আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি মুহব্বত রাখা হচ্ছে ঈমান! ইমামুল হুমামে আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার সুমহান শান মুবারক প্রসঙ্গে

জীবন কখনোই সংগ্রাম বিহীন হতে পারে না প্রিয় পাঠক! আসুন আমরা আজ এমন এক সুমহান ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানবো যিনি সবদিক হতেই কুল-কায়িনাতে বেমেছাল মর্যাদা শান ফযীলতসমূহের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! তিনি হলেন মুসলিম উম্মাহ উনাদের ৫ম সুযোগ্য খলীফা। উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান বেহেশতী সকল নারী সমাজের সাইয়্যিদা। উনার আব্বাজান দ্বীন ইসলাম উনার ৪র্থ খলীফা। যিনি আসাদিল্লাহিল গালিব, কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ শেরে খোদা হিসেবে তামাম আলমে মাশহুর।

আর উনার সম্মানিত মহান ভ্রাতা উনাকে কেবা না চিনে যিনি ঈমানদীপ্ত শাহাদাতের বিনিময়ে জগত মাঝে দ্বীন ইসলাম উনাকে জিন্দা রেখেছেন। এত মর্যাদা এত ফযীলত এত ইজ্জত যেই সুমহান সত্ত্বা মুবারক উনার উসীলায় তিনিও হলেন উনারই সাইয়্যিদুনা নানাজান সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! উনার মহান কাঁধ মুবারক, উনার নূরানী কোল মুবারক উনার মধ্যে তিনি অতি স্বাচ্ছন্দে আরোহণ করেই তো লালিত পালিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! অতএব, উনার সুমহান শান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকা কোনো মুসলমান এর জন্যই শোভনীয় হতে পারে না। ঈমান কস্মিনকালেও পূর্ণতা লাভ করতে পারবে না।

উনার প্রদর্শিত নুরানী আদর্শ মুবারক অনুসরণ করেই মুসলিম উম্মাহ উনাদেরকে কামিয়াবী অর্জন করতে হবে। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সেই ঈমানী বুঝ দান করুন আমীন। ইমামুল হুমামে আাউয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত হাসান আলাইহিস সালাম তিনি এমন এক মহাসম্মানিতা মাতা উনার সন্তান, যিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন আহলিল জান্নাহ। যিনি হচ্ছেন বিনতে রসূলিল্লাহ, হাবীবিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সুমহান শানে একদা হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মিম্বর শরীফ উনার মধ্যে আরোহণ করে ইরশাদ মুবারক করলেন- উম্মে ইমামুল হুমামাইন হচ্ছেন আমার জিসিম মুবারক উনারই অংশ।

যে ব্যক্তি উনাকে খুশি করবে, সন্তুষ্ট করবে সে যেন আমাকেই খুশি করলো। আর যে ব্যাক্তি উনাকে অসন্তুষ্ট করলো, কষ্ট দিলো সে যেন আমাকেই কষ্ট দিল। নাউযুবিল্লাহ! আরেকদিন হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- হে উম্মু আবীহা আলাইহাস সালাম! আপনি খুশি থাকলে মহান আল্লাহ পাক তিনি খুশি থাকেন। আর আপনি বেজার (অসন্তুষ্ট) থাকলে মহান আল্লাহ পাক তিনিও বেজার থাকেন অর্থাৎ অসন্তুষ্ট থাকেন। এই যদি হয়, হযরত ইমামুল হুমামে আউয়াল আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সুমহান শান মুবারক; তাহলে উনার পবিত্র নূরানী রেহেম শরীফ হতে আগত সত্ত্বা মুবারক উনার কত ফযীলত বুযূর্গী সম্মান তা কি কস্মিনকালেও পরিমাপ করা যাবে? কখনোই নয়।

বরং উনাদের সুমহান শান মুবারক আলোচনা করা, ফিকির করা এবং উনাদের অনুসরণ অনুকরণের মাধ্যমেই বান্দা উম্মাহ উনাদের ঈমান সতেজ মজবুত হতে পারে। সুবহানাল্লাহ! ইমামুল হুমামে আাউয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ হবার আগের একটি ঘটনা খুবই প্রসিদ্ধ। সেটা হলো, হযরত উম্মুল ফজল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, যিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আহলিয়া, তিনিই সাধারণত উম্মে ইমামুল হুমামে আলাইহিমাস সালাম উনাদের খিদমত আঞ্জাম দিতেন। তিনি একদা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহান দরবার শরীফ-এ গমন করে আরজ করলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি স্বপ্নে দেখলাম- আপনার পবিত্র জিসিম মুবারক উনার একটি অঙ্গ মুবারক আমার হুজরায় তাশরীফ এনেছেন। এই কথা শুনে অত্যন্ত খুশি চিত্তে নূরে মুজাসসাম, হাবিবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- আমার কলিজার টুকরা মুবারক উম্মু আবীহা আলাইহাস সালাম উনার একজন পবিত্র আওলাদ অচিরেই দুনিয়াতে তাশরীফ আনবেন।

