আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সানডে লেকচার (১৪ এপ্রিল ২০১৩ ইং)

স্বাগতম Pearls of Wisdom Lectured by Prodip Dowa, Country Director of World Concern Bangladesh কিন্তু তুমি যা শিখেছ এবং নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করেছ তাতে স্থির থাক, কারন কাদের কাছ থেকে তুমি সেগুলো শিখেছ তা তো তুমি জান। ছেলেবেলা থেকে তুমি পবিত্র কিতাব থেকে শিক্ষা লাভ করেছ। আর এই পাক-কিতাবই তোমাকে যীশু খ্রিস্টের উপর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে নাজাত পাবার জ্ঞান দিতে পারে। পবিত্র শাস্থের প্রতিটি কথা ইশ্বরের কাছ থেকে এসেছে এবং তা শিক্ষা, চেতনা দান সংশোধন এবং সৎ জীবনে গড়ে উঠবার জন্য দরকারী, যাতে ইশ্বরের দাস সম্পুর্নভাবে উপযুক্ত হয়ে ভাল কাজ করবার জন্য প্রস্তুত হতে পারে। (২ তীমথিয় ৩: ১৪-১৭) সবাইকে খ্রীস্টিয় শুভেচ্ছা।

আজ বাংলা নববর্ষ তাই গীর্জা ঘরে যুবক-তরুন-তরুনীদের উপস্থিতি কম দেখা যাচ্ছে তবুও গীর্জা প্রায় পরিপুর্ন হয়ে গেছে। আমি প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যে গান করবার সময় আমি কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম। এটা আমার ঔদ্যত্ত নয়, বয়স বেশি হয় নি তবুও মাঝে মাঝে নিজের অজান্তে গভীর ভাবনায় তলিয়ে যাই। আমি প্রফেশনাল লেকচারার নই, ভাল প্রচার করতেও পারি না কিন্তু ইশ্বরের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেলকে আমি আমার জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে সবর্দা সতেষ্ট। আজ পশ্চিমা বিশ্ব- আমেরিকা, ইউরোপ, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মানুষরা বাইবেলের শিক্ষা থেকে অনেক দুরে সরে এসেছে।

কিছুদিন আগে ব্রিটেনের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার মারা গেলেন, তাকে লৌহ মানবী বলা হয়; তিনি বলেছিলেন; ব্রিটেন প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বাইবেলের ভিত্তিতে। পলিটিক্যাল ইনফ্রাকশ্চার একটি দেশের জন্য যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন বাইবেলের শিক্ষা। জর্জ ওয়াশিংটন যে আমেরিকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার পিছনে ছিল বাইবেলীয় শক্তি। জর্জ ওয়াশিংটন মিকাহ চার অধ্যায়ের চার পদের উপর ভিত্তি করে আমেরিকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন; প্রত্যেকে নিজের নিজের আংগুর লতা ও ডুমুর গাছের নীচে বসবে এবং কেউ তাদের ভয় দেখাবে না, কারন স্বয়ং ইশ্বর সেই কথা বলেছেন। আমেরিকার যে মুদ্রা, ডলারের উপরে লেকা আছে; ইউ ট্রাষ্ট ইন গড কিন্তু আজকে আমেরিকার বিশ পার্সেন্ট মানুষ গিজার্য় যায়, ইউরোপে পাচ পাসের্ন্ট এবং অস্ট্রেলিয়ায় পনের পাসের্ন্ট।

আমেরিকায় প্রায় প্রতিটি রাস্তায় রাস্তায়, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাথিড্রাল দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু সেখানের অনেকগুলিতেই উপাসনা হয় না, খালি পড়ে আছে। মানুষ যায় দর্শনার্থী হিসেবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাথিড্রাল দেখতে পাওয়া যায় এর কারন কি? কারন প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ স্থাপন করেছিলেন প্যাস্টর, প্রিস্ট আর খ্রীস্টিয় সাধু-পন্ডিতরা। পৃথিবীর আজকের বিজ্ঞান কাদের হাত ধরে এসেছে? এই খ্রিষ্টানদের হাত ধরে। বিজ্ঞান সাহিত্য।

