আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রণব মুখার্জির বিরুদ্ধে লড়বেনই না কালাম

চোখে যা দেখি, কানে যা শুনি, তা নিয়ে কথা বলবোই ! কষ্ট’ পেয়েছেন মমতা! পশ্চিমবঙ্গের ‘জেদি’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে লজ্জার সাগরে ডুবিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখার্জির বিরুদ্ধে লড়াই না করার ঘোষণা দিয়েছেন এ পি জে আবদুল কালাম। সাবেক রাষ্ট্রপতি কালাম গতকাল সোমবার পরিস্কারভাবে দেশবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রণব মুখার্জির বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে নামতে তার বিবেক সায় দিচ্ছে না। তাছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রবেশের লোভও তার ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, কালামের নিকট থেকে ‘অপদস্থ’ হবার পর সমালোচকরা বলছেন, মমতা নিজেই তার জিদের বলি হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, উচিত শিক্ষা হয়েছে! ভুল সবই ভুল : কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জিকে তার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা যাতে রাষ্ট্রপতি হতে না পারেন সে লক্ষ্যে একপ্রকার যুদ্ধে নেমে পড়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি।

তবে তিনি একঘরে হয়ে পড়েন। কোনো দলের সমর্থন না পেলেও প্রণবের বিপক্ষে আবদুল কালামকে দাঁড় করানোর ঘোষণা দেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। ‘খেলা শেষ হয়নি’ -সাংবাদিকদের সামনে এমন বাগাড়ম্বরও করেন। জনগণের সমর্থন চেয়ে ফেসবুকে একাউন্টও খোলেন। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিকট থেকে বেশ সাড়াও পেলেন।

কিন্তু বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব আবদুল কালামের বুঝতে সমস্যা হয়নি যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সাধারণ জনগণের ভোটের কোনো মূল্য নেই। কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারী সমর্থন জানালেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যালটে তাদের সীল মারার ক্ষমতা নেই। বহুকাঙ্খিত এই আসনে বসতে নির্বাচিত আইন প্রণেতাদের ভোটই একমাত্র অস্ত্র। এজন্য প্রণবের পথের ‘কাঁটা’ হবার ব্যর্থ চেষ্টা করতে রাজি হননি কালাম। মমতার পাতা ফাঁদ তিনি সযত্নে এড়িয়ে গেছেন।

ফলে মমতার সব জারিজুরি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। গতকাল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, মমতা তো বুঝতে পেরেছেন যে প্রণবকে ঠেকানো তার পক্ষে আর সম্ভব নয়। তাই এখনো একগুয়েমি ত্যাগ করে সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে হারানো সম্মান কিছুটা হলেও তিনি উদ্ধার করতে পারেন। ‘কষ্ট’ পেয়েছেন মমতা : এদিকে, আবদুল কালামের সিদ্ধান্ত জানার পর গতকাল ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মমতা। তিনি ফেসবুকে এক বিবৃতিতে বলেন, আমি আপনার ঘোষণা দেখেছি।

আমি কষ্ট পেয়েছি। অনেক ব্যক্তি এবং এবং কিছু রাজনৈতিক দল বুঝতেই পারল না যে একজন নির্ভেজাল সত্ মানুষের পেছনে গোটা দেশের দাঁড়ানো উচিত ছিল। বিবেকের বাধা : এ পি জে আবদুল কালাম গতকাল এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নেবেন না। কালাম তার বিবৃতিতে বলেন, ‘১৯ জুলাইয়ের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির ব্যক্তিগত আগ্রহে আমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে যে কথাবার্তা চলছে । কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে আমি নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি আমাকে প্রার্থী করতে চাইছেন। এছাড়াও সাধারণ জনগণ, বুদ্ধিজীবী ও তার শুভাকাঙ্খীরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট ও ই-মেইলের মাধ্যমে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুরোধ জানাচ্ছেন। কিন্তু তারপরও এই লড়াইয়ে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। আমার বিবেক এই নির্বাচনে লড়াই করতে সায় দিচ্ছে না।

’ উল্লেখ্য, এ পি জে আব্দুল কালাম ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। অটল বিহারী বাজপেয়ী’র নেতৃত্বাধীন তত্কালীন এনডিএ সরকারের প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। সূত্র: ইত্তেফাক ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.