আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাবিজ্ঞানী নিউটনের জীবনী -বিচিত্রা

স্যার আইজ্যাক নিউটন বিজ্ঞানের এক স্মরণীয় নাম। এই মহাবিজ্ঞানী নিউটন লোকটি কেমন ছিল সেটা জানবার আগ্রহ হওয়া খুব স্বাভাবিক। বড় বিজ্ঞানী যখন, তখন সহজেই মনে হবে লোকটি ছিলেন সাদাসিধা, ঢিলাঢালা স্বভাবের মানুষ, সাজ পোশাকে, চালচলনে আড়ম্বরের ধার ধারতেন না। নিউটন ছিল একেবারে আত্মভোলা মানুষ। তুখোড় বুদ্ধি,অঙ্কে অসাধারন মাথা কিন্তু সাংসারিক ব্যাপারে একেবারে বেমানান।

নিউটনের বয়স যখন চৌদ্দ তখন তার মা একবার টাকে স্কুল থেকে ছারিয়ে ক্ষেত খামার দেখাশনার কাজে লাগিয়ে দেন। প্রতি শনিবার গ্রান্টহাম শহরে হাট বসত। নিউটনের উপর ভার ছিল এই হাটে প্রতি শনিবার গিয়ে কেনা বেচা করতে হবে। নিউটনের ছিল প্রবল বই পড়ার নেশা। নিউটন করতেন কি, হাটে না গিয়ে পথে একটা পাহাড় পরত, স্পিটলগেট পাহাড়, তার অলায় একটা নিরিবিলি ঝোপের আড়ালে গিয়ে বই খুলে বস্তেন।

হাটে কেনা বেচা কাজের লোক করত। ফিরবার সময় সে নিউটন কে ডেকে নিয়ে যেত। সে আমলে যানবাহন বলতে ঘোড়ার প্রচলন ছিল বেশি। নিউটন ও দীর্ঘ পথ যেত ঘোড়া নিয়ে। একবার নিউটন ঘোড়া নিয়ে সেই স্পিটলগেট পাহাড় পার হচ্ছিলেন।

এবড়ো থেবড়ো পথে যেতে ঘোড়ার কষ্ট হচ্ছে দেখে সে ঘোড়া থেকে নেমে ঘোড়ার লাগাম হাতে ধরে চলতে লাগলেন। হাঁটতে হাঁটতে অঙ্ক নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিলেন। এক সময় পাহাড় পার হয়ে সমতল রাস্তায় চলে এলো নিউটন। তখন ভাবলেন ঘোড়ায় চরবেন। কিন্তু ঘোড়ার পিঠে চড়তে গিয়ে দেখেন কোথায় ঘোড়া! ঘোড়া কখন লাগাম খুলে পালিয়েছে, তিনি শুধু লাগাম টা ধরে এতটা পথ হেটেছেন।

তার পরিনত বয়সের একটা ঘটনা বলি। নিউটন তার এক বন্ধুকে নিমন্ত্রন করেছেন, তারপর সে কথা একদ ভুলে গেলেন। এদিকে নির্দিষ্ট সময় এ বন্ধু দাওয়াত খেতে এসে দেখে- কোথায় নিউটন, তার কোন পাত্তাই নেই। নিমন্ত্রন এর কোন আয়োজন ও নেই। বসে বসে শেষে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেলো তার।

কখন খাবার সময় হয়ে গেছে, খিদে তে পেট চো চো করছে। অবশেষে পা টিপে টিপে তিনি খাবার ঘরে ঢুকলেন। টেবিলের উপর খাবার ঢাকা দেয়া ছিল। একা নিউটনের খাবার। বন্ধু আর অপেক্ষা না করে সেই খাবার ই খেয়ে নিল।

