আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পলাশীর বিশ্বাস ঘাতকদের করুণ পরিণতি ।

আমরা জানি একদিন আমরা মরে যাব এই জন্যেই পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে। যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না ২৩ জুন পলাশী দিবস। ১৭৫৭ সালের এই দিন বাংলার শেষ স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। বাংলা-বিহার-উড়িষ্যায় তখন বর্ষাকাল। সেদিন আকাশে যেমন ছিল মেঘের ঘনঘটা ঠিক তেমনি বাংলার স্বাধীনতার ভাগ্যাকাশেও ছিল দুর্যোগের ঘটঘটা।

আকাশে মেঘের আড়ালে যেমন সূর্য হারিয়ে যায়,ঠিক তেমনি বাংলার স্বাধীনতার সূর্যও ডুবে গিয়েছিল প্রায় ২০০ বছরের জন্য । পশ্চিমবঙ্গে ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন ইংরেজদের আক্রমন থেকে স্বাধীনতা রক্ষার বজ্র কঠিন সংগ্রামে নিবেদিত,ঠিক তখনই তার সিপাহসালার বা প্রধান সেনাপতি মীর জাফররা গোপনে হাত মেলান ইংরেজদের সংগে। মীর জাফর নবাব সিরাজউদ্দৌলার কেবল প্রধান সেনাপতিই নন,নিকট আত্মীয় ছিলেন। অথচ তিনিই আড়ালে আবডালে নবাবের আপন খালা ঘষেটি বেগমসহ অন্যদের সংঘবদ্ধ করেন। ইতিহাসের পাতায় সর্বকালের সবচেয়ে কুখ্যাত ও জঘন্য বিশ্বাসঘাতক হিসেবে মীর জাফরের নাম লিপিবদ্ধ হয়।

সেই সংগে আরও লেখা হয় কুচক্রের হোতা ইংরেজ লর্ড ক্লাইভ, ঘসেটি বেগমসহ সব কুশীলবের নাম। কিন্তু ইতিহাসের অনেকটা আড়ালেই রয়ে যায় কুচক্রী এই কুশীলবদের শেষ জীবেনের করুণ পরিনতির কথা। আজকে আমি বাংলাদেশ প্রতিদিনের রকমারী বিভাগের সৌজন্যে প্রাপ্ত সেইসব বিশ্বাস ঘাতকদের শেষ জীবনের কথা পর্যায়ক্রমে জানাবো। সংশ্লিষ্ট বিশ্বাস ঘাতকগণ হলো যথাক্রমে-বেজন্মা লর্ড ক্লাইভ, বিশ্ব বেঈমান মীর জাফর আলী খাঁন, কুখ্যাক প্রসাদ ষড়যন্ত্রকারী ঘষেটি বেগম, বিখ্যাত সুধঘোর ও মাড়োয়ারী জগৎ শেঠ, বিশ্ববিখ্যাত লোভী উমিচাঁদ, ষড়যন্ত্রকারী মীর কাশেম, বেয়াদব মীর মিরন ও দেশদ্রোহী মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়। জেনে নিন এ বিশ্বাস ঘাতকদের শেষ পরিণতির কথা ।

বে-জম্মা লর্ড ক্লাইভ : দেশের রাজনীতিতে বিদেশীদের হস্তক্ষেপের এক নতুন অধ্যায় রচিত হয় পলাশীর যদ্ধের মধ্য দিয়ে। আর এই যাত্রার শুরু লর্ড ক্লাইভের হাত ধরে। তার পুরো নাম রবার্ট ক্লাইভ। ইল্যান্ডের সাধারণ পরিবারের সন্তান ক্লাইভ সামান্য কেরানী হিসাবে ১৭৪৪ সালে ইন্ড ইন্ডিয়া কোম্পানীতে যোগ দেন এবং একই বছর কোম্পানীর ব্যবসার কাজে ভারতে আগম করেন। ভারতে কিছুদিন চাকুরীর পর তিনি নিজ দেশে ফিরে যান এবং সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধে অংশ নেন।

দ্বিতীয়বার তিনি ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি গভর্নর হিসেবে ভারতে আসেন ১৭৫৬ সালে। এই যাত্রায় ভারতে এসেই তিনি ভারতবর্ষ তথা বাংলা-বিহার-উড়িষ্যায় ব্রিটিশ আধিপত্য বিস্তারে কূটকৌশল চালাতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় পলাশীর যুদ্ধে বিশ্বাস ঘাতকতা কের মীর জাফর এবং তার মিত্ররা। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃতু্ এবং মীর জাফরের ক্ষমতা গ্রহণের ঘটনা ঘটলেও প্রকৃতপক্ষে অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য। আর উথানঘটে লর্ড ক্লাইভ তথা ব্রিটিশ সম্রাজ্যের।

পলাশী যুদ্ধের ১০ বছর পর ১৭৬৭ সালে ক্লাইভ ইংল্যান্ডে ফিরে যান। কিন্তু ভারতে রেখে যান ঘুষ, দূর্নীতি, সম্পদ আত্মসাত, প্রসাদ ষড়যন্ত্র,দূর্বৃত্তায়ন আর অপরাজনীতির এক জঘন্য ইতিহাস। তার দূর্ণীতি এমন পর্যায়ে পৌছে ১৭৭২ ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টে তার দূর্ণীতির তদন্ত শুরু করতে বাধ্য হয়। এতে একে একে তার দূর্ণীতির তথ্য বেরুতে থাকে। আত্মসম্মানের কথা বিবেচনা করে তিনি সব সম্পদের বিনিময়ে তদন্ত বন্ধ তথা তার সম্মান রক্ষার করুন আর্তনাত জানান।

তবুও চলতে থাকে তদন্ত। একে অপমানের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে ১৭৭৪ সালের ২২ নভেম্বর আত্মহত্যার পথ বেচে নেন। আত্মহত্যার জন্য তিনি নিজের শরীরে ছুরি চালান বা নিজেই নিজের গলায় ছুরি ঢুকিয়ে দেন বলে প্রচলিত আছে। তবে সম্মান রক্ষার্থে কেউ কেউ প্রচার করেন অতিরিক্ত আফিং বা মাদক গ্রহণ অথবা হৃদরোগে তার মৃতু্ হয় । তবে মরেও বেঁচে আছে লর্ড ক্লাইভ এক ঘৃণিত বিদেশি প্রভুর আদলে।

আজে এ পর্যন্ত পরবর্তীতে বাকীদের সম্পর্কে লিখবো। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.