কিন্তু আজকের বিশ্ববিদ্যালগুলির ছাত্র-ছাত্রীরা কেন গীর্জায় যায় না কারন সেখানে আজ কিছু পন্ডিতদের আগমন ঘটেছে তারা দেখল বাইবেলীয় শিক্ষা অনুসারে চলতে গেলে ইচ্ছামত যা খুশী করা যায় না তাই তারা দাবী করল- স্বাধীনতা, যা খুশি করার স্বাধীনতা আর বলা হল বাইবেল পুরোনো শিক্ষা। যার ফলে ওইসব সমাজ গুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে বিশৃঙ্খলা আর অশান্তি। পরিবারে শান্তি নেই, বিয়ের কিছুদিন পরই অনেক দম্পতির ডিভোর্স হয়ে যাচ্ছে, সমকামী বিয়ে হচ্ছে। কারন তাদের মধ্যে যীশু খ্রিস্টের শিক্ষা নেই। আর সেই সুযোগ নিচ্ছে মুসলমানরা।

আমি একবার ফ্রান্সে গিয়েছিলাম সেখানে অনেক উচু পাহাড়ের উপরে একটা গির্জা নিমার্ন করা হয়েছে, খুব আকষর্নীয় বটে কিন্তু দু:খের বিষয় সেই গির্জায় প্রাথর্না হয় না তবে একটা জিনিস ভাল লেগেছিল, সেখানে প্রাথর্না না হলেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দর্শনার্থী হয়ে সেখানে যায়। পাহাড়ের উপরে যীশুখ্রিস্টের বিশাল এক ছবি সাটানো হয়েছে যেন তার শরীর দিয়ে সাদা আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে ঠিক যেন মেঘের রথে করে তার দ্বিতীয় আগমনের মত। অনেকে সেখানে মোম জ্বালিয়ে ইশ্বরের কাছে ধন্যবাদ জানায়, প্রাথর্না করে। আমিও মোমবাতি কিনে জ্বালিয়ে কিছুক্ষন প্রার্থনা করলাম, ইশ্বরকে ধন্যবাদ দিলাম। আমি প্রায়ই আমেরিকা, ইউরোপ ভ্রমনে যাই, এছাড়াও বহুদেশ আমি ভ্রমন করেছি।

একবার বিখ্যাত একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু মুসলমান ছাত্র-ছাত্রী আমাকে বলল; ক্যান উই গিভ ইউ এ ফ্রি কপি অফ কোরান? আমি বললাম; ধন্যবাদ, অলরেডী ওটা আমার কাছে এক কপি আছে, আমি অনুবাদসহ পড়েছি। চীনে যখন কমিউনিজম আসল তখন সমস্ত গির্জা বন্ধ করে দেওয়া হল, প্রিস্টদের মারধর করা হল। তাদের জীবন যাত্রার স্বভাবিক গতিপথ বন্ধ করে দেওয়া হল। অনেককে মেরেও ফেলা হল। খ্রিস্টধর্ম উৎখাতের সব রকম চেষ্টা করা হয়েছিল চীন ও রাশিয়ায়।

