আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহাবী সুহাইব বিন সিনান আর রুমিঃ লক্ষ-কোটি টাকার সম্পদ ছেড়েছি আল্লাহর জন্য

নাম-সুআইব, কুনিয়াত বা ডাকনাম আবু ইয়াহইয়া। পিতা সিনান, মাতা সালমা বিনতু কাঈদ। পিতা আরবের বনী নুমাইর এবং মাতা বনী তামীম খান্দানের সন্তান। তাকে রুমী বা রোমবাসী বলা হয়। আসলে তিনি কিন্তু রোমবাসী ছিলেন না।

তিনি ছিলেন একজন আরব। রাসূলুলাহর (সাঃ) নবুয়াত প্রাপ্তির আনুমানিক দু’দশক পূর্বে পারস্য সাম্রাটের প্রতিনিধি হিসাবে তার পিতা সিনান ইবন মালি বসরার এক প্রাচীন শহর উবুল্লার শাসক ছিলেন। সুআইব ছিলেন পিতার প্রিয়তম সন্তান। তার মা সুআইবকে সাথে করে আরো কিছু লোক লস্করসহ একবার ইরাকে সানিয়্যা নামের এক পল্লীতে বেড়াতে যান। হঠাৎ এক রাতে রোমান বাহিনী অতর্কিতে পল্লীটির ওপর আক্রমণ করে ব্যাপক হত্যা ও সুটতরাজ চালায়।

নারী ও শিশুদের বন্দী করে দাস ও দাসীতে পরিণত করে। বন্দীদের মধ্যে শিশু সুআইবও ছিলেন। তখন তার বয়স পাঁচ বছরের বেশী হবে না। সুআইবকে রোমের এক দাস বিক্রয়ের বাজারে বিক্রি করা হলো। তিনি এক মনিবের হাত থেকে অন্য মনিবের হাতে গেলেন ক্রমাগতভাবে।

তৎকালীন রোম সমাজে দাসদের ভাগ্যে এমনিই ঘটতো। এভাবে ভেতর থেকেই রোমান সমাজের গভীরে প্রবেশ করার এবং সেই সমাজের অভ্যন্তরে সংঘটিত অশ্লীলতা ও পাপাচার কাছ থেকে দেখার সুযোগ তিনি লাভ করেন। সুআইব রোমের ভূমিতে লালিত পালিত হয়ে যৌবনে পর্দাপন করেন। তিনি আরবী ভাষা ভুলে যান অথবা ভুলে যাওয়ার কাছাকাছি পৌঁছেন। তবে তিনি যে মরু আরবের সন্তান, এ কথাটি এক দিনের জন্যও ভুলেননি।

সর্বদা তিনি প্রহর গুনতেন, কবে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হবেন এবং আরবে নিজ গোত্রের সাথে মিলিত হবেন। তার এ আগ্রহ প্রবলতর হয়ে ওঠে সেদিন, যেদিন তিনি এক খৃষ্টান কাহিনের (ভবিষ্যদ্বক্তা) মুখে শুনতে পেলেন সে সময় সমাগত যখন জাযীরাতুল আরবের মক্কায় একজন নবী আবির্ভূত হবেন। তিনি ঈসা ইবন মরিয়মের রিসালাতকে সত্যায়িত করবেন এবং মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসবেন। সুআইব সুযোগের প্রতীক্ষায় থাকলেন। সুযোগ এসেও গেল।

একদিন মনিবের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে মক্কায় চলে এলেন। মক্কায় তিনি বিশিষ্ট কুরাইশ নেতা আবদুল্লাহ ইবন জুদআ’নের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তার সাথে যৌথভাবে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করেন। ব্যবসায় তারা দারুণ সাফল্য লাভ করেন। অবশ্য অন্য একটি বর্ণনা মতে আরবের ধনী কালব তাকে খরীদ করে মক্কায় নিয়ে আসে। আবদুল্লাহ ইবন জুদআন তাদের নিকট থেকে তাকে খরীদ করে আযাদ করে দেন।

সুআইব মক্কায় তার কারবার ও ব্যবসা বাণিজ্যের হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও এক মুহুর্তের জন্য সেই খৃষ্টান কাহিনের ভবিষ্যদ্বানীর কথা ভুলেননি। সে কথা স্মরণ হলেই মনে মনে বলতেন- তা কবে হবে? আল্লাহর ইচ্ছায় এভাবে অবশ্য তাকে বেশী দিন কাটাতে হয়নি। একদিন তিনি এক সফর থেকে ফিরে এসে শুনতে পেলেন, মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ নবুওয়াত লাভ করেছেন। মানুষকে তিনি এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার জন্য আহবান জানাচ্ছেন। তাদেরকে আদল ও ইহসানের প্রতি উৎসাহিত করেছেন এবং অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন।

