আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাহবাগের দেশপ্রেমিক ভাইয়েরা দয়া করে তোমাদের বিবেক তোমাদের কাছে রেখে দাও

শাহবাগের পোলাপাইন, প্রজন্ম চত্বরের পোলাপাইন, গনজাগরনের মঞ্চের পোলাপাইন তোমরা কি লেখ? আর লেইখ না ফেইসবুকে,  আর লেখনা টুইটারে, আর লেখনা টাম্বলারে, আর লেখনা গুগল প্লাসে । আর কোন সময় একটা ব্লগ লেখেনা । শাহবাগের হাজার হাজার পোলাপাইন সেই ৫ই ফেব্রুয়ারী,২০১৩ থেকে লেখতে লেখতে কাহীল হইতাছে তার উপর ব্লগার এরেষ্টের ভয় মাথায় লইয়া কত কষ্টে দিন রাত্র লেখেই যাচ্ছ । সমাজ সংসারের কিছুইতো বদলাইতে দেখলাম না । সাধারন মানুষের দৃষ্টিকোন সেটাও খুব একটা বদলাইতে দেখলাম না ।

  দেখলাম যারা আল্লাহু আকবর বলে সাড়া দিন জিকীর করে তারা কিভাবে সাধারন মুসলমানদের বিধমর্ী বানিয়ে দেয় ।  আজ আমাদের দেশে মুসলমানদের সংখ্যা ৭৫%-এর উপর কমে গেল । ২০১১ সালের আদম সুমারি(১৫,৮৫,৭০,৫৩৫) অনুযায়ী আমাদের দেশে মুসলমানের সংখ্যা ছিলো ১৪,১৯,০০,০০০ জন প্রায় । বর্তমান জন সংখ্যা ১৬,২০,০০,০০০ জন অনুযায়ী বর্তমানে আমাদের দেশে ১৪,৫০,০০,০০০ জন মুসলমান থাকার কথা । কিন্তু বিভিন্ন জনসভা থেকে যে ভাবে ঘোষনা করা হইতেছে তাতে করে মনে হয় না ১৪,৫০,০০,০০০ জন মুসলমান আমাদের দেশে এখনো আছে ।

যদি বিএনপির চেয়ারপার্সনের জনসভার হিসাব ধরি তবে বর্তমানে প্রায় ৮,১০,০০,০০০ জনের মত মুসলমান বাংলাদেশে থাকতে পারে । আর যদি হেফাজতের জনসভার হিসাব ধরি তাহলে বর্তমানে বাংলাদেশের মুসলমানের সংখ্যা কমে গিয়ে ৪,০৫,০০,০০০ জন থাকতে পারে । কোথায় ১৪,৫০,০০,০০০ জন আর কোথায় ৪,০৫,০০,০০০ জন । প্রায় ১০,৪৫,০০,০০০ জন মুসলমান এই দেশ থেকে কমে গেল ।   দেখেছিলাম কিভাবে একটি নারীকে রাস্তায় মঝখানে মারতে মারতে উল্লাস করে কিছু ইসলামিক পোষাক পরিহিত লোক আর বাকীরা সকলেই তামশা দেখে ।

প্রতিবাদের ভাষা রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে । ন্যায় অন্যায় বিবেচনা করার ভার কেহই নিজের কাছে রাখেনি । সবাই তাদের বিবেচনা যেন রাজনৈতিক নেতাদের হাতে তুলে দিয়েছে । নেতারা বলবে নাস্তীক, সবাই বলবে নাস্তীক । নেতারা বলবে নিরপেক্ষ হচ্ছে না সবাই বলবে নিরপেক্ষ হচ্ছে না ।

দেশ ঠিকই স্বাধীনতা পেয়েছে কিন্তু দেশের মানুষেরা স্বাধীনতা পায়নি । পায়নি মানে নিজের মতামত ব্যাক্ত করতে যেন ভয় পায় । এত সহজে আমরা উন্নতি করতে পারবো না বা পারতে দেয়া হবে না যতদিন না আইএসআই-এর টাকা এই দেশে আসা বন্ধ করতে না পারবে । সবই যেন টাকার খেলা । টাকার জন্য দেশের, দেশের মানুষের যে কোন ক্ষতি করতে রাজি থাকা রাজনীতিবিদের অভাব যেদিন হবে সেইদিন হয়তো সবই পরিবর্তন হতে থাকবে ।

এত দেশ ভক্ত রাজনীতির ভিড়ে দেশোদ্রহী রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের কোন দিনই অভাব হবে না । দেখলাম একটা মানুষ কিভাবে আরেকটা মানুষকে মাদ্রাসার ভিতরে নিয়া চাপাতি দিয়ে কোপাইতে কোপাইতে "আল্লাহু আকবার" স্লোগান দিতে দিতে মৃত্যু ঘটইতে পারে ।  সেই সকল ঘটনা পুনরায় ঘটাইবার জন্য রাজধানীতে জনসভা করিয়া রাজনৈতিক নেতা তার নিজের দলের কমর্ীদের অনুপ্রাণিত করতে নিজে উৎসাহ বোধ করেন । রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের নেতা কমর্ীদের বর্বরতায় ধংস করিতে নিজ দলের নেতা কমর্ীদের উৎসাহীত করার মধ্য দিয়ে কেমন রাজনৈতিক পরিকল্পনা, যে সকল নীতি গোপন কার্যকলাপে লিপ্ত অবস্থায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলি(আন্ডাগ্রাউন্ড পাটর্ি) সাধারনত করিয়া থাকে ।  জানিনা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের নেতা কমর্ীদের এমন নিঃসংশ ভাবে হত্যা করে কেমন রাজনীতির সূচনা করতে চায় আমাদের পরবর্তি সম্ভাব্য সরকারী দলের দাবীদার রাজনৈতীক দল ।

