আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হযরত ফাতেমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বিলাদত শরীফ এবং হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার বিছাল শরীফের উছিলায় সম্মানিত জুমাদাল উখরা মাস

A to Z Guidelines to Make Money Online From Bangladesh ২০ জুমাদাল উখরা হযরত ফাতিমাতু যাহরা আলাইহাস সালাম বিলাদত শরীফ লাভ করেন। ২২ জুমাদাল উখরা আফযালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীকে আকবর আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম বিদায় নেন। সে উপলক্ষে উনাদের জীবনী মুবারক এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা————— সাইয়্যিদাতুন নিসা, উম্মু আবীহা, উম্মুল খয়ের, হযরত যাহরা আলাইহাসসালাম উনার মুবারক স্মরনে: আরবী মাসসমূহের ষষ্ঠ মাস হচ্ছে “জুমাদাল উখরা। ” ‘জুমাদা’ শব্দটি মুয়ান্নাছ (স্ত্রী লিঙ্গ) তার অর্থ ‘জমাট পানি’ বা ‘বরফ। ’ সে হিসেবে তার পরে “উখরা” শব্দটিও ‘আখির’ শব্দ থেকে মুয়ান্নাছ এবং এর অর্থ শেষ।

অধিকাংশ মতে আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশের প্রায় তিন বৎসর পূর্বে ২০শে জুমাদাল উখরা তারিখে মুসলিম জাহানের রমণীকুল শিরোমণি খাতুনে জান্নাত সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বিলাদত শরীফ। তিনি হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে আগমনকৃত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বকনিষ্ঠা কন্যা আলাইহাস সালাম ছিলেন। নামকরণ ও লক্বব মুবারক : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং উনার এই উত্তম কন্যা আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক রাখেন ফাতিমা আলাইহাস সালাম। এটি উনার মূল নাম মুবারক। এছাড়াও আরো অসংখ্য লক্বব বা গুণবাচক নাম মুবারক-এ তিনি পরিচিত হয়ে আছেন।

তারমধ্যে যেমন- সাইয়্যিদাহ, ত্বাহিরাহ, যাহরা, যাকিয়াহ, রদ্বিয়াহ, মারদ্বিয়াহ, উম্মু আবিহা ও বতুল। “সাইয়্যিদাহ” অর্থ শ্রেষ্ঠা, সরওয়ার। তিনি এ লক্ববে ভূষিত হয়েছিলেন এ কারণে যে, ‘তিনি দুনিয়ায় যেমন নারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারিণী তেমনি বেহেশতেও তিনি হবেন রমণীকুলের সাইয়্যিদাহ। ” সুবহানাল্লাহ! “ত্বাহিরাহ”- ত্বাহিরাহ অর্থ পবিত্রা। এ লক্ববটি বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় প্রকার পবিত্রতার সাথে সম্পর্কযুক্ত।

এ লক্ববটি হাদিয়া দেয়ার একটা কারণ হলো এই যে, মহিলাদের সন্তান হওয়ার পর নামায তরক করতে হয়। কিন্তু উনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত। আছরের নামায পড়ার পর উনার আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ হয়েছে। অতঃপর মাগরিব থেকে যথারীতি তিনি নামায আদায় শুরু করেন। অর্থাৎ তিনি উনার আওলাদ আলাইহিস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ-এর পূর্ব ওয়াক্ত এবং পরবর্তী ওয়াক্ত নামায পড়েছেন।

উনার এক ওয়াক্ত নামাযও তরক্ব হয়নি। সুবহানাল্লাহ! “যাহরাহ”- অর্থ কুসুমকলি বা ফুল। বাস্তবিক পক্ষে তিনি একটি অনুপম সুন্দর সুরভিত কুসুম কলির মতোই রূপে-গুণে সুষমান্ডিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! “যাকিয়াহ”- অর্থ বুদ্ধিমতি, প্রখর মেধার অধিকারিণী। লক্ববটি দেয়া হয়েছিল এ জন্য যে, তিনি কোন বিষয় শোনা মাত্রই তা আয়ত্ত করে ফেলতেন।

