আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উলফাও চায় অনুপ ভারতে ফিরুক

বাংলাদেশে কারাবন্দী ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার নেতা অনুপ চেটিয়া বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় না চেয়ে ভারতে ফিরতে চান। এ জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছেন। তিনি এখন রাজশাহী কারাগারে বন্দী।
রাজশাহী কারাগারের কারাধ্যক্ষ তৌহিদুল ইসলাম জানান, অনুপ চেটিয়ার চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর আজ শুক্রবার বিবিসিকে জানান, অনুপ চেটিয়ার এ রকম চিঠির কথা তিনি শুনলেও কোনো চিঠি এখনো তাঁর হাতে এসে পৌঁছেনি।


ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী এই সংগঠনটির একটি অংশের সঙ্গে আগামী সপ্তাহের গোড়ায় গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। উলফা বলছে, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া ওরফে গোলাপ বড়ুয়া যদি ভারতে ফিরে এসে ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন, তাহলে সেটা হবে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সেই আলোচনায় গতিও আসবে।
উলফার বিদেশসচিব শশধর চৌধুরী বিবিসিকে বলেছেন, ‘অনুপ চেটিয়াই প্রথম শান্তি আলোচনা শুরু করেছিলেন। তাই এই প্রচেষ্টার তিনিই মধ্যমণি।

এ ছাড়াও, তিনি অত্যন্ত রাজনৈতিক প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তি, আমরা সবাই তাঁর কাছ থেকেই রাজনীতি শিখেছি। তাই উনি নিজে যদি ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন, তাহলে আলোচনা অন্য ধরনের বেগ পাবে। ’
শশধর চৌধুরী আরও বলেন, ‘ভারত সরকার অনুপ চেটিয়াকে যেমন ১৬ বছর ধরে চেয়ে আসছে বাংলাদেশের কাছে, তেমনি আমরাও তাঁর প্রত্যাবর্তন চাইছি তিন বছর ধরে। এখন ঠিক কবে তাঁকে ফেরত পাঠানো হবে, তা নির্ভর করছে বাংলাদেশ সরকারের ওপর, আর কিছুটা আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর। তিনি দু-তিন দিনের মধ্যে আসবেন, না আরও পরে আসবেন, সেটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না।


উলফার আরেক নেতা পরেশ বড়ুয়াকেও কি শান্তি আলোচনায় আনা সম্ভব—বিবিসির এই প্রশ্নের জবাবে শশধর চৌধুরী বলেন, ‘সাংগঠনিকভাবে তিনি আমার থেকে উঁচু পদে। তাই তাঁর অবস্থান নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে এটা বলাই যায় যে দুই-আড়াই বছর হয়ে গেল এখনো তো পরেশ বড়ুয়াকে এই গ্যারান্টি আমরা দিতে পারিনি যে, শান্তি আলোচনা সফল হচ্ছে। কীভাবে বলব যে আপনি চলে আসুন। ’
শশধর চৌধুরী বলেন, পরেশ বড়ুয়ার কাছে যদি কোনো বার্তা দেওয়ার থাকে, সেটা সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়া বা অনুপ চেটিয়াই পাঠাতে পারেন।

তাঁর অবস্থান থেকে এ ধরনের কোনো বার্তা দেওয়া সম্ভব না বলে জানান তিনি।
১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দী উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার কারাবাসের মেয়াদ শেষ হয় ২০০৭ সালে।
১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে অনুপ চেটিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। পরে তিনটি মামলায় তাঁকে যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন বাংলাদেশের আদালত।

২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজার মেয়াদ শেষ হয়। বর্তমানে তিনি আছেন রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

শান্তি আলোচনায় অংশ নিলে স্বাগত জানাবে আসাম সরকার
অনুপ চেটিয়ার স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছে আসাম সরকার। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব জ্ঞানেন্দ্র দেব ত্রিপাঠি বিবিসিকে বলেছেন, ‘উলফার যে কোনো নেতাই যদি দেশে ফিরে এসে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন, তাঁকেই আমরা স্বাগত জানাব। এটাই আসাম সরকারের অবস্থান।

’ কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আসামে যেসব মামলা রয়েছে, সেগুলোর কী হবে, এর জবাবে ত্রিপাঠি বলেন, ‘দুটো পৃথক বিষয়। আমরা চাইব শান্তি আলোচনা। আর বিচার বিভাগের যা করণীয়, সেটা তারা করবে। ’।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.