আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উগ্র ধর্মান্ধদের কবলে নারী সমাজ

খুব জানতে ইচ্ছে করে...তুমি কি সেই আগের মতনই আছো নাকি অনেকখানি বদলে গেছো... উগ্র ধর্মান্ধদের কবলে নারী সমাজ হাসান কামরুল বহুলাংশে বাংলাদেশ এগিয়েছে। নারীর কর্ম বিস্তৃতি ঘটেছে । নারীরা এখন অর্থনীতির চালিকা শক্তি। এখন আর সেইদিন নেই যে নারী মানেই ঘরের কোনে বন্দি জীবনযাপন করবে। বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নারীরা নিজস্ব কর্মস্পৃহায় জাতি বির্নিমাণে অগ্রনী ভূমিকা রাখছে ।

নারীর চলার পথ কখনই নির্বিঘœ ছিলনা। একটা মহল নারীর চলার পথকে স্তিমিত করে দিতে বদ্ধ পরিকর । দেশের দুই প্রধান দলের কান্ডারি নারী হওয়া সত্ত্বেও যখন নারীর উপর আক্রমন আসে তখন নারীর চলার পথ যে মসৃন নয় তা আরো স্পষ্ট হয়। সম্প্রতি উগ্র ইসলামিক দল নারীর পায়ে শিকল পড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এরা কারা? যারা দেশকে আফগানিস্তান বা পাকিস্তান বানাতে চায়, যারা গত বিএনপির আমলে ইসলামের নামে জঙ্গি কার্যক্রমে জনমনে ভীত সৃষ্টি করেছিল।

যাদের অঙ্গুলির ইশারায় বাঙলা ভাইয়ের উ্খান হয়েছিল। তারা আজও থেমে নেই। Click This Link হেফাজতে ইসলাম নামের যে রাজনৈতিক দলটি ত¦রিৎ উখান । তার পিছনে কারা, কারা মদদ দিচ্ছে তা সকলেরই জানা। জামাত রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসায় পড়াতে জামাতের মদদে হেফাজতে ইসলাম ফ্রন্টলাইনে উঠে আসে।

১৮ দলীয় জোটের প্রণয়নকৃত নীলনকশায় হেফাজতে ইসলাম এখন রাজনীতির সর্বাগ্রে। তারা ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের কথা বলে, নারীদের ঘরের বাইরে বের হতে পারবেনা, নারীরা সংসারধর্ম ছাড়া অন্যকোন কর্ম করতে পারবেনা, নারীরা স্বাবলম্বী হলে বে’দাত হবে! যার উৎকৃষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে হেফাজতের লংমার্চের দিন একুশে টেলিভিশনের নারী সাংবাদিক নাদিয়া শারমীনের উপর আক্রমনের মধ্য দিয়ে। এ আক্রমনের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলাম মুলত শাহবাগের নারী আন্দোলনকারীদের উপর একটা শোধ নিল। কারণ শাহবাগ জাগরণে নারীদের অগ্রনী ভূমিকা রেখেছে। শাহবাগ জাগরন যেভাবে ’৭১ এ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণে ঝাপিয়ে পড়েছে তাতে মোল্লাদের পিলে চমকে গেছে।

কারণ দু:খজনক হলেও সত্য ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে এদেশের মানুষের উপর যে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে তারা সবায় জা’মাতে ইসলামের সদস্য। কেউ তখন ছাত্র সংঘের হয়ে কাজ করেছে, কেউ আবার জামা’তে ইসলামের পক্ষ নিয়ে রাজাকার আলবদর আলশামস বাহিনী গঠন করেছে। তখন জামাতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ইসলামের লেবাশ ধারণ করে মা বোনদের ইজ্জতে আঘাত হেনেছে। এখনকার সময়ে এসে জা’মাত ও তার মিত্ররা যখন দেখলো ’৭১ এ তাদের ঘৃন্য কৃতকর্মের সাজা হচ্ছে তাই সুকৌশলে আমার দেশ, নয়াদিগন্ত ও দিগন্ত টেলিভিশনের মতো কিছু মিডিয়ার কারসাজিতে ব্লগারদের বিরুদ্ধে রাসুল (সা) কে অবমাননার অভিযোগ উখাপন করা হলো। আর তাতে তারা সফলও হলো।