সুবহানাল্লাহ! “রদ্বিয়াহ”-অর্থ সন্তুষ্ট। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে অবিচলভাবে তিনি ছিলেন পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা ও সন্তুষ্টির উপর পূর্ণ নির্ভরশীল। সুবহানাল্লাহ! “মারদ্বিয়াহ”- অর্থ সন্তুষ্টিপ্রাপ্তা। এ লক্ববটি এজন্য যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি লাভে ধন্য হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! “বতুল”- অর্থ ভোগ- লিপ্সা বর্জনকারিণী।

উনার এ লক্ববটি হয়েছিল এ কারণে যে, তিনি পার্থিব ভোগ-লিপ্সা ইত্যাদি সবকিছুই একেবারে বর্জন করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে, “সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বেহেশতবাসিনী নারীগণের সাইয়্যিদা হবেন। ” সুবহানাল্লাহ! হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, “হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম আমার দেহ মুবারক-এর অংশ মুবারক। যে ব্যক্তি হযরত সাইয়্যিদাতুন নিসা যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে কষ্ট দেয় সে মূলত আমাকেই কষ্ট দেয়। আর যে উনাকে শান্তি দান করে সে আমাকেই শান্তি দান করে।

” এসব হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মর্যাদা এবং ফযীলত কত ঊর্ধ্বে। সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, চরিত্র-বৈশিষ্ট্য এবং ছূরত-সীরত মুবারক-এর মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণভাবে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিদর্শনসমূহই ফুটে উঠতো। জ্ঞানে-গুণে, কাজে-কর্মে, ত্যাগে-সাধনায়, কষ্ট-সহিষ্ণুতায় এবং মাধুর্যময় চরিত্র মহিমায় তিনি ছিলেন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই আদর্শের উজ্জ্বল প্রতীক। তিনি পিতা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মাতা উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট থেকেই শিক্ষা লাভ করেন। উনার বিবাহ মুবারক হয়েছিল খুলাফায়ে রাশিদীনের চতুর্থ খলীফা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার সাথে।

উনার দু’ছেলে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মাধ্যমেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম বংশ মুবারক জারি রয়েছে এবং তা ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে ইনশাআল্লাহ। উনাদের বংশধরকেই ‘সাইয়্যিদ’ বলা হয়। অতএব, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি যে নারী জগতের এক বিস্ময়কর আদর্শ এবং সমগ্র নারীকুলের ঊর্ধ্বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু ইহজগতেই নয় পরজগতেও তিনি হবেন বেহেশতবাসিনী নারীকুলের সাইয়্যিদাহ। হযরত ফাতিমাতু যাহরা আলাইহাস সালাম —উনার বিলাদত শরীফ এ দিনে (২০ জুমাদাল উখরা) সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয-যাহরা আলাইহাস সালাম বিলাদত লাভ করেন।

তিনি বিশ্বের সকল মহিলার সাইয়্যিদাহ, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার লখতে জিগার, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম, উনাদের সম্মানিতা মাতা, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার অত্যন্ত স্নেহময়ী কন্যা এবং উনার সর্বপ্রথম আহলিয়া হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম, উনার চার কন্যার একজন। তিনি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সর্ব কনিষ্ঠা কন্যা ছিলেন। উনার পবিত্র মুখ মণ্ডল মুবারকের পবিত্রতম দীপ্তি ও লাবণ্যের কারণে উনাকে ‘‘আয-যাহরা’’ বলা হত। যেমনিভাবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার কোন পুত্র সন্তানই জীবিত থাকেননি, তদ্রূপ উনার অপরাপর কন্যাদের থেকে উনার বংশীয় ধারা জারি না হয়ে। কেবল সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বংশধারা চালু হয়েছে।

