আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার বিভাগীয় সভাপতিকে পেটালেন জামায়াতপন্থী কয়েক শিক্ষক

সকালেই পত্রিকার পাতায় খবরটি দেখে খুব কষ্ট পেলাম। শত হলেও নিজের প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয়। ছেড়ে এসেছি পাচ বছর হলো, কিন্তু টান এখনও রয়ে গেছে। তাই খবরটি পড়েই কয়েকজন ছোট ভাইকে ফোন দিলাম। জানলাম পত্রিকার পাতায় যা এসেছে , ঘটনাটা এর চেয়েও অনেক বেশী।

যদিও প্রথম আলু পত্রিকার সম্বাদিক কি মনে করে এটাকে অভিযোগ লিখলেন তা আমার বোধগম্য নয়। উল্লেখ্য, হামলাকারী দুই শিক্ষককে রাতে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আকন্দ মামুনকে বিভাগের তিন শিক্ষক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন। আহত ওই শিক্ষককে সাভারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বছরের ১৬ অক্টোবর বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মামুন বিভাগের ছয়জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ব্যবহার করে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, সেমিনার লাইব্রেরির কার্যক্রম বন্ধ রেখে রাজনৈতিক সভার আয়োজন, পরীক্ষার অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে ল্যাব টেকনিশিয়ান দিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে পরীক্ষার টেবুলেশন শিট তৈরি করা, দীর্ঘ সময়ে বিভাগে অনুপস্থিত থাকা, দুজন শিক্ষিকাকে গালাগাল, হুমকি দেওয়ানসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হয় এবং তথ্য-প্রমাণসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন অধ্যাপক আলী আকন্দ।

ওই ঘটনার পর বিভাগের শিক্ষকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আলী আকন্দের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে পাল্টা অভিযোগ তোলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বিভাগের নয়জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের কাছে লিখিতভাবে বিভাগীয় সভাপতি আলী আকন্দের বিরুদ্ধে আর্থিক বিষয় এবং অফিস ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও তাঁর দায়িত্বহীনতার কারণে বিভাগে স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান। ১৮ সেপ্টেম্বর বিভাগের নয়জন শিক্ষক আলী আকন্দকে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিভাগীয় সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। কিন্তু তিনি পদত্যাগ না করায় ২৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগকারী ওই শিক্ষকেরা বিভাগের সামনে এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওই দিন বিভাগীয় সভাপতির বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তাঁরা।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহউপাচার্য অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেনকে সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু ওই কমিটি কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এর মধ্যে ওই কমিটির সভাপতির পদ থেকে সহউপাচার্য ফরহাদ হোসেন পদত্যাগ করেন। পরে গত সোমবার কোষাধ্যক্ষ মো. নাসির উদ্দিনকে ওই কমিটির সভাপতি করা হয়।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের সভাপতি আলী আকন্দের পদত্যাগের দাবিতে গত রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্লাস বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিভাগের ১০ জন শিক্ষক। একই দাবিতে গতকাল বুধবার থেকে লাগাতার ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। বেলা দুইটার দিকে ভেতর থেকে বিভাগের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন পদত্যাগ দাবিকারী শিক্ষকেরা। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিভাগের মূল ফটকের বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন আলী আকন্দ। এ সময় ওই শিক্ষকেরা তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আলী আকন্দের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন।

একপর্যায়ে বিভাগের অধ্যাপক আবুল খায়ের ও জাহেদ উদ্দিন মাহমুদ খান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সভাপতি আলী আকন্দকে সেখান থেকে সরিয়ে তাঁর কক্ষের দিকে নিয়ে যান। এ সময় বিভাগের করিডরে জামায়াত পন্থী শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ তালিম হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ছালেহ আহম্মদ ও মো. নূহু আলম সভাপতি আলী আকন্দ মামুনকে হামলা করে তার মাথা ফাটিয়ে দেন। রাতে মামুন স্যারের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করে হলে রাত দুইটার দিকে হামলাকারী দুই শিক্ষককে ধরে নিয়ে যায় আশুলিয়া থানা পুলিশ। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হলো গত কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পতন আন্দোলনের যে শিক্ষক সমাজকে আমরা পত্রিকার পাতায় দেখেছি অন্যায় আর দূনীর্তির বিরুদ্ধে কথা বলতে, আজ সেই তথাকথিত জামায়াত, বিএনপি, প্রগতিশীলদের নিয়ে গঠিত সে “শিক্ষক সমাজের” নেতারাই অপরাধী দুই শিক্ষককে ছাড়িয়ে আনার জন্য রাত তিনটা থেকে ভিসির বাসার সামনে অবরোধ কর্মসূচী পালন করছেন। তাহলে আমরা কি বলবো? আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থী, যারা তথাকথিত শিক্ষক সমাজের আহবায়ক নাসিম আখতার হোসইনকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম- তাহলে তাকে তো মনে হচ্ছে এখন দালাল আর সুািবধাভোগী না বলে পারছি না।

কিন্তু এটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না কি কারনে তিনি নিজেকে প্রগতিশীল ঘরানার পরিচয় দিয়ে আজ জামায়াতপন্থী িশিক্ষক নামের কলংকের মুক্তির জন্য অবরোধ কর্মসূচী পালন করছেন। আজ কেন যেন মনে হচ্ছে তাহলে এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ শুনে আসছিলাম, শিক্ষক সমাজ নামে তথাকথিত যে গ্রুপটি আন্দোলনে নেমেছে তাদের ভিন্ন কোন এজেন্ডা রয়েছে। যেন সর্ষের মধ্যেই ভূত..... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.