আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফ্রিল্যান্স কনফিডেন্সিয়াল-১

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া! ফ্রিল্যান্সিং এখন একটি বাস্তবতা। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে এখন ফ্রিল্যান্সিং-এর জয়জয়কার। নিন্দুকেরা বলেন কর্পোরেটরা এখন এমপ্লয়ী নিতে ভয় পায় (পাবারই কথা। গত কদিনের আশুলিয়ার কথা ভাবেন!) এবং তারা কম টাকাতে বেশি কাজ করাতে চায় (মার্কসের কথা মনে আছে? এটি পূঁজিরই ধর্ম)।

কারণটা যায় হোক। ফ্রিল্যান্সিং-এর কাজ বাড়ছে এবং বাড়ছে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যাও। বিভিন্ন পেশাতে ফ্রিল্যান্সিং অনেক পুরোনো ব্যাপার (আমাদের দেশের কাজের বুয়া!!!) হলেও ঘুরে ফিরে এখন আসছে আইটি ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং-এর কথা। আর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে উন্নত বিশ্বের অফশো’র আউটসোর্সিং। কাজে সামনে এই সুযোগ বাড়বে বৈ কমবে না।

আমাদের দেশেও বাড়ছে এর ব্যপ্তি (সুযোগ পেয়ে নেমে পড়েছে প্রতারকরাও)। দেশের নানান স্থানে অন্য অনেকের মত আমরা এই নিয়ে নানান কথামালা, প্রশিক্ষণ, কর্মশালার আয়োজন করছি। সেখানে যোগ দিচ্ছে আমাদের সেরা ফ্রিল্যান্সাররা। তারা তাদের জানা টিপস, কৌশল সবই বলে দিচ্ছেন নতুনদের। কেও কেও তাদের অভিজ্ঞতা ব্লগে শেয়ার করছেন, ফেসবুকের গ্রুপে বলছেন, মেইনটেইন করছেন ই-মেইল গ্রুপ।

জাকারিয়া চৌধুরী লিখেছেন এই বিষয়ের একটি বাল্যশিক্ষা – ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং। আবার পার্থ সারথির সঙ্গে মিলে লিখেছেন এসইও নিয়ে একটি বই। আরো অনেকে হয়তো লিখেছেন। আমার জানা নেই। জাকারিয়া খুব মেথডিক্যালি আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্স কমিউনিটি নিয়ে জরিপ ইত্যাদি করে এই শিল্প বিকাশের পথে কিছু সলিড স্ট্যাটিস্টিক যোগাড় করেন নিয়মিত।

অন্যরাও করেন। সবার চেষ্টায় আমাদের যুবা পেশাজীবীরা এগিয়ে যাবেন। আমার ইদানিং মনে হচ্ছে আমরা হয়তো একটি বই কম্পাইল করতে পারি। সেখানে এক মলাটে ১০-১২ জন সেরা ফ্রিল্যান্সার থাকবেন। তাদের অভিজ্ঞতা, কৌশল আর টিপস নিয়ে বইটা সংকলন করা হবে।

এবং সেখানে ক্রসকাটিং ইস্যুগুলো থাকবে। কেও করছে না দেখে মনে হয় কাজটা আমাকে শুরু করতে হবে (মনে আশা যে, কেও না কেও এটির হাল ধরবে এবং আমার আলসেমি নিষ্কন্টক করবে)। সে চিন্তা থেকে আমি কিছু হোমওয়ার্ক করতে শুরু করি। আমার হোমওয়ার্ক মানে পড়া। এমন কোন বই আছে কিনা সেটা খুঁজতে গিয়ে দেখলাম ঠিক এরকম একটা বই লিখেছেন আমান্দা হ্যাকউয়িথ।

আমান্দার বইটা প্রকাশ করেছে রকেবল প্রেস। (ফ্রিল্যান্স কনফিডেন্সিয়াল নামের বইটি আগ্রহীরা খুঁজে পেতে পারেন। ) সেখানে ১০ জন ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে আলাপ করে নানান বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বইটি অবশ্য কোনভাবে হাউ-টু বই নয়! অর্থাৎ কেমন করে ফ্রিল্যান্সিং করতে হবে তার কোন ধারণা সেখান থেকে পাওয়া যাবে না। বরং এখানে রয়েছে ফ্রিল্যান্সের মিথ এর ডিমিস্টিফাইং! বিশেশ করে সেরা ফ্রিল্যান্সার কেন সেরা? সে প্রশ্নের জবাব খোজা হয়েছে।