আপনি উনার দুধমাতা হবার সৌভাগ্য লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ! সত্যি সত্যিই কিছুদিন পর ইমামুল হুমামে আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ হলে হযরত উম্মুল ফজল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনিই উনার দুধমাতা হিসেবে খিদমতের আঞ্জাম দিতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! ইমামুল হুমামে আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার খিদমতকারী সকলের প্রতি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি অবারিত শান্তি বর্ষণ করুন। আমীন। ইমামুল হুমামে আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার সুমহান বিলাদত শরীফ হবার পর উনার কান মুবারকে আযান দেন এবং নাম মুবারক রাখেন স্বয়ং উনারই সাইয়্যিদুনা নানাজান সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- আমি আমার পবিত্র নাতি মুবারক উনার নাম রাখলাম, ‘হাসান’। ‘হাসান’ মানে অতি উত্তম, অতি সুন্দর, অতি দৃষ্টি নন্দন, অতি প্রশান্ত। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার সপ্তম দিবস মুবারকে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি পবিত্র আকীকা শরীফ করার জন্য দুটি মোটা তাজা মেষ জবেহ করেন। পবিত্র নবজাতক মুবারক উনার চুল মুবারক মুন্ডন করা হলো এবং সেগুলোর ওজন সমপরিমাণ রুপা সদকা করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! বর্তমান যামানায় মুসলিম উম্মাহ উনারা নবজাতকের ক্ষেত্রে যে সুন্নত মুবারকগুলো পালন করে থাকেন সেগুলোর উৎস আমরা জানতে পারলাম।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, মুসলিম জিন্দেগীর শুরু হতেই আমাদের জন্য আদর্শ হিসেবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সুমহান আওলাদ ইমামুল হুমামে আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনাকেই বেমেছাল প্রতীকরুপে উপস্থাপন করেছেন। মূলত: ঈমানদার মুসলামান উনাদের প্রতিক্ষেত্রেই হযরত ইমামুল হুমামে আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি মুবারক বেমেছাল আদর্শ। তাই উনার সুমহান শান সম্পর্কে জানা শুনা বুঝা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব কর্তব্য। বিশিষ্ট ছাহাবী, খাদিমে রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত আবু হুরাইরা রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- আমি যখনই যতবারই ইমামুল হুমামে আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার নূরানী চেহারা মুবারক-এ দৃষ্টিপাত করেছি ততবারই আমার চক্ষু দিয়ে দর দর করে অশ্রু প্রবাহিত হয়েছে। কারণ আমি দেখেছি, একদা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হুজরা শরীফ হতে বাহিরে তাশরীফ আনেন।

কিছু সময় ধরে আশে পাশে ঘুরে ফিরে বরকত ছোহবত যিয়ারত মুবারক দিয়ে পবিত্র মসজিদ শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ এনে বসে পড়েন। আমাকে নির্দেশ মুবারক দিয়ে ইরশাদ মুবারক করলেন, আমার কলিজার টুকরা মুবারক উনাকে নিয়ে আসুন। অতঃপর ইমামুল হুমামে আউওয়াল সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত হাসান আলাইহিস সালাম উনাকে এনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র কোল মুবারক-এ দেয়া হলো। তিনি কোলে বসেই সাইয়্যিদুনা নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দাড়ী মুবারক নিয়ে আনন্দ খুশি জুড়ে দিলেন এবং চেহেরা মুবারক চুম্বন করতে লাগলেন। এ অবস্থায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- ইয়া বারে ইলাহী! আমি সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত হাসান আলাইহিস সালাম উনাকে মুহব্বত করি, ভালবাসি এবং তাকেও মুহব্বত করি ভালবাসি যে ব্যক্তি ইমামুল হুমামে আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনাকে ভালোবাসে, মুহব্বত করে।

সুবহানাল্লাহ! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.