আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘আমরা তো বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ভিক্ষা নিচ্ছি না’

আমি সেই নক্ষত্রের অপেক্ষায় থাকব চিরকাল সত্যিই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি ফোনে কথা বলেছেন নাগরিকদের অনেকেই। মোবাইল ফোনে কল করা মাত্রই ভেসে এসেছে চিরপরিচিত সেই কন্ঠস্বর। হ্যা,আমি প্রধানমন্ত্রী বলছি....। পদ্মাসেতু দুর্নীতি,বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ চুক্তি স্থগিত করা এবং আবুল হোসেনকে মন্ত্রনালয় থেকে সরিয়ে দেয়াসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সংবাদ কর্মীদের সাথেও সরাসরি কথা বলেছেন তিনি। পদ্মা সেতু নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এও বলেছেন , ‘আমরাতো বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ভিক্ষা নিচ্ছি না’।

ভয়,আনন্দ আর বিষ্ময়ে হতবাক কলাররা। নিজের কানকেও যেন বিশ্বাস করা যায়না। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই কথা! নাগরিকরা ভাবতেই পারেননি এমনটি। দেশের প্রধানমন্ত্রী সিডিউল,প্রটোকল,আবেদন,নিবেদন এসব না মেনেই নাগরিকদের সাথে সরাসরি কথা বলবেন টেলিফোনে! আর তারা অকপটে বলে যাবেন তাদের কষ্ট,প্রত্যাশা,প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির সব কথা। তবে এমনটি ঘটেছে বৃহস্পতি ও শুক্রবার।

মোবাইল ফোনে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছেন নাগরিকরা। জানিয়েছেন নানা কথা। কেউ সাহস দিয়েছেন, কেউ এগিয়ে যেতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন,সারা দেশের মানুষই আমার আপনজন। জনগণই আমাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছে।

আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা। আমার আর জনগণের মধ্যে কোনও পর্দা নেই। সুযোগ থাকলে আমি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে ছুটে যেতাম। তাদের কথা শুনতাম। সূত্রমতে প্রধানমন্ত্রীকে যারা ফোন করেছেন এ তালিকায় রাজনীতিবিদ,সংবাদকর্মী,আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীও রয়েছেন।

মানব জমিনের কাজল ঘোষ কথা বলেছেন তার সাথে। সকালের খবরের একজন সংবাদকর্মী কথা বলার চেষ্টা করেও সফল হননি। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ ইমেইল করেছেন। কাজল ঘোষ প্রথমেই প্রশ্ন করেন,আপনার সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল , পদ্মা সেতু নির্মাণ। পদ্মার ওপারের মানুষ আপনার দিকে চেয়ে আছে এই প্রকল্প নির্মিত হবে কিনা? শেখ হাসিনা অনেক সময় নিয়ে এ প্রশ্নটির উত্তর দেন।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক সরে যাবে এটা আমাদের কাছে নতুন কোনও বিষয় নয়। গত বিএনপি জোট সরকারের সময়ও তারা সাতটি প্রকল্প থেকে সরে গিয়েছিল। ঢাকা ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে নির্মাণের কথা বললেও তারা সরে এসেছে। পরে আমরা নিজেদের অর্থায়নে সে কাজ শুরু করেছি। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক নিজেই এগিয়ে এসেছে।

আর এ সেতু নির্মাণে বুয়েটের শিক্ষকসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যে কমিটি গঠিত হয়েছিল সেখানে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শকও ছিল। তাদের মিলিত পরামর্শেই যে কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের কাজ দেয়া হয়েছিল। কথা হচ্ছে, বিশ্বব্যাংক যেখানে টাকাই দেয়নি সেখানে তারা দুর্নীতির অভিযোগ আনলো। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের কোনও রকম তদন্ত ছাড়াই বহিষ্কার করতে বললো? প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন তুলে কাজল ঘোষকে বলেন,আমি আপনাকেই প্রশ্ন রাখি, একজন আত্মমর্যাদাশীল মানুষ হিসেবে; আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে এটা কি কখনও মেনে নেয়া যায়? সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে দফতর থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বরেন,বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের ভিত্তিতে নয়; তদন্ত সঠিকভাবে করতেই আমি যোগাযোগ মন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছিলাম। শুধু মন্ত্রী নয়, প্রকল্প পরিচালক ও সচিবকেও সরিয়ে দিয়েছিলাম।

আমার চিন্তা ছিল, তদন্ত কাজ যেন কোনও ভাবে প্রভাবিত না হয়। আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই, বিশ্বব্যাংকের কারণেই পদ্মা সেতু নির্মাণ দেড় বছর পিছিয়ে গেল। আমার প্রশ্ন তাদের উদ্দেশে, যে কোম্পানির বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, সেই কোম্পানি নির্বাচনের পরামর্শক কমিটিতে বিশ্বব্যাংকও তো ছিল। কথা হচ্ছে, বিশ্বব্যাংকের মালিক বাংলাদেশও। আমরা তাদের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছি।

যা সুদসহ পরিশোধ করবো। আমরাতো বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ভিক্ষা নিচ্ছি না। পদ্মা সেতু নির্মান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ আমরা সহসাই শুরু করবো, এটা সময় হলেই আপনারা জানতে পারবেন। ’ শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল নিউজমেইলবিডিকে জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার পর থেকে প্রায় রাত ১১টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার জুমার নামাজের পর অনেকের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী তার মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। বেশিরভাগ ফোনেই তাকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের জন্য।

যারাই সুযোগ পেয়েছেন,তারাই কথা বলেছেন। অনেকে এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন,প্রধানমন্ত্রী তা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। বুধবার সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার দুটি মোবাইল ফোনের নম্বর এবং ই মেইল ঠিকানা নাগরিকদের জন্য প্রকাশ করে , তার পরিবারের সদস্যদের নাম ভাঙিয়ে কেউ কমিশন চাইলে বা অবৈধ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করলে তাকে অবহিত করার আহবান জানান। শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, ‘আমি, আমার ছোট বোন এবং আমাদের পাঁচ ছেলে-মেয়ে ছাড়া আমার আর কোনও পরিবার নেই। এর বাইরে আমার কেউ নেই।

' ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.