সুআইব মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করলেন, “যাঁকে আল আমীন বলা হয় ইনি কি সেই ব্যক্তি”? লোকেরা বললো, “হ্যাঁ”। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর বাসস্থান কোথায়? বলা হলো, “সাফা পাহাড়ের কাছে আল-আরকাম ইবন আবিল আরকামের বাড়ীতে তিনি থাকেন। তবে সর্তক থেকো কুরাইশদের কেউ যেন তোমাকে তাঁর কাছে দেখে না ফেলে। যদি তারা মুহাম্মদের কাছে তোমাকে দেখতে পায়, তোমার সাথে তেমন আচরণই করবে যেমনটি তারা আমাদের সাথে করে থাকে। তুমি একজন ভিনদেশী মানুষ, তোমাকে রক্ষা করার কেউ এখানে নেই।

তোমার গোত্র গোষ্ঠীও এখানে নেই”। সুআইব চললেন দারুল আরকামের দিকে অত্যন্ত সন্তর্পনে। আরকামের বাড়ীর দারজায় পৌঁছে দেখতে পেলেন সেখানে আম্মার বিন ইয়াসির দাঁড়িয়ে। আগেই তাঁর সাথে পরিচয় ছিল। একটু ইতস্ততঃ করে তাঁর দিকে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আম্মার তুমি এখানে”? আম্মার পাল্টা জিজ্ঞেস করলেন, “বরং তুমিই বল, কি জন্য এসেছো?” সুআইব বললেন, “আমি এই লোকটির কাছে যেতে চাই, তাঁর কিছু কথা শুনতে চাই”।

আম্মার বললেন, “আমারও উদ্দেশ্য তাই”। সুআইব বললেন, “চলো, তাহলে আমরা আল্লাহর নাম নিয়ে ঢুকে পড়ি”। দুজনে এক সাথে রাসুলুল্লাহর (সাঃ) কাছে পৌঁছে তাঁর কথা শুনলেন। তাঁদের অন্তর ঈমামের নূরে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো। দুজনেই এক সাথে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে কালেমা শাহাদাত পাঠ করলেন।

সেদিনটি তাঁরা রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সাহচর্যে থেকে তাঁর উপদেশপূর্ণ বাণী শ্রবণ করলেন। গভীর রাতে মানুষের শোরগোল থেমে গেলে তাঁরা চুপে চুপে অন্ধকারে সেখান থেকে বেরিয়ে নিজ নিজ আস্তানার দিকে রওনা দিলেন। হযরত সুহাইবের পূর্বে তিরিশেরও বেশী সাহাবী ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের অধিকাংশ কুরাইশদের ভয়ে নিজেদের ইসলাম গ্রহণের কথা গোপন রেখেছিলেন। সুআইব যদিও বিদেশী ছিলেন, মক্কায় তাঁর কোন আত্মীয় বন্ধু ছিল না, তা সত্বেও তিনি তাঁর ইসলাম গ্রহণের কথা গোপন রাখলেন না।

তিনি তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা করে দিলেন। বিলাল, আম্মার, সুমাইয়্যা, খাব্বাব প্রমুখের ন্যায় তিনিও কুরইশদের নিষ্ঠুর অত্যাচারের শিকারে পরিণত হলেন। অত্যন্ত ধৈর্য্যের সাথে সকল নির্যাতন সহ্য করতে থাকেন। তিনি জানতেন, জান্নাতের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন হিজরাতের সংকল্প করলেন, সুআইব তা অবগত হলেন।

তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, তিনিই হবেন সালেসু সালাসা-তিনজনের তৃতীয় জন। অর্থাৎ রাসূল (সাঃ) আবু বকর ও সুআইব। কিন্তু কুরাইশদের সচেতন পাহারার কারণে তা হয়নি। কুরাইশরা তাঁর পিছু লেগে ছিল, যাতে তিনি তাঁর বিপুল ধন-সম্পদ নিয়ে মক্কা থেকে সরে যেতে না পারেন। রাসূলুল্লাহর (সাঃ) হিজরতের পর সুআইব সুযোগের অপেক্ষায় থাকলেন।

কুরাইশরাও তাকে চোখের আড়াল হতে দেয় না। অবশেষে তিনি এক কৌশলের আশ্রয় নিলেন। এক প্রচন্ড শীতের রাতে বার বার তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ীর বাইরে যেতে লাগলেন। একবার যেয়ে আসতে না আসতে আবার যেতে লাগলেন। কুরাইশ পাহারাদাররা বলা বলি করলো, লাত ও উযযা তার পেট খারাপ করেছে।

