আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবিরাজ বানানো পথে সামুরাই ও তার সরকার

দেশে হুজুগ উঠেছে মেডিকেল পরীক্ষা দেয়া হবেনা! খামাখা কি দরকার? GPA এর ভিত্তিতে ভর্তি করানো হোক। ১২ ক্লাসের পড়াশোনার মুল্যায়ন কি আর ১ ঘন্টার পরীক্ষায় চলে? যারা বলে চলে তারা হইল বেকুব, জাতির দুশমন! প্রশ্ন জাগে খোদ আমেরিকায় ডাক্তারী পরবার পরও লাইসেন্স পাবার জন্য USMLE পরীক্ষা নেবার কারণটা তাইলে কি? এতকষ্ট করে ওরা মেডিকেল স্কুল পাশ করল USMLE দেবার দরকারটা কি? এই যেমন ধরেন বাংলাদেশ থেকে আপনি MBBS পাশ করলেন। আপনার রেজাল্ট দেখে কি আমেরিকান সরকার চাকরী দেবে? আমেরিকা তো দূরে থাক বাংলাদেশ নিজেই দেয়না। একটা ডাক্তার ৫ বছর+১ কঠোর পরিশ্রম আর পড়াশোনা শেষে তাকে চাকরীর জন্য সাধারণজ্ঞান মুখস্ত করতে হয় BCS পরীক্ষায় টিকতে! কেন বাপু, এতই যখন দরদ তো পরীক্ষা নেও কেন? ইংরেজীতে A+ পাইলেও বাইরে যাইতে GRE/IELTS ইত্যাদি করতে হয়। এগুলার কি দরকার কি ছিল? মনে হইতেছে বিশ্বের সবাই বেকুব আর আমরা হইলাম চতুর! খেকশিয়াল! মূল ঘটনা হচ্ছে, যে লাইনে যেমন শিক্ষার্থী দরকার তা বাছাই করা হয় সেধরণের পরীক্ষার মাধ্যমে।

মেডিকেলে পড়বার জন্য প্রয়োজন ভাল মানের মুখস্তশক্তির। আপনি ক্যালকুলাস ভাল জানতে পারেন, কোন বিষয় পড়ে ভাল বুঝতে পারেন তবে এসব মেডিকেলের জন্য অর্থহীন। প্রফের টেবিলে এনাটমীর জাদরেল যখন ডিসেনডিং অ্যাওর্টার ব্রাঞ্চ আর কোর্স জিজ্ঞেস করবে তখন গুণে গুণে সবগুলো বলতে হবে আপনার বুঝার ভেলু হয়ে যাবে জিরো। এছাড়া ওষুধের নাম রোগের বিবরণ সবমিলিয়ে ভাল মানের মুখস্তবিদ্যা ছাড়া আপনার মেডিকেল লাইফ হবে তামাতামা। এজন্যই সাধারণত মেডিকেল পরীক্ষার প্রশ্নগুলো করাহয় খুটিয়ে।

কোনটি সত্য? কোনটি মিথ্যা? বইয়ের প্রত্যোকটি লাইন থেকে খুটিয়ে যাচাই করা হয় স্টুডেন্ট এর মুখস্ত ক্ষমতা কেমন। সেজন্য দেখা যায় সোনালী ৫ থাকার পরও অনেকে মেডিকেলে টিকতে পারেনা। একই ছাত্র হয়ত বুয়েট বা ভাল প্রতিষ্ঠানে টিকে যায়। মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা সবমিলিয়ে ভালই চলছিল। ১০০ মার্ক ছিল জিপিএ বাকী ১০০ মার্কের পরীক্ষা হত।

সবমিলিয়ে ২০০, দুটোরই সমন্বয়। সুন্দর নিয়ম। সরকারের মাথায় কোন ভূত চাপল আল্লাহ মালুক। আসলে SSC ও HSC এর পড়াশোনার সাথে মেডিকেলের কোন মিলই নাই। তাই SSC ও HSC এর জিপিএর ভিত্তিতে কিভাবে মেডিকেলের জন্য যোগ্য শিক্ষার্থী বাছাই করা সম্ভবত তা বোধগম্য নয়।

যেটা বোধগম্য তা হল ব্যবসা। কোচিং ব্যবসা বন্ধের জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হলে বাস্তবে যা হবে তা হল আজকের প্রাইমেট, রেটিনা, রয়েল হয়ে যাবে কালকের SSC, HSC কোচিং। প্রাকটিক্যাল মার্ক নেবার জন্য বাড়বে স্যারদের বাড়ি বাড়ি দৌড়ানো, জন্ম নেবে আরো কিছু পরিমল! এছাড়া এখন মেডিকেলের প্রশ্ন ফাস হয় তখন ফাঁস হবে SSC ও HSC এর প্রশ্ন। বাড়বে ক্ষমতার দৌড়ত্ব। শিক্ষাবোর্ড সরকারের ডাইরেক্ট তত্বাবধানে থাকে।

মন্ত্রি, মিনিষ্টার লবিং চালাবে ভর্তির জন্য। ফলাফলঃ বিসিএস পরীক্ষার মত মেডিকেল পরীক্ষাতেও দলীয়করণ, ঘুষ আর ক্ষমতার দাপট! পেক্ষাপটঃ যোগ্য মেধাবী নয়, মামা চাচার জোরে ভর্তি। আবার তাদের জোরেই মেডিকেল পাশ এবং সার্টিফাইড কবরেজ তৈরী। মন্তব্যঃ আসুন করবেজ তৈরীর এই প্রক্রিয়াকে উৎসহিত করি ফেসবুকে কর্ণেল সামুরাই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.