চীনে যখন কমিউনিজম আসে তখন চীনে খ্রিষ্টান বিশ্বাসীর সংখ্যা ছিল এক লাখ এর মত, আর পঞ্চাশ বছর পরে যখন সেই গোড়া কমিউনিজম চলে গেল- আজকে চীনে খ্রিষ্টান বিশ্বাসীর সংখ্যা এক কোটির বেশী। এই প্রচার বন্ধ হবার নয় কারন এটা ইশ্বরের বানী, এটা সত্য। মুসলমানরা বলে বেড়ায়; খ্রিস্টানরা তাদের সুবিধা মত বাইবেল পরিবর্তন করেছে। কি যায় আসে তাদের কথায়? আমরা জানি এটা সত্য এবং ইশ্বরের বাক্য অপরিবর্তনীয়। সুতরাং অত্যাচার-নিযার্তন আর কুৎসা রটনায় কখনো যীশু খ্রিস্টের প্রচার থেমে থাকে নি বরঞ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যারা প্রিস্ট, প্যাসটর আছেন তারা তাদের লেকচারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুন ছাত্র-ছাত্রীদের মুগ্ধ করতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে; তোমরা এমবিএ, মাস্টার্স, পিএইচডি করেছ তাতে কি? আমরাও কম জানি না। তারা যেন বুঝতে পারে এখানেও শেখার কিছু আছে। আজকের শিক্ষিত তরুন-তরুনীরা গির্জায় আসতে চায় না। তারা যেন জানার আগ্রহ নিয়ে গীর্জায় আসে সেভাবে নিজেদের তৈরী করতে হবে।

শুধু প্রচারের জন্য প্রচার নয়। সত্যিকারে ইশ্বরের রাজ্যের জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের প্রয়োজন নহিরমিয়ার মতো লিডার। যে নহিরমিয়া শহরের ধ্বংসস্থুপ দেখে কাদলেন। তিনি ইশ্বরের কাছে প্রাথর্না করলেন; হে ইশ্বর আমাকে বাদশার সামনে যাবার শক্তি দাও, বাদশার মন নরম করে দাও সে যেন আমার কথা, আমার পরিকল্পনাগুলি শ্রবণ করে এবং সেইমত কাজ করে।

রোমীয় বারো অধ্যায়ের এক এবং দুই পদে বলা হয়েছে; তাহলে ভাইয়েরা, ইশ্বরের এই সব দয়ার জন্যই আমি তোমাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, তোমরা তোমাদের শরীরকে জীবিত, পবিত্র ও ইশ্বরের গ্রহনযোগ্য কোরবানী হিসাবে ইশ্বরের হাতে তুলে দাও। সেটাই হবে তোমাদের উপযুক্ত এবাদত। এখানকার খারাপ দুনিয়ার চালচলনের মধ্যে তোমরা নিজেদের ডুবিয়ে দিও না, বরং ইশ্বরকে তোমাদের মনকে নতুন করে গড়ে তুলতে দিয়ে সম্পুর্ন নতুন হয়ে ওঠো, যেন তোমরা ইশ্বরের ইচ্ছা জানতে পার। ইশ্বরের ইচ্ছা ভাল, সম্পুর্ন নিভুর্ল এবং তাতে ইশ্বর সন্তুষ্ট হন। আমিন।

হে আমাদের স্বগীর্য় পিতা, তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক। তোমার রাজ্য আসুক। তোমার ইচ্ছা যেমন বেহেশতে তেমনি দুনিয়াতেও পুর্ন হোক। যে খাবার আমাদের দরকার তা আজ আমাদের দাও। যারা আমাদের উপর অন্যায় করে, আমরা যেমন তাদের মাফ করেছি তেমনি তুমিও আমাদের সমস্ত অন্যায় মাফ কর।

আমাদের তুমি পরীক্ষায় পড়তে দিয়ো না, বরং শয়তানের হাত থেকে রক্ষা কর। আমিন। (মুনাজাতঃ মথি ৬:৯-১৩) বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সানডে লেকচার (Pearls of Wisdom) ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ইং লেকচারার: প্রদীপ দাওয়া কান্ট্রি ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড কনসার্ন মেম্বার, খ্রিস্টান ফেলোশিপ সোসাইটি Again, the kingdom of heaven is like unto a merchant man, seeking goodly pearls: Who, when he had found one pearl of great price, went and sold all that he had, and bought it. — Matthew 13:45-46 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.