 দেশের মানুষদের বিবেচনা করতে হবে আরেকটা ১/১১ ধরনের সরকার তারা চায় কি চায় না । সূশীল সমাজ এমন কিছু চাইবে না তাতে কি হয়েছে? উনারাতো ধানমন্ডি, বারিধারা, গুলশান বনানীতে থাকেন । প্রয়োজনে ধানমন্ডি, বারিধারা, গুলশান বনানীর জন্য আলাদা একটা ১০০% গনতান্ত্রীক সরকার গঠণ করে নিলেই হয । বক্তব্য দেওয়ার সুবিধাথর্ে টেলিভিশন চ্যানেলের অফিসগুলি ওই সকল এলাকায়ই অবস্থিত আছে । তেমন কোন অসুবিধা হবে না ।

উনাদের ফরমূলা অনুযায়ী দেশের উন্নয়ন দিয়ে আমি মধ্যবৃত্তের কি অর্জন হতে পারে যদি দেশে মধ্যবৃত্ত মানুষগুলিকে এমন করে মরতে হয় । আমাদের কথা কে ভাববে ? মরতেছিতো আমরা । খবর নিয়ে দেখেন ফটিকছড়িতে যারা মারা গেছে তাদের একজনও আপনাদের ধানমন্ডি, বারিধারা, গুলশান বনানী এলাকা এবং আপনাদের শ্রেনীর কেউ নাই । সব মারা গেছে আমাদের শ্রেণীর । পরবতর্ি ১/১১ সরকারকে একটা অগ্রীম অনুরোধ জানাই ।

আপনারা দয়া করে খেয়াল রাখবেন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম যেন না বাড়ে । গত ১/১১ সরকারের শুধু এই একটি মাত্র বিষয় আমার হৃদয়ে দাগ কেটে আছে । সীমাহীন কষ্ট করেছিলাম । মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ভুলিবো না । টাকার অভাবে আমি পায়ে হেটে অফিসে যাওয়া আসা করতাম ।

যেই দিন শুনতাম বাসায় সোয়াবিন তেল লাগবে সেইদিন কয়েক জনের কাছ থেকে ধার দেনা করতাম । সপ্তাহে ১ দিন মাছ অথবা মাংস খেতে হয়েছে । বাকী ছয় দিন ডিম, শাক স্ববজি, আলু ভর্তা আর ডাল । মাঝে মধ্যে পটল/ঢেরস অথবা করল্লা ভাজীর আয়োজন হতো । কারন বাচ্চাদের পড়ালেখা বাদ দেওয়া যায় নাই ।

তার মধ্যে হঠাৎ করিয়া রিক্সা ভাড়া বাড়িয়া যাওয়াতে প্রতিদিন ৪০/৫০ টাকা বেশী খরচ হইয়া ছিল । সংসারে দৈনন্দিন খরচ হইতে সেদিন একটি টাকাও বাজারের পিছে অতিরিক্ত খরচ করিতে পারি নাই । প্রথম ৩/৪ মাস  ১/১১ সরকারের খুব প্রসংসা করেছি । তার পরের মাসগুলি যেন কাটতেই চাইছিলো না । রাজনীতিবিদরা জেলখানার ভিতরে তিনবেলা খেয়ে পড়ে সকলে ভালই ছিলেন ।

আমাদের কথা তাদের ভাবতে হয়নি । এখনো উনারা আমাদের কথা ভাবেন না ।  তাইতো ভাবছি আর না, অনেক হয়েছে । শাহবাগের বিবেকবান পোলাপাইন দয়া করে তোমাদের বিবেক তোমাদের কাছে রেখে দাও । পরবর্তিতে প্রয়োজন পড়লে তখন নাহয় দেশের জন্য খরচ করো ।

 আজকে থেকে আর লেখ না ।   বিঃদ্রঃ এখানে পোলাপাইন শব্দটি ভাইয়ের পরিবর্তে লেখিলাম । তাছাড়া আমি বয়সে একটু বড় বিধায় বারে বারে ভাই ভাই লেখতে আত্মসন্মানে আঘাত প্রাপ্ত হইয়াছিলাম । পোলাপাইনের পরিবর্তে অন্য কিছু লেখা যাইত কিন্তু তাদের নিজেদের লেখায় নিজেরাই পোনাপাইন শব্দটি ব্যাবহার করাতে আমি অন্য কোন কোন শব্দ ব্যাবহারে সাচ্ছন্দ বোধ করিলাম না ।  দূঃখিত ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।