদের জন্য আমার কাছে আছে বেড়ি ও আগুনের কুন্ডলী আর গলায় আটকানো খাদ্য এবং জ্বালাময়ী শাস্তি । " সূরা মুজাম্মিল ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।