সাকসেসের রহস্য কী সেটাও জানার চেষ্টা হয়েছে। আমি ভাবছি দেমের ১০ জনের সঙ্গে আলাপের আগে এই ১০জনের আলাপের একটা সার-সংক্ষেপ করে ফেলি, বরাবরের মত। অবশ্য আলসেমির রিসক তো আছে। দেখা যাবে পড়াটা হবে, লেখাটা নয়! সে যাহগে। আমি এখন বইটি পড়তে শুরু করেছি।

২০০৭ সাল থেকে একটি প্রতিষ্ঠান একটি গ্লোবাল সার্ভে করে। প্রতি তিন বছর পর পর। তাদের সার্ভের রেজাল্ট দিয়ে বইটি শুরু হয়েছে। ৩২০০ এই সার্ভেতে রেসপন্স করেছেন। তিন বছরের ব্যবধানে সেখানে বেশ কিছু চমৎকার তথ্য এসেছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল (আমি কয়েকটি উল্লেখ করছি, বিস্তারিত অন্য কোন সময় শেয়ার করা যাবে। আমাদের জাকারিয়াও এরকম একটি সার। বে করেছে। তার সার্ভেটি এখানে পাওয়া যাবে হয়তো )- ফ্রিল্যান্সিং-এ মেয়েদের সংখ্যা খুবই কম। ২০০৭ এর ১৯% থেকে ২০১০ এ হয়েছে ২৩.৪%।

মেয়েদের মধ্যে ভার্চুয়াল সহকারি আর গ্রাফিকসের আগ্রহ বেশি। জানা কথা তরুনদের মধ্যেই এর ব্যপ্তি বেশি। গড় বয়স হল ৩০। যারা ফুলটাইমার তাদের গড় ৩২ আর যারা পার্ট টাইমার তাদের গড় বয়স ২৮! তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে সবাই কমবেশি তাদের আয়ে খুশী। অন্যদিকে ইন্টারনেটের সম্প্রসারণের কারণে ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে এশিয়ানদের সংখ্যা বাড়ছে।

২০০৭ সালের ৮.৭% থেকে ২০১০ এ এটি ১১.৪% হয়েছে। আমেরিকানরা ৫২ থেকে কমে হয়েছে ৫০%। আগের মতো সবাই আর বড় শহর থেকে আসছে না। আসছে ছোটখাটো এবং প্রান্তিক শহর থেকেও। তবে, গ্রামের উপস্থিতি এখনো ধর্তব্যের মধ্যে নয়।

কেন ফ্রিল্যান্সিং করে তার জবাবে মাত্র ১০% বলেছেন তারা চাকরি পাননি বলে একাজে এসেছেন! বেশিরভাগ বলেছেন স্বাধীনতা আর বাসা থেকে কাজ করার কথা। অনেকে অন্যদের জন্য কাজ করতে চায়না বলেছে। প্রায় সবাই নিজের সৃজনশীলতাকে বাড়ানোর কথাও বলেছেন। ২০০৭ সালে ৪০% ফুলটাইমার আর এখন প্রায় ৫০% !!! আয়ের একটা চিত্র থেকে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার ৭-১০ বছরের মধ্যে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ডলার আয় করতে পারেন। এদের ঘন্টায় গড় আয় ৫৫ ডলার!!! তারা কেমন করে শিখেছেন? অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেসিক স্কিল নিয়ে এসেছেন তবে ৫০% এর বেশি কিন্তু নিজে নিজে শিখেছেন! কেথায় তারা কাজ পান? জবাবটা ইন্টেরেস্টিং- ৬০% এর বেশি কাজ পান রেফারেন্সে, অনেকে পান নিজের ওয়েবসাইট আর স্যোসাল মিডিয়া থেকে।

মজার একটা তথ্য হল বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার যত সময় ধরে কোন একটি প্রজেক্টে কাজ করেন তার ৪০% বিল করেন। আগে সবাই বাসা থেকেই সব কাজ করতো। এখন শেয়ারড অফিস এমনকি ক্যাফেতে বসেও কাজ করা হচ্ছে। এদের মধ্যে ৫১% নিজেকে বিশেষজ্হ মনে করেন (রেট দেখলে বোঝা যায়)। নিয়ারশো’র থেকে অফশো’রের মাত্রা বাড়ছে।

আগে লোকাল কাজ ছিল ৫৪% এখন ৪৯%! আয়ের মাত্রা Industry Average Hourly Rate 3D Production $107.32 Photography $83.87 Business Consultant $81.44 Other $66.85 Project Manager $59.54 Web Designer $59.86 Video Production $57.33 Software Designer $54.88 Musician $49.86 Writer $48.00 Web Developer $47.98 Graphic Designer $45.71 Illustrator $44.91 Virtual Assistant $23.84 এর পরের অধ্যায়ে রয়েছে বড় প্রশ্নগুলোর উত্তর। লিখতে পারলে শেয়ার করবো। সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.