আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাহাদের কথা শুনিলে মনে হয় তাহাদের মুখে বিড়াল মুতিয়া দিয়াছে

বিশ্বের নিপীরিত মানুষের শত্রু একটাই এবং তদের ধরন একই, এরা রয়েছে অনেক দূরে। এই শত্রুরা রয়েছে যেখানে থেকে পুঁজিবাদী এলিটদের জন্ম, যেখান থেকে এরা সরকার প্রধানদের ব্যাবহার করে তাদের শক্তি প্রেরণ করে, আর ঐ সরকাররা তাদের তাঁবেদারি করে লাভবান হয়। স্বাধীনতা পূর্ববর্তি সময় থেকে আমাদের সন্মানিত জাতির জনক কথার তুবরি ছুটিয়ে এদেশের জনগনকে হিপনোটাইজ করে রেখেছিলেন। দেশকে তিনি ভারতের পা-চাটা গোলাম বানিয়ে ছিলেন তখনই। ভূট্টোকে জড়িয়ে ধরে গালে চুমো খেয়েছিলেন ৭৩’রে।

যে মঙ্গা হওয়ার কথা ছিলো ১৯৭২ সালে, রিলিফের চাল চুরি করে বাসন্তিকে জাল পড়াতে বাধ্য করেছিলেন। তার ছেলেদের কুকির্তির কথা সে সসময় প্রতিটি পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার করা হতো। তখনই পত্রিকা গুলোর বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়। একটি দেশের জাতির জনককে সে দেশের কতিপয় সেনাবাহীনির কর্মকর্তা কেন হত্যা করতে যেবে? সোজা কথা অন্যায় সহ্য করতে না পেরে। আল্লাহ্‌ শেখ পরিবারের সকল বিদেহী আত্মাকে জান্নাত দান করুন এই কথাটি বলা ছাড়া আমার আর তাদের জন্য বলার কিছু নেই।

এলো নব্বইয়ের দশক, ড. কামাল তখন বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাদের একজন। তার ছবি একই সাথে তুলে শেখ হাসিনা এই দেশের জনগণের কাছে পরিচিতি লাভ করেন। একসমইয় ড. কামাল রাজনিতী ছেড়ে দেন। তা সোহেল তাজের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার মতই আজো প্রকাশিত গোপন হয়ে থাকবে। ১৯৯৬ এ শেখ হাসিনা প্রধান মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম দিন থেকে যে কাজটি করা শুরু করেন সেটি হলো বিটিভিকে বাবার হাগুমুতুগার বানানোর মধ্য দিয়ে।

আমার মনে আছে বাংলা একাডেমীর এক অনুষ্ঠানে আমি সে সময় উপস্থিত হয়েছিলাম, নীলফামারীতে থাকতে। অষ্টম শ্রেনীর একজন ছাত্র টিভি বিনোদনের অভাবে ক্ষেপে গিয়ে রচনাপ্রতিযোগীতায় বঙ্গবন্ধুকে বলে বসলো ‘বঙ্গবল্টু’ নামে। প্রসঙ্গত বলে রাখতে হবে সে সময় দেশে স্যাটেলাইট চ্যানেল সেরকম প্রচলন শুরু করতে পারে নাই। ফলে সবার কাছে তখন ডিশ সেবা পৌছায় নাই। কথা সেটা না সে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করলো, এটা সবাই দেখেও না দেখার ভান করতে থাকলাম আমরা।

কারণ আমার জানা আছে বিটিভিতে সেসময় বঙ্গবন্ধু নিয়ে কি রকম অনুষ্ঠন প্রচার হত। ২০০১ এর পরে খালেদা সরকার এসে জিয়াকে নিয়ে একই কাজ শুরু করলো। ৯৭’সালে বিশাল জনসভায় শেখ হাসিনা ঘোষনা করেন ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিরোধি দলে গেলেও হরতাল করবে না। ’ এই কথার পাঁচ বছর যেতে না যেতে কথা ভেঙ্গে বসলো আওয়ামী লীগ। ২০১৪ এর ভেতরে শত ভাগ প্রাথমিক শিক্ষা বলে তাদের একটা কর্মসূচি ছিলো সেটাও আজ কোথাও আলোচিত হতে দেখা যায় না।

২০১৫ সালে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ করতে চেয়েছিলো তারাই। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জেতার পর ভোল পাল্টে দেশে ডিজিটাল হাওয়া বইয়ে সেটাকে করে দেওয়া হলো ২০২১ সাল। এই সময়ের মধ্যে দেশ যদি মধ্যম আয়ের দেশ না হয় তবে এর দ্বায় কে নেবে? নিশ্চয় আওয়ামী লীগ সরকার। বিশেষ করে শেখ হাসিনা। যদি তিনি ২০২১ সাল পর্যন্ত্য জীবিত না থকেন? তবে এমরা এর জবাব চাইবো কার কাছে? ১৯৯৮ সালে শেয়ার বাজার ধ্বসে সারকারের মন্ত্রী, এমপিরা জড়িত থাকলেও ভঙ্গুর মিডিয়ার কারনে তা জনগণের সামনে আসেনি।

