আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দোযখের ভয়াবহ শাস্তি এবং মহানবী (সাঃ) কর্তৃক সতর্কতা প্রদান ।

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল । যারা দোযখে যাবে তাদের কৃত কর্মের জন্য তাদের জন্য আল্লাহ পাক সেখানে ভয়াবহ সব শাস্তির ব্যবস্হা করে রেখেছেন । মানুষ তার দুষ্কর্ম অনুসারে সেখানে শাস্তির মাত্রা ভোগ করবে । ১. আবু হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের এই দুনিয়ার আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ মাত্র ।

সাহাবীদের পক্ষ থেকে বলা হলোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ ! এই আগুনই তো যথেষ্ট ছিলো । তিনি বললেনঃ জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার আগুনের তুলনায় উনশত্তরভাগ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । এর প্রতিটি মাত্রার তাপ দুনিয়ার আগুনের সমান । ২.নুমান ইবনে বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে লঘু শাস্তি হবে ঐ ব্যাক্তির, যার পায়ে একজোড়া আগুনের স্যান্ডেল ও ফিতা থাকবে । এগুলোর উত্তাপে তার মগজ এমন ভাবে টগবগ করতে থাকবে , যেমন চুলার উপর ডেকচি টগবগ করে ।

সে ধারণাও করবে না যে, অন্য কেউ তার চেয়ে অধিক শাস্তিতে জর্জরিত । অথচ সে হবে জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত । (বুখারী) ২. হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, কেয়ামতের দিন জাহান্নামের মধ্য থেকে এমন এক ব্যাক্তিকে উপস্হিত করা হবে যে দুনিয়ায় সবচেয়ে সুখী ছিলো । তারপর তাকে জাহান্নামের মধ্য থেকে একটি চুবুনি দিয়ে উঠিয়ে আনা হবে । তারপর তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, হে আদম সন্তান ! তুমি কি কখনও কল্যাণ ও সুখ দেখেছ ? তোমার উপর দিয়ে কি কখনও শান্তি ও সুখের দিন অতিবাহিত হয়েছে ? সে উত্তর দিয়ে বলবে, কখনও না , হে আল্লাহ ! তোমার কসম দিয়ে বলছি ।

জান্নাতীদের মধ্য থেকেও এমন এক ব্যক্তিকে উপস্হিত করা হবে, যে দুনিয়াতে সবচেয়ে কষ্টের জীবন কাটিয়ে ছিলো । তাকেও জান্নাতের একটি চুবুনি দিয়ে আনা হবে । তারপর তাকে জিজ্ঞেস করা হবে , হে আদম সন্তান ! তুমি কি কখনও দুঃখ কষ্ট দেখেছ ? তোমার উপর দিয়ে কি কখনও দুঃখ কষ্ট অতিক্রান্ত হয়েছে ? সে বলবেঃ না, হে আল্লাহ ! তোমার কসম দিয়ে বলছি যে, আমি কোন দুঃসময় দেখিনি এবং আমার উপর দিয়ে কখনো দুঃখ কষ্ট যায়নি । (মুসলিম) এই হাদিসের সারমর্ম এই যে, জাহান্নামের আযাব এত কঠিন যে, এর একটি মহূর্ত সারা জীবনের সুখ-শান্তির কথা ভুলিয়ে দিবে । আর জান্নাতে ঐ সুখ-শান্তি রয়েছে যে, সেখানে পা রাখতেই মানুষ তার সারা জীবনের দুঃখ কস্ট ভুলে যাবে ।

৩. সামুরা ইবনে জুন্দুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ জাহান্নামীদের মধ্য থেকে এমন কিছু লোক থাকবে, আগুন যাদের পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত স্পর্শ করবে, কিছু লোক এমন থাকবে যে, আগুন তাদের হাটু পর্যন্ত স্পর্শ করবে , আর কিছূ লোক এমন থাকবে যে, আগুন তাদের গলা পর্যন্ত স্পর্শ করবে । (মুসলিম) ৪. আবদুল্লাহ ইবনে হারেছ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ জাহান্নামে এমন সাপ রয়েছে, যেগুলো দেহাকৃতিতে বুখতী উটের মত বড় । এগুলো এমন বিষাক্ত যে, এর একটি কোন এক জাহান্নামীকে দংশন করলে চল্লিশ বছর পর্যন্ত সে এর বিষ যন্ত্রণা ভোগ করতে থাকবে । অনুরূপভাবে জাহান্নামে এমন বিচ্ছু রয়েছে যেগুলো পালন বাধা খচ্চরের ন্যায় বিরাটকায় । এগুলোও এমন বিষাক্ত যে, এর একটি কোন জাহান্নামীকে দর্শন করলে সে চল্লিশ বছর পর্যন্ত এর বিষ যন্ত্রণা ভোগ করতে থাকবে ।

(মুসনাদে আহমাদ ) ৫. হযরত নুমান ইবনে বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে সাবধান করে দিয়েছি , আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে সতর্ক করে দিয়েছি । তিনি এ বাক্যটি বার বার বলে যাচ্ছিলেন । বর্ণনাকারী সাহাবী নুমান ইবনে বশীর বলেনঃ তিনি যদি এ স্হানে থাকতেন , যেখানে এখন আমি রয়েছি এবং এখান থেকে বলতেন, তাহলে বাজারের লোকেরাও তার কথাটি শুনতে পেত । (আর এ কথাগুলো বলার সময় তিনি এমন আত্নবিস্মৃত হয়ে গিয়েছিলেন যে, ) তার গায়ের চাদরটি নিজের পায়ে পড়ে গেল । - (দারেমী) মহানবী (সাঃ) আমাদেরকে ঠিকই সতর্ক করে দিয়ে গেছেন এবং আল -কুরআনেও আল্লাহ পাক মানুষকে বারবার দোযখের আগুন থেকে বেচে থাকার জন্য সাবধান করে দিয়েছেন ।

কিন্তু আমরা এই ক্ষণস্হায়ী জীবন নিয়ে এতই মশগুল যে আমাদের দোযখের শাস্তির কথা মনে থাকেনা । মৃত্যু সবাইকে পাকড়াও করবে - কেউ বাচতে পারবেনা । তারপর সবাইকেই তার কৃত কর্মের ফল ভোগ করতে হবে । কেউ বাচতে পারবেনা । আল্লাহ আমাদের দোযখের আগুন থেকে হেফজত করুন ।

আমিন । সূত্রঃ মারেফূল হাদীস । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।