মূলত তিনি আহলে বাইত উনাদের অন্যতম। মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলে বাইত সম্পর্কে ইরশাদ করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতদেরকে) বলুন, আমি তোমাদের নিকট নুবুওওয়াতের দায়িত্ব পালনের কোন প্রতিদান চাইনা। তবে আমার নিকটজন তথা আহলে বাইতগণ উনাদের প্রতি তোমরা সদাচরণ করবে। ” (সূরা শূরা/২৩) এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত তাফসীর “তাফসীরে মাযহারী” ৮ম জিলদ ৩২০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাইনা তবে তোমরা আমার নিকটাত্মীয়, আহলে বাইত ও বংশধরগণ উনাদের (যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক) হক্ব আদায় করবে। কেননা, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন শেষ নবী।

উনার পরে কোন নবী নেই। ” শরীয়তের দৃষ্টিতে আহলে বাইত উনাদেরকে মুহব্বত করা ফরয। আর উনাদের প্রতি বিন্দু থেকে বিন্দুতম বিদ্বেষ পোষণ করা কুফরী। তাই সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- উনাকে যথাযথ মুহব্বত ও পরিপূর্ণ অনুসরণ অনুকরণ করা এবং মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের সন্তুষ্টি হাছিল করা। খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার জীবনী মুবারক——– পরিচিতি : আল্লাহ পাকের রসুলের প্রতিনিধি, আফযালুন্নাছ বা’দাল আম্বিয়া (নবীদের পরে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব), ইসলামের প্রথম খলীফা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম-এর প্রকৃত নাম আবদুল্লাহ, উপনাম আবূ বকর ।

বিশেষ উপাধি আতীক্ব ও ছিদ্দীক্ব্ব। পিতার নাম উছমান, উপনাম আবূ কুহাফা । মাতার নাম উম্মুল খাইর সালমা বিনতে সখর । তিনি ‘আমুল ফীল’ (আবরাহার হস্তী বাহিনী আগমনের বৎসর)-এর আড়াই বছর পরে ৫৭২ ঈসায়ী সনে জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার প্রায় দু’বছর চার মাসের ছোট ছিলেন ।

ইসলাম গ্রহণ : ইসলাম গ্রহণকারী বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে তিনিই প্রথম। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে সম্পর্ক : পূর্ব পুরুষ মুর্‌রাহ-এর দিক দিয়ে তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার স্ব-বংশীয় ছিলেন। নবুয়ত প্রকাশের পূর্বেই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে উনার সুসমপর্ক গড়ে উঠেছিল। স্বভাব চরিত্রের সাদৃশ্যের ফলে তাঁদের সমপর্ক এতই গভীর হয়ে উঠেছিল যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যহ সকালে এবং বিকালে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব্ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর গৃহে অবশ্যই গমন করতেন । নবুয়ত প্রকাশের পরেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কী জীবনে প্রায় এক যুগ পর্যন্ত এই রীতি বিদ্যমান ছিল ।

(বুখারী শরীফ) এ ছাড়া তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার নিকট স্বীয় মেয়েকে হাদিয়া দেন । আত্মীয়তার বন্ধন অপেক্ষা দ্বীনি সম্পর্কটাই তাঁকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সার্বক্ষণিক সহচর হিসাবে আটকিয়ে রেখেছিল । খিলাফতের স্তম্ভ গ্রহণ: হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার বিছাল শরীফের সময় উনার অসুস্থ অবস্থায় হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ১৭ ওয়াক্ত নামাযে ইমামতি করেছিলেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিছাল শরীফ বড় বড় ছাহাবাদিগকেও অভিভূত করে। এমনকি হযরত উমর ফারুক্ব আলাইহিস সালামও উনার বিছাল শরীফের খবর বিশ্বাস করতে পারেন নি।

