আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কল্পনায় মগ্ন, বাস্তবের মুখমুখি না হতে চাওয়া বন্ধুহীন মেয়েটা কি বন্ধু পেল?

I like to hear complain from my readers about my lacks.............................................আমি এক পরী যার ডানাও নেই, আকর্ষনও নেই প্রথম পর্ব- Click This Link একটা শব্দ আছে বাংলায়, সেটা হল পরিবর্তে, এ আমার কাছে অনেক মুল্যবান একটা শব্দ। সাতার কাটতে গিয়ে একবার ডুবেই যাচ্ছিলাম। সেদিন অন্যথা না হলে, আর আজকে এই লেখা কেউ লিখলে সেটা লিখত আমার ভুত, বা পেত্নী হবে। অথবা আমার অতৃপ্ত আত্মা, বা প্রেতাত্মা! সেদিনের পর একা একা সাতার কাটতে যাইনি, এবং শেষ পর্যন্ত সাতার শিখে, তারপর একা সাতার কাটতে গিয়েছিলাম। সেই উদাহরন আমার জন্য সবসময় কার্যকরী।

এই হল আমার ছোট্ট উধাহরন, তবে একে উল্লেখযোগ্যও বলা যায়না। কেননা এমন হাজার হাজার উধাহরন আছে আমার জীবনে। যখন দেখলাম মানুষ বন্ধু নাই, তখনি ভাসা ভাসা চিন্তা আসতে লাগল। চোখের সামনে পৃথিবীটাকে পর্যবেক্ষন করলাম বেশ কিছুদিন। তারপর একটু একটু করে একটা অভ্যাস তৈরি হল।

ছোটবেলায় একটা অভ্যাসই শেষ পর্যন্ত পরিনতি হল ওই সময়টার। বই পড়া! বই আমার পৃথিবী, সেখানে সবকিছুই অন্যরকম। বই আমাকে নিয়ে যেত অচেনা, অজানা কোন জগতে। বই পড়তে পড়তে বিহ্বল হয়ে ভেবেছি কত, ঐ গল্পের নায়িকা আমি হলে কি হত! কিংবা আমাকে যদি বাছাই করতে বলা হত, তবে কার চরিত্র আমি নিতাম! বই পড়াই হয়ে দাড়াল আমার অভ্যাস। যখন যেখানে যা পেতাম, তাই পড়তাম।

ছোটবেলায় আমি আমার নিজের বাংলা, ইংরেজী বইয়ের সব গল্প, তারপর প্রবন্ধ, তারপর কবিতা পড়ে শেষ করে ফেলতাম। অদম্য এক ভালবাসা বইয়ের প্রতি মনে জেগে উঠল। আমার নিজেরগুলো পড়া হয়ে গেলে তারপর পড়ার জন্য এক ক্লাস উপরে পড়া মেঝবোনের বই নিতাম। মাঝে মাঝে বড় বোনের বই পড়তাম, কিন্তু বুঝতাম না তেমন। তবে পাঠ্যবইয়ের বাহিরে তেমন কোন বই পড়া হয়নি তেমন, কিছু ছোট গল্পের বই পড়েছি।

কিন্তু একটা সময় বিরক্ত হয়ে গেলাম। শুরু করলাম বড়দের বই পড়া। ছোট বেলায় আমার বড় হতে খুব ইচ্ছা করত। কিন্তু এবার সেটা চরম আকারে ধারন করল। জীবনের প্রথম পড়া উপন্যাস ছিল শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথের! ঠিক পড়া নয়, আমার মামা অডিও শুনত, ওই সময়ে এতবার অডিও শুনেছি যে, কিছু সংলাপগুলো মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল।