এখন আমাদের দেশের মিডিয়া যথেষ্ঠ শক্তিশালী। ২০১১ সালের শেয়ার বাজার কেলেংকারীর সাথে জড়িত অর্থমন্ত্রী সহ দেশের বিশিষ্ঠ শেয়ার ব্যাবসায়ীদের জড়িত থাকার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অথচ বিভিন্ন সময়ে বিক্ষভ সমাবেশে তাদের ইশারাই পুলিশের হস্তক্ষেপে তা পন্ড হয়েছে। ২০০৮ এর পর থেকে তাদের কথা বার্তা পূর্ববর্তি সময়ের থেকে এককাঠি বাড়া। সাগর-রুনী হত্যাকান্ড নিয়ে তাদের ড্রামার শেষ নেই।

দেশের পুলিশ সমাজকে তাদের কারণে জনগণের কাছে ছোট হতে হচ্ছে প্রতি পদক্ষপে। কবর নাটকে মুনির চৌধুরী তো বলেই দিয়েছেন ‘সরকারই পুলিশের মা-বাপ। ’ যুদ্ধপরাধী বিচারের নামে সরকার তলে তলে যে জামাতের মলদ্বার থেকে বেরোন টাকা চাটছে তা আর জনগণের কাছে অজানা নেই। কামরুল নামের যে আইন প্রতিমন্ত্রী আছে তার কথা শুনলে কি যে মনে হয় এর ব্যাখা সহজ বাংলা ভাষায় আমার জানা নেই। সংক্ষিপ্তে বলতে গেলে নিজেকে ... (সেন্সরড্‌) বাঙ্গালী মনে হয়।

এই লোকটি কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড করে সংবাদে আসতে পারেনা বিধায় মাল খেয়ে টাল হয়ে উল্টা-পাল্টা বক্ত্যব্য দিয়ে সংবাদে নিয়মিত তার নূরানী টাক খানা দেখা যায়। বিএনপির নেতাকর্মী সহ সাধারণ জনগণ গুম হওয়ার ঘটনা নৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও দীপুমনি বলেন দেশে খুন ডাকাতি বাড়লেও মানবাধিকার বিরুদ্ধ কোন কাজ হচ্ছে না, বা এই জাতীয় কোন কথা। সাহারা খাতুন তো দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধারী ব্যাক্ত, আমার কাছে অন্ততো তাই মনে হয়। তার মতো এহেন দ্বায়ীত্বশীল ব্যাক্তির কাছে থেকে প্রতিদিন মার্কা-মারা কথা শুনতে শুনতে কান পচে গেছে। সৈয়দ আশরাফ কম কথাই বলতেন, কিন্তু তার কি ভাও উঠলো কে জানে ড. ইউনুসকে নিয়ে উল্টা পাল্টা বক্ত্যব্য দিয়ে বসলেন।

আমাদের প্রধান মন্ত্রী আর হাজার হাজার ডিগ্রী থাকলেও কাজের ডিগ্রী একটাও নেই। তিনিই মাঝে মাঝে তার বক্তব্য যে বড় আনাড়ি লাগে, বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় তিনি পারিবারিক ভাবে রাজনীতি করছেন। তিস্তা চুক্তির সময় তিনিই প্রথমে বলেছিলেন ‘তিন মাসের মধ্যে তিস্তা চুক্তি হবে। ’ অথচ কিভাবে এটা একজন মন্ত্রীর কথা হয়ে গেলো বুঝলামনা। এর জন্য দ্বায়ী আমাদের মিডিয়াই।

‘সাগর-রুনী’ হত্যাকান্ডে তার দ্বায়-দায়ীত্বহীন কথা বার্তা আমাদের ধাঁধার মধ্যে ফেলে দেয়। সমবায় সমিতির ঋন-মওকুফ নিয়ে তার বক্তব্য শুনে আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে যে এটি একটি দেশের প্রধাণ মন্ত্রীর বক্তব্য। তিনি বলেছেন ‘আমরা ঋন মাফ করেছি বলে আবার আরেকজন এসে ঋণ মাফ করে দেবে এমন নাও ঘটতে পারে (আরেক জনের সাথে আপনি নিজেদের তুলনা করবেন কেন? আপনি যেমন রাজনৈতিক স্বার্থে ঋণ মওকুফ করেছেন তারাও তো একই কারণে ঋণ মওকুফ করতে পারে) । ’; ‘সরকারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তা সোধ করতে মনে থাকে না আর এন জি ও’র কাছে থেকে ঋণ নেয়ার পর তা ঠিকই সময় মত সোধ হয়। ’ এই কথা গুলো অপমান মূলক কথা বার্তা।

সরকারী ব্যাংক ঋণ আদায় করতে পারেনা এটা সরকারী ব্যাংকের ব্যার্থতা এটার দোষ জনগনকে দেয়াটা সম্পুর্ণ অযৌক্তিক। আবার তার মৃত্যুকামনা করায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন সহ জামাতী অনেক নেতা-কর্মীকে তিনি জেলে পুড়েছিলেন। কেন? তিনি কি চিরকাল বেঁচে থাকবেন? অতি আশ্চর্য ব্যাপার। এজন্যই বোধ হয় ইনকিলাবের ১৯৭৩-এর সম্পাদক তার এক সম্পাদকীয়তে লিখেছিলেন তাহাদের ‘কথা কথা শুনিলে মনে হয় তাহেদের মুখে বিড়াল মুতিয়া দিয়াছে’। ভদ্রলোক একবিন্দুও মিথ্যা বলেন নাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।