তিনি উন্মুক্ত তরবারী হাতে বলতে লাগলেন : যে বলবে যে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার বিছাল শরীফ সম্পন্ন হয়েছে আমি তাকে এই তরবারী দিয়ে দ্বিখণ্ডিত করব। হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালামু তাঁকে শান্ত করতে সমর্থ হলেন। তিনি কুরআন শরীফের এই বাণী পড়ে শুনালেন: ‘‘মুহম্মদ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ পাক-উনার রসূল, উনার পূর্বেও রসূলগণ বিগত হয়েছেন । সুতরাং যদি তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন অথবা শাহাদাত লাভ করেন তবে তোমরা কি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে ? কেহ যদি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সে আল্লাহ পাক-উনার কিছুই ক্ষতি করে না এবং আল্লাহ পাক কৃতজ্ঞগণকে পুরুস্কৃত করবেন’’। হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম-এর এই আয়াত শরীফ পাঠের সঙ্গে সঙ্গে ছাহাবায়ে কিরামআলাইহিস সালামগণের চেতনা ফিরে আসে।

হযরত উমর ফারুক্ব আলাইহিস সালাম পর্যন্ত মন্তব্য করেছেন: আমার নিকট মনে হল- এই আয়াত শরীফগুলি এই মাত্র নাযিল হয়েছে । হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিছাল শরীফ-এর পর ছাহাবায় কিরাম আলাইহিস সালামগণ অনতিবিলম্বে সর্ব সম্মতিক্রমে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব্ব আলাইহিস সালাম-এর উপর খিলাফতের ভার অর্পন করলেন। অত:পর তিনি সমগ্র মুসলিম জাহানের খলীফা নিযুক্ত হন এবং যোগ্যতা ও সুনামের সাথে খিলাফতের স্তম্ভে সর্বমোট দু’বছর তিন মাস দশ দিন খিলাফত পরিচালনা করেন। এই অল্প সময়ের মধ্যে সকল প্রকার বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্র সাফল্যের সাথে দমন করে তিনি সমগ্র মুসলিম জাহানে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। সুবহানাল্লাহ।

ক্বওল শরীফ ও আমল মুসলমানের প্রত্যেক কষ্টের ছওয়াব দেয়া হবে। কাঁটা ফুটলে, এমনকি জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলেও মু’মিন তার ছওয়াব পাবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-উনার খালিছ মুহব্বতের স্বাদ পেয়েছে, সেই আস্বাদন শক্তি তাকে দুনিয়ার স্বাদ তালাশ করা হতে বিরত রেখেছে। হক্ব কথা বলা খুবই কঠিন, কিন’ তা কঠিন সত্ত্বেও আনন্দদায়ক ও প্রশংসনীয়। বাতিল কাজ সহজ হলেও তা নিন্দনীয়।

আয় আল্লাহ পাক ! হক্বকে হক্ব অনুসারেই আমাকে দেখান, তাকে অনুসরণ করার তওফিক দিন বাতিলকে বাতিলরূপেই আমাকে দেখান এবং তাকে পরিত্যাগ করার তওফিক দিন। বাতিলকে আমার উপর বিজয়ী করে দিবেন না, যাতে আমি খাহেশ ও কু-প্রবৃত্তির দাস হয়ে পড়ি। (হালাতে মাশায়েখে নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদীয়া) যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুষ্ঠানের জন্য এক দিরহাম খরচ করবে, সে জান্নাতে আমার বন্ধু হবে । (আন-নি‘মাতুল কুবরা আলা’ল ‘আলাম) ‘মুহীত’ কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (একবার) মসজিদে তশরীফ এনে একটি স্তম্ভের নিকট বসেছিলেন। উনার পাশে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম বসেছিলেন।

এর মধ্যে হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আযান শুরু করেছিলেন, যখন ‘‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ’’ উচ্চারণ করলেন, তখন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ্‌ চুম্বন করে আপন দু’চোখের উপর রেখে বললেন: কুর্‌রাতু ‘আইনী বিকা ইয়া রসুলাল্লাহ (হে আল্লাহ পাক-উনার রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি আমার চোখের মণি)। হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর আযান শেষ হওয়ার পর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : হে আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ! আপনি যা করেছেন, যে ব্যক্তি তদ্রুপ করবে, আল্লাহ পাক তার সমুদয় গুণাহ্‌ মাফ করে দিবেন। (সুবহানাল্লাহ) (তাফসীরে রুহুল বয়ান/মাসিক আল-বাইয়্যিনাত ১২০/৩২) বিছাল শরীফ : হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম-উনার অন্তিম সময়ে উনার নিকট উপসি’ত লোকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল: আপনার জন্য চিকিৎসক ডাকার ব্যবস্থা করব কি? তিনি বললেন: আমার চিকিৎসক আমাকে পরীক্ষা করে বলেছেন- নিশ্চয়ই আমি যা ইচ্ছা তাই করি। এ সময় হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁকে দেখতে আসলেন। অসুখের খোঁজ খবর নেয়ার পর তিনি বললেন: হে আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম! আমাকে কিছু ওছীয়ত করুন! হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম বললেন: আল্লাহ পাক আপনাদের জন্য দুনিয়া জয় করে দিবেন।