বেশ কিছুবার শোনার পর, তবে ঐ উপন্যাসটা অন্তস্থ করতে পেরেছি। খুব ভালো লেগেছিলো, রবীবাবুর উপন্যাসটা। এর পর পড়তে শুরু করলাম অন্যদের লেখা। প্রচুর পড়েছি, দিনরাত, বউ ছাড়া কোন কথা নেই! প্রথম যখন পড়তাম, বেশি পড়েছি বিংশ শতাব্দীর লেখক, উপন্যাসকদের লেখা। তখন সবকিছু বোঝার মত অবস্থা ছিলনা, কিন্তু এত পড়েছি, চোখের সামনে খুলে গেল বিশ্বটা, সব ঝাপসা থেকে পরিষ্কার হয়ে উঠল।

মানুষ তার চোখ থাকলেও, সব কিছু দেখেনা। মন থাকতে হয় বোঝার জন্য, অন্তস্থ করার জন্য। প্রচুর পড়ার ফলে সেইসব লেখক, উপন্যাসিকের ভাষা দ্রুত বোধগম্য হয়ে উঠে। অনেক কিছুই বুঝতাম না একটা সময় পর্যন্ত, হয়্ত কখন বুঝতে চেষ্টা করিনি বলে। কিন্তু বই পড়ার ফলে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।

তবে, বোঝা আর জানার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য আছে। তাই তখন অনেক জানলেও, খুব কমই বুঝতাম। তবে জানাটাকে কাজে লাগিয়েছি বহুবার! একটু একটু করে আলোর দরজা খুলে গেল চোখের সামনে, বহুদুর! আমার অসুস্থতার কারনে কেউ জোর করতে পারত না, কোন বিষয়েই না। সুতরাং একরকম জীবন কাটাচ্ছিলাম। চুপচাপ থাকতাম, অনেক নিরব।

একটা সময় কি উচ্ছল একটা জীবন ছিল, সবার সাথে ভালো একটা সম্পর্ক ছিল। তারপর, আমার বয়স যখন আট, একট অদ্ভুত রোগ হল। খুব অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে লাগল পর্যায়ক্রমে। একটা দুরত্ব বেড়ে গিয়েছিল সবার সাথে, সেটা পরে চিরন্তন হয়ে গেছে। তাই বই আমার নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠল।

বইকে ছাড়া আমার দিন কাটতো না। বই আমার জন্য প্রানপ্রিয় বন্ধু হয়ে দাড়িয়েছিল। বই পড়ার কিছুটা এক্সট্রিম পর্যায়ে চলে গিয়েছিল কিছুদিনের মধ্যেই। একাকিত্ব দুর করতে বই পড়ার অদ্বিতীয় হয় না। তাছাড়া বই থেকে নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা ক্রমশ প্রবল হতে লাগল।

সুতরাং বই পড়া সবসময়ের কাজ হয়ে গেল। যখনি সুযোগ পেতাম, বই পড়তাম। বই পড়তে পড়তে খুব ভালো লাগত। এক কথায়, বই আমার বন্ধু হয়ে উঠল। আমি উপন্যাস পড়তে বেশ পছন্দ করতাম তখন, সেহেতু সময় লাগত অনেক।

বর্তমান সময়ের লেখাও পড়েছি অনেক, তবে তুলনামুলকভাবে কম। কবিতা কম পড়তাম তখন, হয়ত বুঝতে না পারার কারনে। তাছাড়া কবিতা ভালো লাগতনা তেমন, হাতেগোনা কয়েকটা ছাড়া। বই নিয়ে সারাদিন মেতে থাকাই মুখ্য কাজ ছিল। বেশ চলছিল সময়! এভাবে কয়েক বছর কেটে গিয়েছিল, ভালোই কেটেছে সময়।

বই পড়তে পড়তে নিজেকে একা লাগত না। নতুন নতুন গল্প, নতুন নতুন সময়, সব মিলিয়ে বেশ ভালোই চলছিল সময়টা। চুপচাপ থাকার স্বভাব আরো প্রবন হল, তাছাড়া সব কিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু, মানুষ বন্ধুর অভাব বোধটা মনে জেগে উঠল, আর তখনই সকল সমস্যা আবার শুরু হয়ে গেল......... (চলবে) ভালো থাকুন! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।