আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বুড়িগঙ্গায় দখলের মচ্ছব!

যেমন কর্ম তেমন ফল। বুড়িগঙ্গায় দখলের মছব! বুড়িগঙ্গায় চলছে দখলের মচ্ছব! রাজধানীর লালবাগ-কামরাঙ্গীরচরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গার শাখা নদীর গতিপথ বন্ধ করে চলছে ভরাট কার্যক্রম। মতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মিরা নদী গিলে খেতে মরিয়া হয়ে দখলযজ্ঞ চালা”েছন। আগে এই শাখা নদীর সাত একর জায়গা সরকার র‌্যাব-১০ এর কার্যালয় করতে বরাদ্দ দিয়েছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওই শাখা নদীটি ভরাট হয়ে গেলে বর্ষার মৌসুমে তলিয়ে যাবে আশপাশের এলাকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কামরাঙ্গীরচর রহমতবাগ ব্যাটারী ঘাট সংলগ্ন বুড়ীগঙ্গার শাখা নদীর ৩০ ফুট গভীর অংশে বাঁশ গেঁড়ে রাতের আধারে ট্রলার দিয়ে বালু ভরাট কার্যক্রম চলছে। মতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মিরা এ দখল কার্যক্রমের সঙ্গে প্রকাশ্যে জড়িয়ে পড়েছেন। এক প্রতিমন্ত্রীর এপিএস দখলদারদের মদদ দিচ্ছেন বলে নির্ভর যোগ্য সূত্রে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোহার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৯৬ কাঠা নদীতে বাঁশ গেঁড়ে ভরাট করছেন কামরাঙ্গীর চর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন সরকার ও তার ছোট ভাই কামরাঙ্গীরচর থানা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সরকার। মোবাইল ফোনে আবুল হোসেন সরকার ও মোস্তফা কামাল সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, মিডিয়া যেই জায়গা নদী-নদী বলে চিৎকার করছে, বাস্তবে এটা নদী নয়।

ওটা সরকারি জমি। ওই জায়গায় র‌্যাব অফিসের জন্য সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা যে জায়গা টুকু ভরাট করছেন এসবের বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন। জানা যায়, গত মার্চের শুরুতে নদী দখল শুরু হলে স্থানীয় জনগণ প্রতিবাধ গড়ে তোলো। দখলদারদের হুমকি-ধমকির কারণে প্রতিবাদকারীরা পিছু সরে যায়।

বিভাগীয় শহর ও পৌর শহরের খেলার মাঠ, পার্ক ও জলাধার সংরণ আইন ২০০০-এর মূল ধারায় বলা হয়েছে সরকারি কোন জলাধারের রুপ পরিবর্তন পরিবর্ধন করা যাবেনা। বেসরকারি জলাধারেরও রুপ পরিবর্তন করতে হলেও সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। যোগাযোগ করা হলে ঢাকা জেলা প্রশাসক মুহিবুল হক জানান, গত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বুড়িগঙ্গার শাখা নদীর কিছু অংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জলাধার আইন লঙ্ঘন প্রসঙ্গে বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপরে নির্দেশে এটি করা হয়েছে। পরে আবার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় থেকে এখনো এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা আমাদেরকে জানানো হয়নি। সম্প্রতি ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কামরাঙ্গীরচর হাক্কুল এবাদ বেইলি ব্রিজের পশ্চিম পাশে কামরাঙ্গীর চরের রহমতবাগ, ব্যাটারি ঘাট (রূপনগর) বড়গ্রাম কুড়ার ঘাট হয়ে খলিফাঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় শাখা নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। বাঁশের বেড়ার ভেতরে অনেকে বালি ফেলে নদী ভরাট করছে। সূত্র জানায়, বুড়িগঙ্গা দখলের পেছনে জেলা ও ভূমি অফিসের দূর্নীতিবাজদের মদদ রয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর লালবাগ, হাজারীবাগ এবং কামরাঙ্গীরচরের মাঝখান দিয়ে গত শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে স্বচ্ছ পানি প্রবাহিত হতো।

ওই শাখা নদীটি লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ এলাকার পানি ও পয়:নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। নদীটি মারা গেলে ওই এলাকার পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। বর্ষায় সৃষ্টি হবে চরম জলাবদ্ধতা। ওই শাখা নদীতে নৌকা বেয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা রহমত আলী। তার নৌকায় বসেই এই প্রতিবেদকের কথা হয়।

তিনি বলেন, শুনেছি সরকার নদীটি খনন করবে। কিন্ত এখন দেখছি ভরাট করা হচ্ছে। তিনি দুঃখ করে বলেন, নদীটি ভরাট হলে কী করে খামু, বুঝতাছি না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা বলেন, নগরীর পানি ও পয়:নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ সময় নগরীর নদী ভরাট করা হলে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে।

জাতীয় নদী রা টাস্ক ফোর্সের সদস্য আবু নাসের খান বলেন, সরকার নিজে আইন তৈরি করে নিজেই লঙ্ঘন করছেন। তিনি বলেন, নদীটি ভরাট হলে লালবাগ-কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগে চরম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।