তারপর তার মাথায় এক দুষ্ট বুদ্ধি এলো। তিনি উচ্ছিষ্ট হাড়- কাটা গুলো খাবারের প্লেটে সাজিয়ে রাখল। একটু পড়ে নিউটন এসে হাজির। বন্ধুকে দেখে বলল, আরে তুমি যে! কি ব্যাপার? নিমন্ত্রনের কথা নিউটন একদম ভুলে গেছে। কিছুখন কথা বার্তার পর নিউটন বলল, দাঁড়াও আমি খেয়ে নেই।

তুমি বরং বস। বন্ধু মনে মনে হেসে নিল। নিউটন আরাম করে বসে ,ঢাকনা খুলে খেতে গিয়ে দেখল কোথায় খাবার। শুধু হাড় গুলো পড়ে আছে। তিনি লজ্জা পেয়ে বললেন, দেখেছ কি ভুলো মন আমার।

আগেই খেয়েছি, কিন্তু সে কথা একদম ভুলে গেছি। নিউটনের বয়স যখন তেইশ বছর তখন বিয়ে করেন নি। কিন্তু তার এক দূর সম্পরকিয়া আত্মিয়াকে বিয়ে করার ইচ্ছা হয়েছিল। নিউটন বলি বলি করেও প্রস্তাবটা দিতে পারছিল না। শেষে একদিন ঠিক করলেন আজ প্রস্তাব দিয়েই ছাড়বেন।

দুজনে বেড়াতে বের হল। নিউটন তখন জটিল বিসয় নিয়ে গবেষণা করছিলেন। মেয়েটি কথা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করে বসলো, আপনার গবেষণা কদ্দুর এগুলো? ব্যস, আর নিউটন কে পায় কে! তিনি তখন ই শুরু করলেন তার বক্তৃতা। তার জটিল গবেষণা বুঝাতে শুরু করলো মেয়ে টিকে। নিউটনের মুখে যেন তখন খই ফুটছে।

হবে না কেন তার পছন্দের বিষয় সে পেয়ে গেছে। ওদিকে মেয়েটির অবস্থা বুঝুন! বিজ্ঞানের সে কোন ধার ই ধারে না। মেয়েটি প্রতি মুহূর্ত ভাবছে, এই বুঝি নিউটনের বক্তৃতা শেষ হবে। শেষ করে এইবার বিয়ের প্রস্তাব দিবে। কিন্তু নিউটন তখন ভাবের রাজ্যে ঘুরছে।

সে ততক্ষণে বিয়ের কথা একদম ভুলে গেছে। সেদিন আর প্রস্তাব দেয়া হল না। তার পরদিন ও না। তারপর বলি বলি করে আর কখনই বলা হল না। শেষে নিউটন আজীবন বিয়ে না করেই কাটিয়ে দিলেন।

নিউটন নাকি খুব কম হাসতেন অট্টহাসি তো নয় ই। একবার তিনি অট্টহাসি হেসেছিলেন। ঘটনাটা ছিল এরকমঃ নিউটন তার বন্ধু কে একটা বই পড়তে দিলেন। বললেন, পড়ে দেখ, এমন চমৎকার বই তুমি আগে কখনো পড়নি। আসলে বইটা ছিল একটা জ্যামিতির বই ।

বন্ধু বই নিয়ে চলে গেলো, কিন্তু দুই দিন পরেই সেটা ফেরত নিয়ে এলো। বাহ! এর মধ্যেই পড়ে ফেললে। টা কেমন লাগলো বই ? হাসি মুখে প্রশ্ন করলো নিউটন। বন্ধু ঠোট আর নাক কুঁচকে জানাল- বইটির মধ্যে তিনি কোন রস ই খুঁজে পান নি। অর্থাৎ বইটি ভাল লাগে নি।

বল কি!!!জ্যামিতি তোমার ভাল লাগে নি?? ঘর কাপিয়ে অট্টহাসি তে ফেটে পড়লেন নিউটন। মনে হল এমন অবশাস্য কথা তিনি জীবনেও শনেন নি। লোকে বলে নিউটন নাকি ওই একদিন ই অট্টহাসি হেসেছিলেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।