আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আদরের ছোট বোন টি -- পুসকী

এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ঠোট টা তার উল্টে রাখাই লাগবে ... নিরন্তর সাধনা করেই দুষ্টু টা এমন একটা ভাব ধরে রাখে যেন ভাই ঘরে ঢুকতেই বুঝতে পারে পকেট থেকে কি বের করে দিতে হবে ... সারাদিন নিজের মনে গুট গুট করে খেলা করতে করতে ঠিক দেয়াল ঘড়িতে পাঁচটা বাজলেই জানালায় দাড়িয়ে যতদুর চোখ যায় চাতকের মত তাকে তাকিয়ে থাকতেই হবে ... যেই মাত্র ভাইয়ের সাইকেল টা ঐ রাস্তার মোড়ে দেখা যাবে অমনি হয় খেলনা নিয়ে , না হলে নিজের আদর্শলিপি বইটা নিয়ে তাকে বসে পড়তেই হবে , সবাইকে তো বুঝাতে হবে সে কারো জন্য অপেক্ষা করছিলো না , নিজের মনে নিজের কাজ করে যাচ্ছিলো ... কেউ যে ঘরে ঢুকলো তার দিকে ফিরে তাকানোর ও যেন সময় নাই ... শুধু ভাই ঘরে ঢুকে নিজের রুমে চেন্জ করে কম্পিউটার টা চালিয়ে দিতেই ওর পকেট সার্চ না করা পর্যন্ত তার শান্তি হয় না ... তাও আবার সবগুলো না , ঐ যে ডান দিকের পকেট টা শুধু ... ওতেই তো তার নিজের জন্য প্রতিদইনের ঘুস থাকে ... এহ ! ওটাকে সে উপহার বলবে ক্যান ? ওটা তো ঘুস ই ... না হলে সারাদিন সে কিসের জন্য ঝুটি দুলিয়ে লক্ষী মেয়ে হয়ে থাকবে ? ... সুতরাং যে যাই বলুক ওটা তার পাওনা ... যদিও ওটা তার নিজের বলা কথা না - ভাইটা অনেক পাজী , সে ওটাকে ঘুস বলে ... তা সে যাই বলুক ওর কাঠি চকলেট গুলো পেলেই হইসে , আর কিছু চাইনে ... আর ওর মন খারাপ , খুব বেশী খারাপ , কারণ সকাল বেলা বেরুনোর সময় ও সব দিন ভাই কে বলে -- কি মনে আছে তো ? ... ভাই ও একটা হাসি দিয়ে বলে ... আছে রে পুসকী ... এরপর ওর ঝুটিতে হালকা দুটো টান দিয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে যায় ... কিন্তু আজ এমন হয়নি ... সকাল বেলা ভাই এর মুখটা দেখে কেন জানি বলা হয়ে ওঠেনি -- মনে আছে তো ? ... এহ ! কেন বলবে ? আজ তো সাধারণ দিন না .. ভাই যদি আজকের কথা ভুলে যায় তবে ও ঠিক করে রেখেছে সামনের পুরো এক বছর সে ভাই এর সাথে আড়ি নিবে ... কিন্তু সকাল বেলা ভাই এর শুকনো মুখটা দেখে ওর ছোট্ট বুকটা কেমন যেন ধ্বক করে উঠেছিলো ... ভাই কে এমন সে কখনো দেখেনি , কি হয়েছে ভাই এর ? ... সারাটা দিন এই চিন্তাতেই ওর কেটে গেল ... সকাল , দুপুর .... বিকেল ... অবশেষে এল সেই সময় ... ঢং ঢং করে দেয়াল ঘড়ি জানিয়ে দিলো পাঁচটা বেজেছে ... ছুটে গিয়ে জানালায় দাড়াতেই দেখা গেল রাস্তায় আজ কেউ নেই ... একেবারেই শুন্য , খা খা করছে ... কৈ ভাই আজ আসে না কেন ? ... এত দেরি হচ্ছে কেন আজকে ওর ? দেয়াল ঘড়িটা আজ যেন একটু বেশী জলদি ছুটে চলেছে ... ঢং ঢং করে একটু পর পর জানিয়ে দিচ্ছে নতুন সময় .... ছয়টা , সাতটা , আট টা ... ওফফ !! ... মায়ের কড়া শাসন, তাই নয়টার সময় ওকে ঘুমিয়ে যেতে হয় , কিন্তু ভাই টা আসে না কেন এখনো ?... তাহলে কি আজকে কোনো গিফট ছাড়াই ঘুমুতে হবে ? ... ছলছল চোখে ভাই এর সাথে এক বছরের কাট্টি নিয়ে মায়ের বকুনী শুনতে শুনতে শুয়ে পড়তেই ঘুম ... মনে মনে নিজেকে বলা হয়ে গেল -- নাহ, কাল থেকে আর ভাই কে বলবে না " মনে আছে তো ? " আর কোনো দিন ভাই এর পকেটে হাত ঢুকাবে না .... ওর সাথে আজকে থেকেই কাট্টি কাট্টি কাট্টি .... তিন কাট্টি ... মাঝ রাতে চোখের পাতায় কিসের যেন ছোঁয়া লাগতেই পুসকীর ঘুম ভেঙ্গে যায় , ভাই এর দু হাতের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করতেই চারিদিকে তাকিয়ে দেখতে পায় এর মাঝেই ওর ঘরটা কেমনে করে যেন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে , হাজারো বেলুনে ভরে গিয়েছে ঘরের প্রতিটি অংশ ... পাশ ফিরে দেখে আরে , এইটা তো সেই চকলেট কেক ... তণ্বীর জন্মদিনে এমন একটা কেক হাপুস হাপুস করে খাচ্ছিলো দেখে ভাই হেটে কুটোপুটি হয়ে গিয়েছিলো ... ওরে , বেডের উপরে দেখা যায় সেই পরীর ড্রেস টা ... কদিন আগে ওটার জন্য বায়না ধরাতে মায়ের বকুনী খেতে হয়েছিল ... আর এত্ত এত্ত গিফটের প্যাকেট আশে পাশে ছড়িয়ে আছে ... পুসকীর বুঝতে কষ্ট হয়না ওগুলোর ভিতর কি আছে ... ছোট্ট দু-হাতে ভাই এর গলাটা জড়িয়ে ধরতেই ভাই বলে ওঠে -- কিরে কাট্টি আর নেই তো ? ... কথাটা শুনতেই ফিক করে হেসে উঠে পুসকী বলে ওঠে ... " উহু" ... এরপর ভাই তার ছোট্ট আদরের পুতুলটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে থাকে নিজের সব অজানা কথামালা ... নিঃশব্দে ...  

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।