আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতার নির্মম গণহত্যার স্মৃতিবহ ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈলের খুনিয়া দিঘি

আমার ছবি নাই , দেশের সম্ভাবনাময় একটি ছবি প্রোফাইলে দিলাম । Click This Link স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাকহানাদারদের বর্বরতার এক করুণ, রোমহর্ষক ও হৃদয়বিদারী ইতিহাস সৃষ্টিকারী বহুল আলোচিত 'খুনিয়া দিঘি' বধ্যভূমির কথা মনে হলে আজও গা শিহরে উঠে। কারও মতে ৫ সহস্রাধিক, কারও মতে দশ সহস্রাধিক আবার কারও কারও মতে হাজার হাজার বাঙালিকে ওই খুনিয়া দিঘির পাড়ে গুলি করে অথবা বেয়নেটের খোঁচায় হত্যা করেছে নরপশুরা। লাশগুলো ওই পানা পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং সিংহভাগই দিঘির পাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়। যেদিন দলে দলে বাঙালি ধরে আনা হতো সেদিন তাদের সোজা করে লাইনে দাঁড় করিয়ে এক বা দুই গুলিতেই হত্যা করা হতো খুনিয়া দিঘির পাড়ে।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর নির্মম গণহত্যার নিষ্ঠুরতম ইতিহাস ধারণ করে আছে এ খুনিয়া দিঘি। রানীশংকৈলের মালদুয়ার এস্টেটের জমিদার (তদানীন্তন) টংকনাথ চৌধুরীর জমিদার বাড়িটিতে পাকহানাদার বাহিনী তাদের হেড কোয়ার্টার স্থাপন করেছিল। সেখান থেকে রানীশংকৈলের উত্তরগাঁও, পদগমপুর, রাউথনগর, হরিপুরের চৌরাঙ্গী, যাদুরানী, ভাতৃড়িয়া, মশালগাঁওসহ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে ডিফেন্স জোরদার করার জন্য পাকবাহিনীর সদস্যরা, পীরগঞ্জের গোদাগাড়ী, শিয়ালগাজী, পীরগঞ্জ কলেজ, হরিপুরের যাদুরানী ও তালদিঘিতে পৃথক অগ্রবর্তী ঘাঁটি স্থাপন করেছিল। ঠাকুরগাঁও বিডিআর ক্যাম্প (তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প) ও রানীশংকৈল জমিদার বাড়ি হেড কোয়ার্টার থেকে পীরগঞ্জ, রানীশংকৈলে ও হরিপুর থানার বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করত পাকসেনারা। গেরিলা মুক্তিসেনা এবং সম্মুখ যোদ্ধাদের চৌকস আক্রমণে পাকবাহিনীর সদস্যরা স্বীয় অগ্রবর্তী ঘাঁটি ও প্রতিরক্ষা ব্যুহ সামাল দিতে যখন বেসামাল ঠিক সেই সময়ে মেজর তাজ ওরফে 'পাগল মেজর' নামক রক্ত পিপাসু নরপশুকে রানীশংকৈল হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হয়।

কথিত আছে, ওই পাগল মেজরের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু ছিল বাঙালির তাজা রক্ত। জনশ্রুতি রয়েছে, ওই পাগল মেজর প্রতিদিন সকালে অন্তত একজন বাঙালিকে হত্যা না করে সকালে নাশতা খেত না। পাক হানাদারদের নির্মমতা এবং হাজারও বাঙালির রক্তে রাঙানো খুনিয়া দিঘির স্মৃতি অম্লান করে রাখার তাগিদে ১৯৭২ সালে এ দিঘির পাড়ে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও খুনিয়া দিঘি বধ্যভূমিতে একটি পূর্ণাঙ্গ স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা যায়নি। বর্তমানে এ স্তম্ভটির যত্রতত্র ভেঙে যাচ্ছে-গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে।

নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস জানাতে খুনিয়া দিঘিকে সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.