আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধারাবাহিক উপন্যাস উক্তি --পর্ব--০৪

৫৭/ যেদিন বুঝবে রূপটাও মানুষের ছায়া , মানুষ নয় – সেইদিনই শুধু ভালবাসার সন্ধান পাবে । ৫৮/ সন্তান – ধারণের জন্য যে সমস্ত লক্ষণ সবচেয়ে উপযোগী তাই নারীর রূপ । সমস্ত জগতের সাহিত্যে, কাব্যে এই বর্ণনা । এই বর্ণনাই , তাঁর রূপের বর্ণনা । এই জন্যই নারীর বাল্যরূপ যদি বা মানুষকে আকৃষ্ট করে তাকে মাতাল করে না ।

আবার যেদিন সে সন্তান – ধারণের বয়স পার হয়ে যায়, তখনও ঠিক তাই । শুধু নারী নয় পরুষের এই দশা । ততক্ষণই তার রূপ , যতক্ষণ সে সৃষ্ট করতে পারে । এই সৃষ্টি করবার ক্ষমতাই তাঁর রূপ – যৌবন , এই সৃষ্টি করবার ইচ্ছাই তারঁ প্রেম । ৫৯/ যে ভলবাসতে পারে , সেই কেবল সুন্দর অসুন্দর সব ভলবাসতেই নিজেকে ডুবিয়ে দিতে পারে ।

৬০/ যুবতীর রমণীর মন পাওয়া এক কিন্তু সে পাওয়া কাজে লাগানো ভিন্ন বস্তু । কারণ , পাওয়া যখন নর-নারীর নিভৃত ঋদয়ের গোপনে নিঃশব্দে সমপুর্ণ হইয়া উটঠিতে থাকে , বাহিরের সংসার তাহার সাড়া পায় না, কিন্তু যেদিন এই এই সংসারের সম্মতি না লইয়া আর এক পদও অগ্রসর হইবার উপায় থাকে না । এ পাওয়া যে কত কঠিন , এ রত্ন যে কত দুর্লভ, বাহিরের সংসার সে বিচারের দিক দিয়া যায় না – সে কেবল তাহার শাস্ত্র লইয়া , সমাজ লইয়া , লোকাচার লইয়া বিরুদ্ধস্বরে কলরব করে – এই শুধু তাহার কাজ । ৬১/ সুন্দর ফুল রূপ দিয়ে , গন্ধ দিয়ে , মধু দিয়ে মৌমাছি টেনে এনে ফলে পরিণত হয়, সেই ফল আবার ঠিক সময়ে মাটিতে পড়ে অঙ্কুরে পরিণত হয় – এই তার প্রকৃতি, এই তার প্রবৃত্তি, এই তার স্বর্গীয় প্রেম । ৬২/ অসাবধানে গাছ থেকে পড়ে হাত-পা ভাঙ্গার অপরাধ মাধ্যাকর্ষণের উপর চাপান , আর প্রেমকে কুৎসিত ঘৃণিত বলা সমান কথা ।

৬৩/ যে দেহে তার জন্ম , সেই দেহের মধ্যে যখন তার পরিণতির নির্দিষ্ট সীমা শেষ হয়ে যায় , তখন সেই তার যৌবন । ৬৪/ খুনের অপরাধে জজসাহেব যখন হতভাগ্যের প্রাণদন্ড করেন, তখন তিনি বিচারক , কিন্তু অপরাধীর অন্তরের দুর্বলতা অনুভব করে যখন তিনি দন্ড লঘু করেন , তখন তিনি কবি । ৬৫/ কবি যে শুধু সৃষ্টি করে তা নয় কবি সৃষ্টি রক্ষাও করে । যা স্বভাবতই সুন্দর, তাকে যেমন আরও সুন্দর করে প্রকাশ করা একটা কাজ , যা সুন্দর নয় , তাকেও অসুন্দরের হাত থেকে বাঁচিয়ে তোলা তারই আর একটা কাজ । ৬৬/ সাদা আলো যেমন বাঁকা কাঁচের মধ্যে রঙ্গিন হয়ে ওঠে , ন্যায়ও তেমনি অন্যায় , অধর্ম , পাপ, তাপের বাঁকা পথ দিয়ে দয়া , মায়া ক্ষমার বিচিত্র হয়ে দেখা দেয় ।

৬৮/ সুখই জীবের একমাত্র লক্ষ্য এবং আর সমস্ত উপলক্ষ । দয়া , ধর্ম,পূণ্য , এ সমস্তই উপলক্ষ্য । হয় ইহকালে নয় পরকালে , হয় নিজের, না হয় পাঁচজনের হয় স্বদেশের, না হয় বিদেশের – কি উপায়ে সে সুখের সমষ্টি বাড়াইয়া তুলিতে পারা যায় – ইহাই জীবের কর্ম এবং জানিয়া হোক , না জানিয়া হোক , এই চেষ্টতেই জীবের সমস্ত জীবন পরিপূর্ণ হইয়া থাকে , এবং এইটিই একমাত্র তুলাদন্ড, যাহাতে ফেলিয়া সমস্ত ভালমন্দ ওজন করিয়া দিতে পারা যায় । ৬৯/ যতদিন তুমি পরকালের কল্পনা, আত্তার কল্পনা, ঈশ্বরের কল্পনা, প্রভৃতি জঞ্জালগুলি মনের মধ্যে থেকে পরিস্কার করে ঝেটিয়ে না ফেলতে পারবে , ততদিন সংশয় তোমার থেকেই যাবে । সূখই যে জীবনের শেষ উদ্দেশ্য এবং সুখী হওয়াই যে জীবনের চরম সার্থকতা, এ কথা বুঝেও বুঝবে না ।

কেবলই মনে হতে থাকবে , কে জানে, হয়ত বা আরো কিছু আছে । অথচ এই আরো কিছুর সন্ধান কোনদিনই খুজে পাবে না । এ তোমাকে ব্যস্ত করে রাখবে অথচ গতি দেবে না , আকাঙ্কা জাগিয়ে তুলবে, কিন্তু পরিতৃপ্তি দেবে না । পথের গল্পই বলবে , কিন্তু কোনদিন পথ দেখিয়ে দিতে পারবেনা । আগের পর্ব গুলো নিচের লিঙ্কে দেখুন ।

Click This Link Click This Link Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।