আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজ্ঞানের খাতা- পর্ব ৪: চুলা নিয়ে চুলাচুলি - মাইক্রোওভেন।

বুদ্ধিজীবী হতে ডিগ্রী লাগেনা। আমার নানী দাদীকে রান্না করতে দেখেছি মাটির চুলায়। কাঠ দিয়ে আগুন ধরাতেই যা ঝক্কি পোহাতে হত। তার উপর যদি হয় বর্ষাকাল। নাকের জল চোখের জল এক হয়ে যেত চুলা ধরাতে।

এখনো বাংলাদেশের বৃহত্তর অংশ মাটির চুলার উপর নির্ভর করে রসনা মেটাচ্ছেন। নানী দাদীর পরে এসেছে মা-খালাদের যুগ। তারা টপাস করে গ্যাসের চুলা জালাচ্ছেন ঠপাস করে হাড়ি বসিয়ে রান্না চড়িয়ে দিচ্ছেন। মাটির চুলায় হাঁড়ির তলায় কালীর আস্তরণ পড়ে যেত। ।

গ্যাসের চুলায় সে ঝামেলাই নেই। মা খালাদের পরে এখন আমার বউয়ের যুগ। যদিও বিয়েটা এখন পর্যন্ত হয় নাই। হতে আর কতক্ষণ। মাইক্রোওভেন আছেনা।

আসবে, রান্না করবে ঘড়ি ধরে। সকালে ঘুম ভাঙিয়ে বলবে ওগো ওঠো, তোমার প্রিয় টাকি ভর্তা করেছি। আহ! সকালে স্বপ্ন দেখতে ভালোই লাগে। বন্ধুরা আজকে বিজ্ঞানের খাতায় আমি লিখতে বসেছি মাউক্রোওয়েভ চুলা নিয়ে যাকে আমরা বাংলায় বলি মাইক্রোওভেন, আসলে এটা মাইক্রোওয়েভ ওভেন। সর্টকাটের যুগে আমরা আরো বেশী সর্টে কাটি।

পাওয়ার রাডার ইকুইপমেন্টে ম্যাগনেট্রন বলে এক ধরণের টিউব থাকে যা এনার্জি রিলিজ করে। পারসি স্পেনসার একটি ম্যাগনেট্রন পরীক্ষা করে দেখার সময় মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কার করেন। আপনি স্পেনসারকে চিনতে পারছেন না তাইতো। সে কিন্তু যদু মধু কেউ না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সে একজন নামকরা বিজ্ঞানী ছিলো।

একদিন তিনি রেথিয়ন কোম্পানীর একটি পরীক্ষাগার পরিদর্শনে গেছেন। তিনি একটি ডিভাইসের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার মনে হলো ডিভাইসটিতে অস্বাভাবিক কিছু আছে। বিষয়টা ভাবতে ভাবতে তিনি পকেটে হাত দিলেন। অবাক করা ব্যাপার।

তার পকেটে একটা ক্যান্ডি বার ছিলো। সেটা গলে গেছে। কিন্তু অন্য পাশের পকেটের টার কিছুই হয় নাই। তিনি পরীক্ষা করে দেখতে চাইলেন। কিছু কর্ন কারনেল বা ভূট্টার দানা নিয়ে আসলেন।

ভুট্টা ফুটে খই বা পপকর্ণ হয়ে গেলো। আরো কিছু খাবারের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে স্পেনসার একটি ডিভাইস তৈরী করলেন যাকে আমরা মাইক্রোওভেন নামে চিনি। তবে মাইক্রোওয়েভের সংস্পর্শে বেশীক্ষণ থাকা ক্ষতিকর। নির্দিষ্ট রেঞ্জের বাইরে যাওয়া ঠিক নয়। আমি দাদী-নানী, মা-খালা, বউ বলে তিনটা সময়কে বিভক্ত করেছি অথচ তুমি শুনলে অবাক হবে মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কৃত হয়েছে ১৯৪৫ সালে।

৬৮ বছরের মত হতে চলল, আমরা এখনো সেই মান্ধাতা আমলের জ্বালানীর উপর নির্ভর করে আছি। শুধু মুখে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বানাতে চাইলে হবে না। আমাদের প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে হবে যাতে আমরা সময়ের সেরাটা উপভোগ করতে পারি। স্কুলে যাওয়ার আগে মা যেন পাঁচ মিনিটেই খাবার তৈরী করে ফেলতে পারেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.