তারা কিছুটা আত্মতৃপ্তি বোধ করলো এবং বাড়ীতে ফিরে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লো। এই সুযোগ সুআইব বাড়ী থেকে বের হয়ে মদীনার পথ ধরলেন। সুআইব মক্কা থেকে বেরিয়ে কিছু দূর যেতে না যেতেই পাহারাদাররা বিষয়টি জেনে ফেললো। তারা তাড়াতাড়ি দ্রুতগতি সম্পন্ন ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে তাঁর পিছু ধাওয়া করলো। সুআইব তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে একটি উচু টিলার ওপর উঠে তীর ও ধনুক বের করে তাদেরকে সম্বোধন করে বলেন, “কুরাইশ স¤প্রদায়! তোমরা জান, আমি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক চৌকশ তীরন্দায ও নিশানবায ব্যক্তি।

আল্লাহর শপথ, আমার কাছে যতগুলি তীর আছে, তার প্রত্যেকটি দিয়ে তোমাদের এক একজন করে খতম না করা পর্যন্ত তোমরা আমার কাছে পৌঁছতে পারবে না। তারপর আমার তরবারি তো আছেই। কুরাইশদের একজন বললোঃ “আল্লাহর কসম! তুমি জীবনও বাঁচাবে এবং অর্থ-সম্পদও নিয়ে যাবে তা আমরা হতে দেব না। তুমি মক্কায় এসেছিলে শূন্য হাতে। এখানে এসেই এসব ধন-সম্পদের মালিক হয়েছো”।

সুআইব বললেন, “আমি যদি আমার ধন-সম্পদ তোমাদের হাতে তুলে দেই, তোমরা কি আমার রাস্তা ছেড়ে দেবে?” তারা বললো, “হ্যাঁ”। সুআইব তাদেরকে সংগে করে মক্কায় তাঁর বাড়ীতে নিয়ে গেলেন এবং সকল ধন-সম্পদ তাদের হাতে তুলে দিলেন। এবার কুরাইশরা তাঁর পথ ছেড়ে দিল। এভাবে সুআইব দ্বীনের খাতিরে সবকিছু ত্যাগ করে মদীনায় চলে এলেন। পেছনে ফেলে আসা কষ্টোপার্জিত ধন-সম্পদের জন্য তিনি একটুও কাতর হননি।

পথে যখনই তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন, রাসূলের (সাঃ) সাথে সাক্ষাতের কথা স্মরণ হতেই সব ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে আবার যাত্রা শুরু করেন। এভাবে তিনি কুবায় পৌঁছেন। রাসূল (সাঃ) তখন কুলসুম ইবন হিদামের বাড়ীতে। রাসূল (সাঃ) তাঁকে আসতে দেখে উৎফুল্ল হয়ে বলে ওঠেন, “আবু ইয়াহইয়া, ব্যবসা লাভজনক হয়েছে”। তিন বার তিনি একথাটি বলেন।

সুআইব মুখমন্ডল আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনি বলে ওঠেন, আল্লাহর কসম, ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমার আগে তো আপনার কাছে আর কেউ আসেনি। নিশ্চয়ই জিবরীল এ খবর আপনাকে দিয়েছেন”। সত্যিই ব্যবসাটি লাভজনকই হয়েছিল। একথার সমর্থনে জিবরীলর (আঃ) ওহী নিয়ে হাজির হলেন, “ওয়া মিনান নাসে মান ইয়াশরী নাফসাহু ইবতিগা মারদাতিল্লাহ।

ওয়াল্লাহু রাউফুম বিল ইবাদ (কিছু মানুষ এমনও আছে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের জীবনও বিক্রি করে দেয়। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান)”। হযরত সুআইব মদীনায় সাদ ইবন খুসাইমার অতিথি হন এবং হারিস ইবনুস সাম্মা আল-আনসারীর সাথে তাঁর ভ্রাতৃ-সম্পর্ক কায়েম হয়। হযরত সুআইব ছিলেন দক্ষ তীরন্দায। বদর, উহুদ, খন্দকসহ সকল যুদ্ধে তিনি রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সহযাত্রী ছিলেন।

বৃদ্ধ বয়সে জন সমাবেশে তিনি এসব যুদ্ধ বিগ্রহের কাহিনী চিত্তাকর্ষক ভঙ্গিতে বর্ণনা করতেন। রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সাহচর্য সম্পর্কে তিনি নিজেই বলতেন, “রাসূলুল্লাহর (সাঃ) প্রতিটি দৃশ্য, প্রতিটি ভূমিকায় আমি উপস্থিত থেকেছি। তিনি যখনই কোন বাইয়াত গ্রহণ করছেন, আমি উপস্থিত থেকেছি। তাঁর ছোট ছোট অভিযান গুলিতে আমি অংশগ্রহণ করেছি। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যত যুদ্ধ তিনি করেছেন তার প্রত্যেকটিতে আমি তাঁর ডানে অথবা বামে অবস্থান করে যুদ্ধ করেছি।

