আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দোযখের ছোট খাট সংস্করণ

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

দোযখের ছোটখাট সংস্করণ ঢাকা তো টানবেই আমাকে। 28 বছরের সমৃতি। যতই উষ্মা প্রকাশ করি এ নব্য মফস্বলে আমি, ঢাকায় কত সজীবতার আড়ালে টুকরো টুকরো হয়ে বন্দী এই জীবন। ওখানেই মা বাবা, কত ভাই বোন, আর বন্ধু বান্ধব তো আছেই ছড়ানো ছিটানো। রমযান মাস , যে গাড়ীগুলোতে কক্সবাজারএ 1/2 দিন আগেও সিট খালি পাওয়া যায়না , সে বাসে আজ শূণ্য সিটগুলোর নিরব বিশ্রাম শীতল পরিবেশের কৃত্রিমতায়।

রাত 9টায় কক্সবাজার থেকে যাত্র শুরু করেছিলাম ঢাকার পথে। মাঝে ঘুমটা ভালই হয়েছিল। কখন চট্টগ্রাম পার হয়ে গেছে টেরই পাইনি। গতকাল রাতে যে ঘুমাইইনি। তার একটা রেশ তো আজ থাকবেই।

চৌদ্দগ্রাম , হাইওয়ের একত ঝলমলে রেষ্টুরেন্ট....হঠাৎ এক চেনা মুখ, আমারই এক ক্লাশ মেট, চিটাগং অনলাইনের সিইও। চট্টগ্রাম থেক ঢাকা যাচ্ছে অন্য বাসে। ভাল হলো গল্প সল্পে সেহেরীটা সমাপ্ত করা গেলো। 3:30 এর মত হবে সময় যখন পুনঃ শুরু হলো যাত্রা। পানি বোতাল টা দেখে ভাবলাম একটু পরে শেষ বারের মত খাব(পান করব)।

হলোনা। ঘুম আবার নিয়ে গেল ভুবনের বাইরে। হঠাৎ চোখ মেলেই দেখি নিথর , অনঢ় যেন বাস। সেটা কে জ্যাম বলা যাবে না। মহা মহাজ্যাম বলতে হবে।

কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থেকে ঢাকা ও যাত্রাবাড়ী পেঁৗছাতে 2:30 ঘন্টার বেশী লাগাটাই মহা অস্বভাবিক। সময় বয়েই যাচ্ছিল , শেষ হচ্ছিল না পথ। । ঘুম এর কাছে পরজিত না হয়ে উপায় ছিলনা। ডেমরা রোডের মাঝে একজায়গায় চোখ মেলে অচেনা অচেনা মনে হলো ভীষণ চারপাশ।

ঢিমতালে বাসের গতি আর দুলুনি বোঝা চিটাগং রোডের হাইওয়ে বাদ দিয়ে ডেমরার সরু এবং পুরাতন হাইওয়ে টা ধরে চলছে টুকটুক গতিতে বাস। যাত্রবাড়ীতে যখন পৌঁছালাম বাজে 8:30। 3 ঘন্টা লেট্ । এবং সত্যি যাত্রাবাড়ী নেমে দেখলাম চিটাগং রোড ,শনির আখড়া হতে পায়ে হেঁেট আসছে হাজার হাজার লোক..সম্ভবত অফিসে যাচ্ছে । রাতে তীব্র আন্দোলনে ফেঠে পড়েছিল অসহণীয় বিদ্যুৎ হীনতার যন্দ্রনায় ঢাকা বাসী।

তারই জের বন্ধ চিটাগং হাইওয়ে। একটু দূরেই ধোলইপাড় এর রাস্তায় দেখলাম পোড়া কংকাল একটা পিকআপ এর আর একটা সিএনজির। মনে হতে লাগল বেশ কদিন পরে দেখা ঢাকার সে সকালের পথে পথে নেমে ...আমি যেন এসে পেঁৗচেছি দোযখের কোন ছোট খাট সংস্করণে। বাসায় পেঁৗছে বুঝলাম। ভুল নয় সে ভাবনা।