আপনি দুনিয়া থেকে প্রয়োজন পরিমাণই গ্রহণ করবেন। আর মনে রাখবেন, যে ব্যক্তি ফযরের নামায আদায় করে, সে আল্লাহ পাকের ওয়াদার মধ্যে থাকে। সুতরাং আল্লাহ পাকের সঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না। যদি আল্লাহ পাকের সঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ করেন, তবে উপুড় অবস্থায় দোজখে নিক্ষিপ্ত হতে হবে। লোকেরা উনার অন্তিম সময়ে তাঁকে অনুরোধ করল যে, একজনকে আপনার স্থলাভিষিক্ত করে দিন।

তিনি যখন হযরত উমর ফারুক্ব আলাইহিস সালামকে উনার স্থলাভিষিক্ত করলেন, তারা বলল: আপনি একজন কঠোর স্বভাব বিশিষ্ট ব্যক্ত্লিক আপনার স্থলাভিষিক্ত করেছেন। আপনি আল্লাহ পাকের নিকট এর কি জবাব দিবেন? তিনি উত্তর দিলেন: আমি বলব, আল্লাহ পাক আপনার সৃষ্টির মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তিকেই আমি নিজের স্থলাভিষিক্ত করেছি। অতঃপর তিনি হযরত উমর ফারুক্ব আলাইহিস সালাম উনা কে ডেকে কিছু ওছীয়ত করলেন। (কিতাবু জিক্‌রিল মাউতি ওয়া মা বা’দাহু) উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম সূত্রে আল-ওয়াক্বিদী এবং আল-হাকিম বর্ণনা করেন যে, হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব্ব আলাইহিস সালামু ৭ ই জুমাদাল উখ্‌রা সোমবার গোসল করেন। আর এই দিনটি ছিল শীতল।

এর পর ১৫ দিন ধরে উনার জ্বর হয়। এ সময় তিনি মসজিদে জামায়াতে নামায পড়তে পারেননি। হিজরী ১৩ সনে ২২ শে জুমাদাল উখ্‌রা মুতাবিক ২৩ শে আগস্ট, ৬৩৪ ঈসায়ী মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তিকাল করেন। (তারিখুল খুলাফা, কিতাবুল আলক্বাব, ৩য় খন্ড ) বুযুর্গী ও ফযীলত: উনার বুযুর্গী ও ফযীলত বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না। স্বভাবগত ভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত কোমল প্রকৃতির লোক।

কিন’ শরীয়তের বিধান কার্যকর করার ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। কালামুল্লাহ শরীফে স্বয়ং আল্লাহ পাক একাধিক স্থানে উনার ছানা-ছীফত করেছেন। উনার প্রশংসায় অসংখ্য হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে। মুদ্দা কথা, নবী রসুল আলাইহিমুস সালামগণের পরে যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী তিনিই ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম এবং এই ছিদ্দীক্বে আকবর লক্বব উনার একক বৈশিষ্ট্য। উনার মর্যাদা স্বল্প পরিসরে উল্লেখ করা সম্ভব নয়।