মুসলিমরা যতবার এবং যেখানেই পেছনের অথবা সামনের শত্র“র ভয়ে ভীত হয়েছে, আমি সব সময় তাদের সাথে থেকেছি। রাসূলুল্লাহকে (সাঃ) কক্ষনো আমার নিজের ও শত্র“র মাঝখানে হতে দিইনি। এভাবে রাসূল (সাঃ) তাঁর প্রভুর সান্যিধ্যে চলে গেছেন”। (রিজালুন হাওলার রাসূল-১৩০) হযরত সুআইব সম্পর্কে হযরত উমারের (রাঃ) অত্যন্ত সুধারণা ছিল। তিনি তাকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন।

মৃত্যুর পূর্বে তিনি অসীয়াত করে যান, সুআইব তাঁর জানাযার ইমামতি করবেন। শুরার সদস্যবৃন্দ যতক্ষণ নতুন খলীফার নাম ঘোষণা না করবেন, তিনিই খিলাফতের দায়িত্ব পালন করতে থাকবেন। হযরত উমারের (রাঃ) মৃত্যুর পর তিন দিন পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। হিজরী ৩৮ সনে ৭২ বছর বয়সে তিনি মদীনায় ইনতিকাল করেন। মদীনার বাকী গোরস্তানে তাঁকে দাফন করা হয়।

হযরত সুআইব (রাঃ) জীবনের বিরাট এক অংশ রাসূলে পাকের সাহচার্যে কাটানোর সুযোগ লাভ করেছিলেন। তিনি বলতেনঃ “ওহী নাযিলের পূর্ব থেকেই রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সুহবত লাভের সৌভাগ্য আমার হয়েছিল”। একারণে সকল সৎ-গুনাবলীর সমাবেশ তাঁর মধ্যে ঘটেছিল। সচ্চরিত্রতা, আত্ম মর্যাদা বোধের সাথে সাথে উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা, হাস্য কৌতুক ইত্যাদি গুণাবলী তাঁর চরিত্রকে আরও মাধুর্য্য দান করেছিল। তিনি ছিলেন অতিথি পরায়ণ ও দানশীল।

গরীব দুঃখীর প্রতি ছিলেন দরাজহস্ত। মাঝে মাঝে মানুষের ধারণা হতো, তিনি দারুণ অমিতব্যয়ী। একবার হযরত উমার (রাঃ) তাঁকে বলেন, “তোমার কথা আমার ভালো লাগে না। কারণ প্রথমতঃ তোমার কুনিয়াত আবু ইয়াহিইয়া এই নামে একজন নবী ছিলেন। আর এ নামে তোমার কোন সন্তান নেই।

দ্বিতীয়তঃ তুমি বড় অমিতব্যয়ী। তৃতীয়তঃ তুমি নিজেকে একজন আরব বলে দাবী কর”। জবাবে তিনি বলেন, “এই কুনিয়াত আমি নিজে গ্রহণ করিনি, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নির্বাচিত। দ্বিতীয়তঃ অমিতব্যয়িতা। আমার এ কাজের ভিত্তি হলো, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণী- ‘যারা মানুষকে অন্নদান করে এবং সালামের জবাব দেয় তারাই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।

তৃতীয় অভিযোগটির জবাব হলো, প্রকৃতই আমি একজন আরব সন্তান। শৈশবে রোমবাসী আমাকে লুট করে নিয়ে যায়, আমাকে আমার গোত্র থেকে বিচ্ছিন্ন করে দাসে পরিণত করে, এ-কারণে আমি আমার গোত্র ও খান্দানকে ভুলে যাই”। হযরত সুহাইবের দৈহিক গঠন ছিল মধ্যমাকৃতির। না লম্বা না খাটো। চেহারা উজ্জ্বল, মাথার চুল ঘন।

বার্ধক্যে মেহেদির খিযাব লাগাতেন। জিহবায় কিছুটা জড়তা ও তোতলামী ছিল। তবে মানুষ হিসাবে তাঁর মতো দৃঢ়, সচ্চরিত্রবান ও আমানতদার লোক মানব ইতিহাসেই হয়তো খুব কম এসেছে। সূত্রঃ আসহাবে রাসুলের জীবনকথাঃ ডঃ আবদুল মা'বুদ সাহাবীদের জীবনীঃ তালাবুল হাশিমি ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.