আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাচাল সমাচার

সম্প্রতি এ টি এন বাংলা চ্যানাল এর মাহফুজ সাহেব মন্তব্য করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা "বাচাল"। মাহফুজ সাহেব এর এই বক্তব্যের ফলাফল হিসেবে নাকি ১০ টি পৃথক মামলা হয়েছে। সেই মামলা কোর্ট এ গিয়েছে এবং আজকের পত্রিকাতে দেখলাম মাহফুজ সাহেব বলেছেন যে তিনি নাকি আসলে বাচাল বলতে নিজেকে বুঝাতে চেয়েছিলেন। ঘটনা যাই হোক। এখানে কিছু কথা না বললেই না।

১। বক্তব্যের সত্যতা আছে কিনা তা তর্ক সাপেক্ষ। কিন্তু মাহফুজ সাহেব যদি বলেও থাকেন তার জন্য মামলা হবে কেন? আমাদের বাক স্বাধীনতা বাংলাদেশ এর সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত একটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশ সংবিধান এর আর্টকেল ৩৯ এ এই অধিকার দেয়া হয়েছে। কেন শেখ হাসিনার বাচালতার সমালচনা করা যাবে না? পৃথিবীর সকল সভ্য দেশ এ রাস্ট্রপ্রধান এর সমালচনা হয়।

সমালচনা করা এবং সহ্য করতে পারা গনতন্ত্রেরই একটি মুল বিষয়। আমেরিকা বা ইয়রোপ রাস্ট্রপ্রধানদের নিয়ে হেন ফাজলেমি নেই যা করা হয় না। কেউ যদি শেখ হাসিনা কে বাচাল বলতে না পারে তবে সে যানবে কেমনে? আমরা কি একটি পুলিশি স্টেট এ বাস করি? নাকি গনতন্ত্রে বাস করি? এই প্রশ্ন কোর্ট এর কাছে। ২। ধরুন শেখ হাসিনা না হয়ে যদি অন্য কাউকে বাচাল বলা হত? ধরুন জনৈক গোল্লা মিয়া কে বাচাল বলা হল।

গোল্লা মিয়া কি কেস করতে পারতেন? কোর্ট কি সেই কেস নিত? সেই কেস এর বিচাল কার্য কি ১ সপ্তাহের মধ্যে শুরু হত? উত্তর আমরা সবাই জানি। হত না। শেখ হাসিনা, বা সাংসদ রা কেন সাধারন মানুষ এর চেয়ে বেশি সুজোগ সুবিধা ভোগ করবে। আমাদের সংবিধান তো তা বলে না। রাষ্ট্রের চোখে এবং রাষ্ট্রের আঈনের চোখে সকল মানুষ এর সমান অধিকার থাকার কথা।

কোথায় সেই অধিকার? শেখ হাসিনার মান ইজ্জত কি আমার আপনার চেয়ে বেশি? কেন বেশি? সাংসদরা কেন শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনে? আমরা কেন পাই না? এটা কি অসাংবিধানিক নয়? আমাদের আওয়ামি লিগ এবং বি এন পি এর সাংসদরা কোন কিছু তে একমত হতে পারে না শুধু এই শুল্কমুক্ত গাড়ির ব্যাপার এ দলমত নির্বিশেষে সবাই একমত। তাদের লজ্জাও করে না। শেখ হাসিনা কে বাচাল বলাতে সাধারন মানুষ নাকি সপ্রনদিত হয়ে মামলা করেছে। এই অসাংবিধানিক শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা নিয়ে কেন কেউ মামলা করে না। করলে কি কোর্ট কেস নিবে? ৩।

সাংবাদিকরা নাকি দেশ এর আয়না। জীবন ধারনের ব্যাস্ততায় সাধারন মানুষ সরকার/ বিরোধীদল এর যেসব সিনা চুরি খেয়াল করতে পারে না, তা নিয়ে তিব্র সমালচনা করে জন সম্মুক্ষে এনে দেয়া সাংবাদিক দের দায়ীত্বের মধ্যে পরে। উপরোক্ত দুটি বিষয় নিয়ে কোন সাংবাদিক এর কলম চলতে কি কেউ এখন পর্যন্ত দেখেছেন? কোন সাংবাদিক কি প্রশ্ন করেছে যে বাক স্বাধিনতা কেন হরন করা হচ্ছে? কেউ কি জিজ্ঞাসা করেছে যে সাধারন মানুষ এর চেয়ে শেখ হাসিনা তথা সাংসদ দের মু্ল্য বেশি কেন? না তারা তা করেনি, কারণ তারা একই দোষ এর দোষী। সাগর-রুনি ২ জন এর মৃত্যু তাদের কাছে যত বড়, প্রতি বছর রকেট, লঞ্চ ডুবে শত শত লোক মারা যায় তা তাদের কাছে তত বড় নয়। তাদের কাছে একজন সাংবাদিক এর জীবন এর মূল্য একজন সাধারন মানুষ এর জীবন এর মু্ল্যের চেয়ে অনেক বেশি।

শেখ হাসিনা নিজেকে "গনতন্ত্রের মানসকন্যা" বলে দাবি করে। কিন্তু সামান্য সমালচনা সহ্য করার ক্ষমতা তার নেই। ব্যাপারটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য জনক। কেউ যদি ভেবে থাকেন যে উপরের কথা গুলি সুধু আওয়ামি লিগ এর জন্য প্রযোয্য তবে তিনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বি এন পির সময় ও আমরা কিন্তু একি ধরনের কেস দেখেছি।

সাধারন মানুষ এর অধিকার সাধারন মানুষকেই নিশ্চিত করতে হেব। সেই দিন কবে আসবে? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.