এমন কোন ভাষা নেই, যে ভাষায় উনার জীবনী গ্রন’ রচিত হয়নি। তিনি ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন, প্রথম কুরআন শরীফ সংগ্রহ করেন এবং নাম দিলেন মুছহাফ এবং তিনিই প্রথম যাঁকে খলীফা বলে অভিহিত করা হয়েছে। হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ইসলাম জগতে এক নজির-বিহীন বিরল ব্যক্তিত্ব। নুবুওওয়াতের পর উনার ইমামত ও খিলাফত সকলেই বিনা দ্বিধায় মেনে নেন। হাদীছ শরীফে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যেই জামায়াতে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উপসি’ত থাকবেন সেখানে তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইমামতি করা উচিত হবে না (তিরমিযী শরীফ)।

তিনি আরো ইরশাদ করেন, আমি আমার রব (আল্লাহ পাককে) ছাড়া যদি আর কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম তাহলে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনাকেই বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম (মুয়াত্তা শরীফ)। মুয়াত্তা শরীফে আরো বর্ণিত হয়েছে, একদা জনৈক মহিলা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার নিকট এসে কোন বিষয়ে কথাবার্তা বলল। তিনি তাকে পুণরায় আসতে বললেন, তখন মহিলাটি বলল: ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আবার এসে যদি আপনাকে না পাই, তখন কি করব? উত্তরে তিনি বললেন: তুমি যদি আমাকে না পাও, তবে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব্ব আলাইহিস সালাম উনার নিকট এস। রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি আমার (ছওর) গুহার সঙ্গী এবং হাউযে কাউছারে আমার সাথী । (তিরমীযী শরীফ) নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছওর গুহার সঙ্গী হওয়ার বিষয়টি মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাকে উল্লেখ করেছেন।

এর ফযীলত বর্ণনা প্রসঙ্গে স্বয়ং হযরত উমর ফারুক্ব আলাইহিস সালাম বলেন, আমার সারা জীবনের আমল যদি হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম-উনার সেই রাত্রির আমলের সমান হত! তা সেই রাত্রি, যেই রাত্রিতে তিনি (হিজরতের সফরে) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে ছওর গুহার দিকে রওয়ানা হন। (রযীন) হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার সবকিছু আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার জন্য কুরবান করে উম্মতের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত এক উজ্জল আদর্শ স্থাপন করে গেছেন। তাবুকের জিহাদের সময় চরম আর্থিক অনটন সত্ত্বেও তিনি উনার সকল গৃহ সামগ্রী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সামনে নিয়ে উপসি’ত করেন। সন্তান সন’তির জন্য কি রেখে এসেছেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যে: আল্লাহ পাক ও আল্লাহ পাক-উনার রসুলকে রেখে এসেছি। (আবূ দাউদ শরীফ) হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব্ব আলাইহিস সালাম ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী।

যেদিন তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, সেদিন উনার বাড়ীতে চল্লিশ হাজার দিরহাম বা দিনার ছিল, আর হিজরতের সময় যখন তিনি মদীনা শরীফ রওয়ানা হন, তখন উনার নিকট পাঁচ হাজার দিনার বা দিরহামের অধিক ছিল না। এই সব অর্থ তিনি গোলাম আযাদ ও দ্বীন ইসলামের জন্য ব্যয় করেছিলেন। (তারীখুল খুলাফা) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: যিনি সকল মানুষের মধ্যে আমাকে প্রাণ ও সমপদ দিয়ে সর্বাধিক দায়বদ্ধ করে ফেলেছেন, তিনি হলেন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম। আমি যদি আমার রব (আল্লাহ পাক) ছাড়া অন্য কোন বন্ধু গ্রহণ করতাম, তবে নিশ্চয়ই সে হত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম । কিন’ মুমিনদের ভ্রাতৃত্বই আমার জন্য যথেষ্ট ।

