আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"টিভি ক্যামেরার সামনের মেয়েটি" অধ:পতিত’, ‘খারাপ মেয়ে’ নয়... বরং একজন প্রতিবাদী মানুষ...

বেশী কিছু লিখার নেই..কারণ বেশী কিছু জানাও নেই।। সম্প্রতি সর্বজনশ্রদ্ধেয় "হাসনাত আব্দুল হাই"....প্রথম আলোতে প্রকাশিত "টিভি ক্যামেরার সামনের মেয়েটি" ছিল বাংলা নববর্ষ-১৪২০ বাংগালীর জন্য এক অনন্য উপহার...যেভাবে যৌনসুড়সুড়ি দিয়ে সাহিত্য রচনার মত স্পর্শকাতর বিষয়টি সম্পন্ন করেছেন, তা দেখে মনে হয়েছে....নিয়তিবাদী লেখক বলে তার যে পরিচয় ছিল সেটা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে... মনস্তাত্বিক থেকে শুরু করে পেশাগত দ্বন্ধ, সামাজিক পারিবারিক জটিলতা, রোমান্স, শাসক ও শোষিতের গল্প সবকিছুই শেখার আসে বর্ষীয়ান এই ঔপন্যাসিক এর কাছ থেকে..মানব চরিত্রের অন্ধকার ও নোংরা দিকটা তার লেখায় ফুটে উঠেছে বারবার... রাজনৈতিক উত্তাল বিষয়গুলি হয়ত সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা(তিনি সচিব পদে কর্মরত অবস্থায় অবসর নেন) ছিলেন বলে এ বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়েছেন।তবে তা পুষিয়ে দিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নানা দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা বা নির্যাতনের লেখা দিয়ে। কিন্তু "টিভি ক্যামেরার সামনের মেয়েটি" শিরোনামে লেখায় সীমা নামের যে চরিত্রটি অংকিত হয়েছে তা যে অগ্নিকণ্যা "লাকী" দের নিয়ে লেখা, সেটা খুবই কটুভাবে দৃশ্যমান...অগ্নিকন্যা লাকি কে নিয়ে আমি আগেও লিখেছি...বলেছি অনেক কথা....কিন্তু জমির চাচা আর মঞ্চের ছাত্রনেতারা, যারা 'প্রগতিশীলতার' ধারক এবং বাহক হিসেবে তার লেখায় উর্দ্দিষ্ট হয়েছেন, তাদের চরিত্র রুপায়নের সংগে সংগে তিনি গনজাগরন বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে গেছেন...সুর মিলিয়েছেন হেফাজতের সকল দাবীর সাথে....সুর মিলিয়েছেন....বিখ্যাত চটিসাহিত্যিক "রসময় গুপ্তের" সাথে.... তার এই লেখনি ও ভাবনাকে জনসম্মুখে "বাস্তব" রুপ দিতে প্রথম আলোর ভুমিকা অনস্বীকার্য..."আমার দেশ" এর সাময়িক অনুপস্থিতে "সাময়িক মুখপত্রহীন" পাঠকদের বিশ্বাস অর্জনের ও পত্রিকার বিক্রি বাড়ানোর এক চেস্টা হিসেবে সেটাকে সাধুবাদ জানানো যেতেই পারে...কিন্তু হাসনাত আবদুল হাইয়ের এই গল্পটিকে নোংরা অপপ্রচারণা থেকে আলাদা করে দেখার আক্ষরিক অর্থেই কোন সুযোগ নেই। গল্পকারের স্বাধীনতা কোন ভাবেই বাস্তব চলমান রাজনৈতিক সংগ্রামের নারী নেতা-কর্মীদের নামে নোংরা অপপ্রচারকে অনুমোদন করে না। গণজাগরণ মঞ্চের নারী শ্লোগানদাতাদের ‘অধ:পতিত’, ‘খারাপ মেয়ে’ হিসেবে দেখার জন্য যে দৃষ্টিভংগি দরকার, তা এককালের "সবল এর বিরুদ্ধে দুর্বল এর লড়াই ও অত:পর জয়" এর কথক জনাব "হাসনাত আব্দুল হাই" কোথায় পেলেন সেটাই এখন ভাববার বিষয়....তার বক্তব্য শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট করে গণজাগরণ মঞ্চের, মিডিয়ার এবং রাজনীতিতে অংশগ্রহণকারী নারী কর্মীদেরকে অপমান করা, নোংরা অপবাদ দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং নিজ অবস্থান থেকে সংগ্রাম করে যাওয়া প্রতিটি নারীর প্রতি একটা মূর্তমান "কষাঘাত"...আবার "সম্পাদকীয় নীতিমালা" অনুসারে এরকম ইংগিতপূর্ণ এবং নোংরা অভিযোগ মূলক গল্প প্রথম আলোতে যথেষ্ট গুরুত্ব সহযোগে প্রকাশিত হলে সেটা কি ইংগিত করে, তার মর্মার্থও অনেকেরই জানা... সমাজের সমকালীন চালচিত্র ফুটিয়ে তোলা বাইরেও একজন ঔপন্যাসিক এর সাধারণ দ্বায়িত্ব থাকে সেই চরিত্রটিকে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা পাঠকের কাছে সেটাকে বাস্তব এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলে ধরার....যেটা "চটি সাহিত্যিক" বা "চটি প্রকাশক" দের থাকে না...ব্যাক্তিগতভাবে, আমি কথাসাহিত্যিক বা সমালোচক নই...শুধু "আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা" পাঠক গোষ্ঠীর একজন মাত্র...আমার সেই ক্ষুদ্র অবস্থান থেকেই আমি মনে করি যে, চিন্তা ভাবনায় প্রগ্রতিশীলতার নামে "নারীদের মক্ষীরাণী" হিসেবে উপস্থাপন করার "রগরগে" প্রচেষ্টা, পুরো নারী সমাজকে হেয় করার একটা সুক্ষ প্রয়াস...যেটা "রসময় গুপ্ত"দের মানায়...শ্রদ্ধেয় "হাসনাত আব্দুল হাই" এর মতো ঔপন্যাসিকদের নয়.....

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.