আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বীরাঙ্গনার শুটিং ও নায়িকা সংবাদ

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই এক মুঠো চলচ্চিত্র একটি অভিনয় স্কুল ও টিভি প্রোডাকশন হাউজ। আমাদের এই প্রোডাকশন হাউজ থেকে নির্মিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক বীরাঙ্গনা। এই নাটকের বীরাঙ্গনা চরিত্রটি করার জন্য প্রথমে নির্ধারণ করা হল টিভি অভিনেত্রী ফারজানা ছবিকে। তার বিপরীতে নেয়া হল টিভি অভিনেতা লিটু আনামকে। কিন্তু সিডিউল নিয়ে ঘাপলা লেগে গেল।

ফারজানা ছবি সিডিউল দিতে পারেন ১০ ও ১১ জুলাই। আর লিটু সিডিউল দিতে পারেন ১৭ ও ১৮ জুলাই। আমরা ভেবে দেখলাম, পরের সিডিউলটাই আমাদের কাজের জন্য সুবিধা। ফলে বাদ দিতে হল ফারজানা ছবিকে। এবার আমাদের প্রধান সহকারী পরিচালক সৈকত মিথুন যোগাযোগ করলেন দীপা খন্দকারের সঙ্গে।

তিনি সিডিউল দিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেলেন। আমরা যোগাযোগ করলাম টিভি অভিনেত্রী নোভার সঙ্গে। তিনি সিডিউল দিলেন। ১৭ জুলাই শুটিং শুরু ।

কিন্তু ১৬ জুলাই বিকেল ৫ টায় সংবাদ এল নোভা পুবাইলে শুটিং করতে গিয়ে পা ভেঙ্গে ফেলেছেন। নোভার পক্ষে অভিনয় করা সম্ভব না। প্রধান সহকারী পরিচালক সৈকত মিথুন বললেন শুটিং বাদ দিয়ে দিতে। আমি রাজি হলাম না। আমি বললাম, যে কোন মূল্যে আমাদের নায়িকা খুঁজে পেতে হবে এবং সেটা আজ রাতের মধ্যেই।

সেই সাথে এও বললাম, এই ঘটনাটি যেন আমাদের টিমের কেউ না জানে। মিথুন কাজে নেমে গেল। আমিও বসে থাকলাম না। আমার বন্ধু টিভি পরিচালক বাবলু ও সাঈদ তারেককে ফোন দিলাম। তারা জানাল, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে জানাবে।

ঘণ্টাখানেক পরে বাবলু জানাল, অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ সিডিউল দিতে পারবে। আমি বললাম, তাড়াতাড়ি কনফার্ম কর। কিন্তু পরের বার ফোন দিয়ে বাবলু জানাল, তানিয়া অভিনয় করছে না। কারণ লোকেশন ঢাকার বাইরে। উনি ঢাকার বাইরে আপাতত যেতে চান না।

আবারও খোঁজ আর খোঁজ। কিন্তু সময় গড়িয়ে যাচ্ছে কারো সিডিউল পাওয়া যাচ্ছে না। সন্ধ্যার পর আমি আর মিথুন ঘুরে ঘুরে কিছু প্রপস কিনছি এবং ফাকে ফাকে মিথুন নানা জনের সঙ্গে ফোনে কথা বলছে। আমিও বাবলুর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। এভাবে ফোনে কথা বলতে বলতে রাত ৯টা বেজে গেল।

আমাদের দুজনের তখন টেনশনে জ্বর আসার অবস্থা। মিথুন শহীদুজ্জামান সেলিমের সহকারী পরিচালক রোকন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছিল। তিনি আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছিলেন, একটা ব্যবস্থা হবে। আমিও বাবলুর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। বাবলু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে, একটা ব্যবস্থা হবে।

ইচ্ছে ছিল, কাল ভোর থেকে শুটিং শুরু বলে আজ একটু আগে ঘুমাতে যাব, সেটা আর হল না। আমরা দুইজন গিয়ে বসলাম শহীদ মিনার চত্বরে। ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি যদি শেষ মুহূর্তে শুটিং বাদ দিতে হয়, তবে সবাইকে এসএমএস করে জানিয়ে মোবাইল বন্ধ করে ঘুমাতে যাব। রাত ১১টা পর রোকন ভাইয়ের কাছ থেকে একটা আশ্বাস পাওয়া গেল, সম্ভবত স্বাগতা সিডিউল দিতে পারে। কিন্তু বিষয়টা কনফার্ম করতে সময় লাগবে।

বাবলুও আমাকে ফোন করে জানাল, স্বাগতার সিডিউল পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কনফার্ম করতে সময় লাগবে। আমরা অপেক্ষায় বসে রইলাম শহীদ মিনার চত্বরে। টেনশনে মাথা দিয়ে ধুয়া বেরুচ্ছে। রাত ১২টা দিকে মিথুনের ফোন বেজে উঠল।

রোকন ভাই জানাল, স্বাগতা রাজি হয়েছে। মিথুন যেন স্বাগতার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি কনফার্ম করে। মিথুন স্বাগতার নাম্বারে কল দিল। স্বাগতা কস্টিউমসহ পুরো বিষয়টি বুঝে নিয়ে রাজি হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর বাবলুও আমার নাম্বারে ফোন করে জানাল স্বাগতা রাজি হয়েছে।

আমাদের টেনশন নেমে গেল। আমরা নিশ্চিন্ত মনে সে রাতে ঘুমাতে গেলাম। ততক্ষণে ঘড়ির কাঁটা রাত সাড়ে বারোটা পেরিয়ে গেছে। অবশেষে নায়িকা সংকট সমাধান হওয়ায় আমরা ১৭ ও ১৮ জুলাই শুটিং করতে পারলাম। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক বীরাঙ্গনার শুটিং হল সোনারগাঁর পানাম নগরীতে।

শেষ পর্যন্ত বীরাঙ্গনা চরিত্রটিতে অভিনয় করলেন স্বাগতা। এবার শুটিং এর কিছু ছবি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।