(তারীখুল খুলাফা) তরীক্বতের ইমাম হযরত দাতা গঞ্জে বখ্‌শ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ পাক কাউকে যখন পূর্ণ সততা দান করেন, তখন তিনি সর্বক্ষণ আল্লাহ পাকের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকেন এবং আল্লাহ পাক তাকে যখন যে অবস্থায় রাখেন তাতেই সন’ষ্টি প্রকাশ করেন। যদি ফকীর হওয়ার নির্দেশ দেন, অমনি অম্লান বদনে ফকীর হয়ে যান। আর যদি আমীর হওয়ার নির্দেশ দেন তবে আমীর হয়ে যান। তিনি আপাদমস্তক আল্লাহ পাকের নির্দেশের সম্মুখে মাথা নত করে দেন। এই অবস্থাই ছিল হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম-উনার।

এমনকি তিনি ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, উনার দ্বারা কোন অন্যায় কাজ সংঘটিত হলে কেউ যেন উনার অনুগত না থাকে। এই কারণে তিনি তরীক্বতের স্বয়ং সমপূর্ণ ইমাম ছিলেন। (কাশফূল মাহযুব) হযরত মাওলানা শাহ আবদুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব “তোহ্‌ফায়ে ইছ্‌না আশারিয়া’’ কিতাবে লিখেছেন: হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ পাক যা কিছু আমার হূদয়ে নিক্ষেপ করেছেন, আমি তৎসমুদয় হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম-উনার হূদয়ে নিক্ষেপ করেছি। (তাছাউফ তত্ত্ব) নক্‌শবন্দীয়া-মুজাদ্দিদীয়া তরীকার নিসবত উনার মাধ্যমেই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে সম্পর্কিত। আমাদের কর্তব্য এবং সরকারের দায়িত্ব: সম্মানিত মুসলমানগন! মূলত: হযরত আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম বিশেষ করে সাইয়্যিদাতুন নিসা আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম এবং আফদ্বালুন নাছ বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকরব আলাইহিস সালাম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা ও বুযূর্গী সম্পর্কিত ইলম না থাকার কারণেই আমরা উনাদের যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ করতে পারছি না।

যার ফলে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি হাছিলে ব্যার্থ হচ্ছি। তাই উনাদের সম্পর্কে জানা সকলের জন্যই ফরয। কেননা যে বিষয়টা আমল করা ফরয সে বিষয়ে ইলম অর্জন করাও ফরয। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে উনাদের সম্পর্কে কোন আলোচনাই নেই। তাহলে মুসলমানগণ কি করে হাক্বীক্বী মুসলমান হবে? সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বিলাদত শরীফ-এর দিন হচ্ছে ২০ মে জুমাদাল উখরা এবং ২৩শে জুমাদাল উখরা আফযালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার বিছাল শরীফ।

তাই প্রত্যেক মুসলিম অমুসলিম সরকারের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে- এ মুবারক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা। পহেলা মে, বুদ্ধ পূর্ণিমা, দুর্গাপূজাসহ অন্যান্য দিনে মুসলিম বিশ্বে ছুটি দেয়া হয়; যার সাথে মুসলিম ঐতিহ্যের কোন সম্পর্ক নেই এবং যা মুসলমানদের প্রয়োজনও নেই। অথচ মুসলমান হিসেবে প্রত্যেকেরই উচিত ছিল মুসলিম ঐতিহ্য ও ইসলামী ফযীলতযুক্ত দিন যেমন, উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, আহলে বাইত শরীফ, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের বিলাদত ও বিছাল শরীফ সম্পর্কে অবগত থাকা। তার চেতনাবোধে ও মর্যাদা-মর্তবা অনুধাবনে অনুপ্রাণিত থাকা। আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আমাদেরকে সেই তৌফিক দান করুন।

(বি.দ্র. : এ বছরের জন্য ২০ মে জুমাদাল উখরা ইয়াওমীল আরবায়ি মুতাবিক ১৩ মে ২০১২ ঈসায়ী রোজ বুধবার সাইয়্যিদাতুন নিসা আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম এবং ২২ জুমাদাল উখরা ইয়াওমীল ইছনাইনিল আযীমি মুতাবিক আগামী ১৫ মে ২০১২ ঈসায়ী রোজ (সোমবার) তারিখটি হচ্ছে আফদ্বালুন নাছ বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বিছাল শরীফ-এর তারিখ) মূল লেখাটি এখানে: ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.