আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউরো কাপে এক ইউলিয়ার মিশন

২০ বসন্তের যুবতী ইউলিয়া। স্বপ্ন তার এবারের ইউরো কাপের সময় পুরুষ খদ্দেরের মনোরঞ্জন করে অর্থ উপার্জন করা। সবেমাত্র জমে উঠেছে ইউরো কাপ। এতে এখনও তিনি সুবিধা করে উঠতে পারেননি। তবে আশাহত নন ইউলিয়া।

ফুটবল পাগল কয়েক লাখ পুরুষ তার দেশে। তাদেরকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের অনেক নারী বের হয়ে পড়েছেন খদ্দের ধরার মিশনে। এমনিতেই ইউক্রেন পতিতাবৃত্তির উর্বর দেশ। সেখানে ব্যাপক সংখ্যক নারী রাস্তা, বার ও হোটেল চষে বেড়াচ্ছেন। সেদেশের চারটি শহরে হচ্ছে ইউরো কাপের আয়োজন।

তাই তাদের যেন আর বাধা নেই। অবাধে তারা মিশনে নেমে পড়েছেন। কিন্তু সমস্যা তাদের সঙ্গ ভোগ করা। অর্থের বিনিময়ে হলেও জীবনের ঝুঁকি মারাত্মক। কারণ, এইডস সৃষ্টিকারী ভাইরাস এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার ভয়।

ইউক্রেনের পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শতকরা ১ দশমিক ১ ভাগ মানুষ এবং প্রতি ১০ জন দেহব্যবসায় নিয়োজিত নারীর মধ্যে একজন এইচআইভি’তে আক্রান্ত। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। তারা বলেছেন, ওইসব পতিতার সঙ্গ ভোগ করার সময় নিরাপদ ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। এমন সব খবরে এখন ইন্টারনেট সয়লাব। এতে বলা হয়েছে, ইউলিয়া চাইছেন এই জমজমাট আসরকে কেন্দ্র করে আগামী বছরের কলেজের খরচ জমা করতে।

তার দেশ এবার ইউরো কাপের স্বাগতিক দেশ। সে দেশের চারটি শহরে বসছে ইউরো আসর। তাই এখনি আশাহত নন ইউলিয়া। তার দেশে যে হাজার হাজার লাখ লাখ ফুটবলপ্রেমী জমায়েত হচ্ছেন তাদের পকেটের অর্থ খসাতে ইউলিয়া উগ্র সাজ দিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। রাস্তায়।

হোটেলে। কোন বারে। কোন না কোন জায়গা থেকে পেয়ে যাবেন ডাক। একবার ডাক পেলেই কেল্লাফতে। পাউন্ডে পাবেন বিনিময়।

এ সময় যাতে খদ্দেরদের মাঝে এইচআইভি সংক্রমণ না ঘটে তাই ইউক্রেনের ইন্টারন্যাশনাল এইচআইভি/এইডস এলায়েন্স প্রায় ১০ লাখ কনডম সরবরাহ দিয়েছে। ওই সংস্থার মুখপাত্র কোস্তিয়ানতিন পারটসোভস্কি বলেছেন, কোন খদ্দের যদি তা ব্যবহার না করেন তাহলে তার এইচআইভিতে সংক্রমিত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা আছে। ওদিকে ইউক্রেনের নারী অধিকার বিষয়ক গ্রুপ লা স্ট্রাডা কম বয়সী পতিতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, এক্ষেত্রে এতিম ও অসহায় টিনেজদের এ ব্যবসায় নামানো হচ্ছে। তাদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে একাজে।

উপায়হীন হয়ে তারাও তাতে রাজি হয়ে যাচ্ছে। ইউলিয়া তার পুরো নাম প্রকাশ করতে চান না। কারণ তাহলে তাকে আইনের আওতায় পড়তে হতে পারে। তার বিচার হতে পারে। তবে তিনি বলেছেন, তিনি খদ্দেরের মনোরঞ্জনে এরই মধ্যে কিছু ইংরেজি শিখেছেন।

তার পোশাকের মধ্যে রয়েছে উগ্র ধরনের পোশাক ও পায়ে হাইহিল। শিখেও নিয়েছেন ইউরোপীয় আচার-আচরণ। তার লক্ষ্য প্রতি ঘণ্টায় ৭৫ ইউরো থেকে ১১৫ ইউরো। এই হারে যদি তিনি অর্থ আদায় করতে পারেন তাহলে আগামী বছর তিনি গান শিখবেন এবং একজন পূর্ণাঙ্গ শিল্পী হয়ে উঠবেন। ইউলিয়ার বাড়ি দক্ষিণ ইউক্রেনে।

সেখান থেকে তিনি এই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে রাজধানী কিয়েভে গিয়েছেন। তিনি ভীষণ দরিদ্র। এই দারিদ্র্য থেকে তিনি মুক্তি চান। দারিদ্র্যের জন্য তার তেমন পড়াশোনা করা হয়নি। কোন চাকরি পাননি।

তারপরও তার পরিবারকে অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে হয়। এ জন্য মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি বেছে নিয়েছেন পতিতাবৃত্তি। এখন তিনি বিভিন্ন হোটেল, এপার্টমেন্ট ও গাড়িতে দিনে ২ থেকে ৩ জন খদ্দেরের মনোরঞ্জন করেন। তাতে মাসে ১০০০ ইউরোর মতো উপার্জন হয়। ইউলিয়া বলেন, এ কাজ করে শারীরিক, মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

প্রতিজন খদ্দেরের থাকে বিশেষ কিছু উদ্দেশ্য। তাদের সবাইকে সন্তুষ্ট করতে হয়। তিনি বলেন, এ পেশায় প্রতি পদে পদে বিপদ আছে। এ পেশায় যারা আছে তাদের সবাই আতঙ্কে। কারণ, সে বা তারা জানে না একজন খদ্দেরের মনোরঞ্জনের সময় কি সব বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে।

এক্ষেত্রে যে কোন রকম বিপদ হতে পারে। ইউক্রেনে কমবয়সী কোন মেয়ে এ পেশায় নামলে তাকে অপরাধের চোখে দেখা হয়। তাকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন দেয়া হয় না। ইউক্রেনে যৌন বাণিজ্যের বিস্তার নিয়ে রাষ্ট্রীয় কর্তারা মানতে নারাজ। তারা বলেন, ফুটবলপ্রেমীরা খেলা নিয়ে মেতে থাকবেন।

তারা রাস্তার এসব যৌন বাণিজ্যের দিকে নজর দেয়ার সময় পাবেন কোথায়। এমনই বক্তব্য ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ওলেহ মাতভেইটসোভের। তবে এবার ইউক্রেনে ইউরোকাপ আয়োজনের বিরুদ্ধে নারীবাদী সংগঠন ফেমেন তীব্র প্রতিবাদ করেছে রাজপথে। এ সংগঠনের নারীরা রাস্তায় টপলেস হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। তারা বলেছেন, এ আয়োজন ইউক্রেনে হলে সেখানে যৌন বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।

সূত্রঃ মানভজমিন  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।