ধর্মীয় উসকানিতে দেশের ধর্মভীরু মানুষদের মনে বিষ ঢেলে দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারে বাধা সৃষ্টির সকল কলা কৌশল এখনো চলমান রয়েছে। ক্রমাগত ধর্মকে ব্যবহার করে এ স্বার্থন্বেষি মহল রাজনীতিতে চরম অ¯িহরতার জন্ম দিয়েছে। শান্তিপুর্ণ অসহিংস শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে স্বয়ং বিরোধি দলীয় নেতার বক্তব্যও ছিল সামাঞ্জ্যহীন। রাজনীতির কুন্ডলি দিন দিন প্যাচিয়ে জামাত পর্দার অন্তরালে থেকে হেফাজতে ইসলামকে হৃষ্টপুষ্ট করে তোলে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলো সরকারের গোয়েন্দাসেলের কাছে হেফাজতের কর্মকান্ড নিয়ে কোন তথ্যই ছিলনা।

আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান চট্রগ্রামের হাটহাজারিতে হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে বলে পত্রিকায় ছবিসহ খবর বের হয়েছে। আজ থেকে কিছুদিন আগেও হেফাজতের নাম মানুষ জানতোনা। তারা কিভাবে কাদের প্রশয়ে এতো অল্পসময়ে এতো মোটাতাজা হলো তা ভেবে দেখা দরকার। কিন্তু সরকার নিজেদের ইমান আমল ও আকীদা প্রমাণ করতে গিয়ে হেফাজতের আন্দোলনকে মৌন সমর্থন দিলো। হেফাজতের লংমার্চকে অহিংস আন্দোলন বললেও কিন্তু সেটা অহিংস ছিলনা।

বিভিন্নস্হানে হেফাজতের কর্মীরা মারপিঠ ভাংচুর করেছে। নারী সাংবাদিক পিটিয়েছে, সাংবাদিকদের ক্যামরা ছিনিয়ে নিয়েছে । জামাত নিষিদ্ধের যে দাবি উঠছে, তাতে যদি আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে জামাত সত্যি সত্যি নিষিদ্ধ হয় । তবে জামাতের বর্তমান কার্যক্রম বিলুপ্ত হয়ে হেফাজতে ইসলামের মধ্যে পুরো জামাত ঢুকে যাবে একথা আগাম বলে রাখা যায়। হেফাজতের লংমার্চে ইসলামি ব্যাংক অর্থায়ন করেছে বলে সংবাদ বেরিয়েছে।

যদি তাই হয় তাহলে জামাতের মর্ডান ভার্সন হচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। মতিঝিলে লংমার্চের অনুমতি নিয়ে সরকারকে অনেকে দুই নৌকায় পা দিয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছে দেশের বিশিষ্টজনেরা। হেফাজতের আমীর কটুক্তি করে বলেছেন যদি সেদিন সরকার লংমার্চের অনুমতি না দিত তাহলে সারাদেশে কয়েকহাজার দ্বীনি ইসলামি শহীদ হতো। কিন্তু এই যে শহীদ হওয়ার সঞ্ছা নির্ধারণ করা হয়েছে তা থেকে উত্তোরনের উপায় কি। প্রধান বিরোধিদল ¯্রফে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ধর্মীয় অন্ধঅনুকরদের উস্কে দিচ্ছেনা তো।

যদি তাই হয় তবে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ দিন। আমাদের হাতের কাছেই উদাহরণ আছে, আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের যাপিত জীবন দেখেও কি আমাদের স্বাদ মেটেনা এসব ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদীরা মানুষের জীবনকে কতোটা ভয়ানক করে তোলতে পারে । হাসান কামরুল: কলামলেখক। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.