আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘবসতিপূর্ণ দেশ আসলে না!!!এর চেয়ে আর আছে!!!

আমরা অনেকেই জেনে আসছি নগর রাষ্ট্রগুলো বাদে বাংলাদেশ ই নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে ঘণবসতিপূর্ণ দেশ। পেপার এও অনেক বার পড়েছি যে জাপান বাংলাদেশের আয়তনে দিগুন, লোকসংখ্যা বাংলাদেশের কম আর কত কি। কিন্তু আমরা কি জানি যে বাংলাদেশের লোকসংখ্যা আসলেই বেশি হলেও আমাদের হতাশ হবার উপায় নেই কারন পৃথিবীর যেসব দেশের কথা আমরা নিজেদের সাথে তুলনা করি তাদের জন ঘনত্ত আমাদের চেয়ে কম তো না বরং বেশি। কি করে !???? জনসংখ্যার ঘনত্ত দুই ভাবে হিসাব হয়- ১। population density ২।

real population density ১ নং টি হল দেশের মোত আয়তন দিয়ে মোট জনবল কে ভাগ করা আর দুই নং টি হল শুধু আবাদযোগ্য জমির পরিমান দিয়ে ভাগ করা। আমরা জানি একটি দেশে শুধু বাড়িঘর,রাস্তাঘাট,স্কুল,হাস্পাতাল, ইন্ডাস্ট্রী করতে অত বেশী জমি প্রয়োজন হয়না। আমাদের বাংলাদেশেও আমরা দেখি শহরগুলা গিজগিজ করলেও গ্রামাঞ্চলে বাড়িঘর কি কলকারখানার জমির অভাব কখোনই তেমন হয়না যদিও মানুষ করতেও চায়না। আসল জমির অভাব টা হল চাষের জমির কারণ বিশাল বাড়ন্ত মানুষের খাদ্যচাহিদা মেটানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর এই দুই নং টা হল (real population density)শুধু আবাদি জমির পরিমান কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করা।

এক্ষেত্রে অনাবাদি,অনুর্বর মরু এলাকা, পাথুরে অঞ্চল, লবনাক্ত প্লাবন ভুমি,জলাশয় হিসাবে আসবেনা। যেমন বাংলাদেশের উপকূলীয় লবনাক্ত জমি, নদী, হাওড় ও অনুর্বর জমি বাদে বাংলাদেশের আয়তন ৭৪০০০ কিমি। মোট ভূখনড কিন্তু ১৪৫০০০ কিমি। আমরা জানি বাংলাদেশ অতি উর্বর দেশ। এই কারণেই মানুষ প্রাচীঙ্কাল থেকেই এইদেশে বাণের মত মাইগ্রেট করেছে।

উদাহারন আমাদের চেয়ে প্রায় ১৪গুন বড় সৌদি আরব এ জনসংখ্যা আমাদের ৮ ভাগের ১ ভাগ হলেও অদের চাষযোগ্য জমি নাই বললেই চলে। আবার পাকিস্তানের আয়তন আমাদের প্রায় আমাদের ৫গুণের বেশি হলেও ওদের আবাদি জমি আমাদের মাত্র আড়াই গুণ। কারন আমাদের বাংলাদেশের আবাদি জমির পরিমান মোট ভুখন্ডের শতকরা ৫৬% কিন্তু পাকিস্তানে মাত্র ২৪%। আবার শ্রীলঙ্কার আয়তন বাংলাদেশের অর্ধেক হলেও ওদের আবাদি জমি আমাদের ৮ ভাগের ও কম কারন ওদের শতকরা ১৪% আবাদযোগ্য। আশ্চর্যের কথা হল,মিডল ইস্টের দেশগুলা প্রায় অনাবাদি হলেও ওদের তেলসম্পদ এর কারনে তাদের অর্থনীতি অনেক মজবুত।

তবে এমন অনেক দেশ আছে যাদের অর্থনীতি খনিজসম্পদের উপর নয় বরং শিল্পের উপর গড়ে উঠেছে এবং তাদের উন্নয়নের মূল ভিত্তি ছিল কৃষি। এখনো তারা বিপুল খাদ্যচাহিদার অধিকাংশ নিজ উতপাদনেই মেটায়। উদাহারন জাপান, সাউথ কোরিয়া। বাংলাদেশের মোট আবাদি জমির পরিমান ১৪৫০০০ কিমি। আবাদি জমি ৫৬% হিসাবে মোট জমি ৭৪০০০কিমি।

তাই বাংলাদেশের population density ১০৭৮ হলেও real population density ১৯৪৬। সাউথ কোরিয়ার আয়তন বাংলাদেশের ৩ ভাগের দুই ভাগ হলেও আবাদি জমি মাত্র ১৬'৫৮% তাই population density ৫০০ হলেও real population density প্রায় ৩০০০। বাংলাদেশের দেড়্গুন। জাপান বাংলাদেশের আড়াইগুন বড় হবার পরেও আবাদি জমি মাত্র ১১'৬০% হয়ায় মোট আবাদি জমি মাত্র বাংলাদেশের অর্ধেকের একটু বেশি। তাই population density ৩৪০ real population density ৩০০০।

শুধু তাই নয়,real population density বাংলাদেশের চেয়ে বেশি আর অনেক এমন উন্নত দেশ আছে যারা পেট্রোডলার এর দেশ গুলার মত খাদ্য আমদানী করে নয় বরং নিজেদের প্রয়োজনের বেশিরভাগ খাদ্য নিজেরাই উতপাদন করে। এদের মাঝে আছে শ্রী লংকা নেদারল্যান্ড, কলম্বিয়া বাংলাদেশের মতই বা তার একটু কম real population density আছে এমন কয়েকটি উন্নত দেশ- সুইজারল্যান্ড ফিলিপিন্স মালয়শিয়া। real population density এর উইকি র‌্যাঙ্কিংটা পড়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন। Click This Link) কাজেই আমাদের জনসংখাকে বোঝা মনে করে আগেই হতাশ হয়ে যাবার কোন কারন নেই বরং এই জমিই সঠিক ভাবে কাজে লাগালে আফ্রিকার জমি লিজ নেয়া তো দূরে থাক নিজের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। আর শিল্পের উন্নতির দিকে বেশি জোর দেয়া যাবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.