বিদ্যুৎ থাকা টায় যেন চমক। না থাকাটা স্বাভাবিক। আব্বা এক কাজে মতিঝিলে পাঠালেন। কিতভাবে যাব কোন রোডে ভাবছিলাম। ভেবে লাভ হলো না।

হৃাঁটতেই হলো 2/3 কিমি। তারপর বাকীটুকু 35 টাকা রিকশা ভাড়ায় শত রিকোয়েস্টে। এদিকে 12 ঘন্টার জার্ণি ,পেটের পূজো বন্ধ রোযার কারণে, ক্লান্তি বাবাজী তো আসবেই। তার উপর চোখে আন্দোলনরত মানুষের কাতর অথচ হিংস্র চেহারা ভিন্ন মাত্রার দৃশ্য আনে পথে পথে। একটুঢাকা ভার্সিটি গেলাম মতিঝিলের কাজশেষে ;এরই মধ্যে জ্যামের যন্ত্রনা এবং রিকশা ওয়ালাদের হাই রেট ও হাই ডিমান্ড সহ্য করে।

। তারপর নিরিবিলি পথে কিছুক্ষণ একলা চলা কিছুক্ষণ দোকলা। ফিরতি পথে বাসায় সি এনজিকে থামতে হলো যাত্রাবাড়ী মোড়ে। আর যাওয়া যায়না। আন্দোলন।

বিদ্যুতের জণ্য এখনও সংগ্রাম। একটু আগের ঝম ঝম বৃষ্টির পরে কি করে রাজপথে টায়ার আর কাঠ এ আগুণ জ্বলে বুঝতে কষ্ট হলো। দোযখ বলেই হয়তো। ভাকছিলাম ঐ দূরে ওতগুলো লোকজনের হট্টগোল আর হুলেলার দেখে কোন দিক দিয়ে যাই বাসায় , দক্ষিন না পূর্ব। একটি আর্মির পাজেরো ধোলই পাড়ের দিকে যেতে গিয়ে ঘুরিয়ে উল্টো পথে দৌড়।

জনগণের সে কি উল্লাস , মুখে চিৎকার কারও নিরব কারও জোড়। সবাই মজা পেল আর্মিও গাড়ীও ভয় পায় দেখে। হঠাৎ কিছু বোঝার আগেই সে কি ভজঘট। বাতাসে ছোট বড় উটের টুকরো উড়ে উড়ে আসতে লাগল। চোখর নিমিষে দুতিনটা গাড়ীর চূর্ণ কাচ মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগল।

এরই নাম আন্দোলন। 10টাকার রিকশা ভাড়া দিতে হলো 20টাকা। বললাম কেন? আজকের জন্যই স্যার । শুধূ আজকের জন্যই। আন্দোলনের লাভ বুঝিনি।

ইফতারের সময় বিদ্যুৎ ছিলনা। ছিঠলনা রাতে সেহরীতেরও। খুব ভাল ঢাকায় এসে অন্ধকারে কৃত কর্ম সম্পাদনের সুন্দর মহড়া দিচ্ছি। শুনলাম এবং দেখলাম খবরে মিরপুর, কেরানীগঞ্জে আন্দোলন ছিল আরও ভায়াবহ। খবের দেখে আরও বুঝলাম এত সব আন্দেলনে যাদের টনক নড়ার কথাছিল তাদের টনক নড়েনি।

ফ্যাবিকলের আঠ দিয়ে ফিক্সড তাদের টনক। কেউ কেউ বলল রাজিৈনতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আচ্ছা আমি তো কোন দল করিনা। আমার বাসায় যে বিদ্যুৎ থাকনা । থাকে নিরব অন্ধকার।

খুবই ভয়ের কথা এখন যে দলই সরকারে থাকুক না কেন। । উদ্দেশ্য প্রণোদনের খাতিরে সবর্দাই যে তাহলে অন্ধকারে থাকতে হবে। ভয় পাচ্ছি দোযখের এ ছোট সংস্করণে ছুটির বাকী কদিন কিভাবে কাটাবো? আমার পরিচিত অপরিচিত আর সবাই এ ঢাকার কি করে সহ্য করনছেন দোযখের প্রাথমিক ধাপ গুলো...

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।