আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করোনা, আমাদের ধর্মবিশ্বাস বেচে দিওনা। আমাদের শ্বাস নিতে দাও।আমরা সাধারন মানুষ আজ ক্লান্ত, বিধ্বস্ত, বিভ্রান্ত।

তাই বলতে চেষ্টা করি...যা আমি বিশ্বাস করি এবং যা আমার মনে হয়......এর বেশি না। সরকারের ওয়াদাই(ক্ষমতা যাওয়ার আগে) ছিল যুদ্ধাপরাধীর বিচার, কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচার নিয়া(আইন আর বিচারকদের মারপেচ) টালবাহানার ফলেই প্রজন্ম-চত্বরের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু প্রজন্ম-চত্বর সরকারের রাজনৈতিক ফায়দার কবলে পড়ে আজ মুখ থুবড়ে পড়ছে। আর প্রজন্ম-চত্বরের নেতাদের ধর্ম এবং নাস্তিকদের নিয়া লম্ফ-জম্ফের কারনে হেফাজতে ইসলামের মাধ্যমে মানুষের ধর্মীয় জন-বিস্ফোরনের সৃষ্টি। প্রজন্ম-চত্বরের উদ্ধ্যেশ্য নাস্তিকদের নিয়া বাড়াবাড়ি-বিশেষ করে নাস্তিক রাজীবের মৃত্যুর পরে তার লেখা সাধারন মানুষ জানার পরেও তারে নিয়া তামাশা(জানাজা এবং শহীদ উপাদী দেওয়া) করার আগে পয্ন্ত ঠিক ছিল-সাধারন আম জনতার সতস্ফুর্ত অংশগ্রহন ছিল।

যে-ই মাত্র এই আকাম টা করল, এবং সাথে সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ(জামাত শিবির বন্ধ করা আর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ এক জিনিস নয়) করার স্লোগান দিল এবং চিহ্নিত নাস্তিকদের(মুখে যতই তাদের মনে ধর্ম বিদ্ধেশী মনোভাব নাই বলেও) সরকারী নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করল সেই মাত্র প্রজনম্ম চত্বর সেই সাধারন মানুষের(তথাকথিত দেশপ্রেমীক আর তথাকথিত প্রগতিশীলরা বাদে) কাছেই বেজন্মা চত্বরে পরিনত হয়েছে। বর্তমান পেক্ষাপটে এবং লেবাছধারী প্রগতিশীলদের কাছে …প্রগতিশীল মানেই হলো ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা। আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয় কার ইচ্ছায় বা কার নির্দেশে এইসব আকামগুলা প্রজন্ম চত্বরে হয়েছে!! মুষ্টিময় বাম ঘরনার নাস্তিকদেরকে খুশি করতে যাইয়া হফাজতে ইসলামের এই জনবিস্ফোরন। ভুলে গেলে চলবেনা, এই দেশটা যেমন কপিতয় মুষ্টিময় প্রগতিশীল(যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্লগ এফ-বি ব্যাবহার কারী) আর কিছু তথাকথিত দেশপ্রেমিকদের, ঠিক একই ভাবে ঐসব সাধারন ধর্মীয় অনুসাশনে চলা মানুষ আর মাদ্রাসার( যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্লগ এফ-বি ব্যাবহার করতে না পারা) ছাত্রদেরও। প্রজন্ম-চত্বরের সুবাদে “জামাতে ইসলাম” নামক ইসলাম এবং দেশের কলংক প্রায় মিটিয়ে যাওয়া দশা হয়েছিল, এবং প্রায় তলানীতে চলে গিয়েছিল(রাজীবকে নিয়া বাড়াবাড়ি করার আগ পয্ন্ত) ।

কিন্তু প্রজন্ম-চত্বরের ইসলাম এবং নাস্তিকদের নিয়া বাড়াবাড়ির(মুখে যতই তাদের মনে ধর্ম বিদ্ধেশী মনোভাব নাই বললেও কাজের মাধ্যমে তার প্রকাশ-সাধারন মানুষ তো আর আন্ধা না) ফলে “জামাতে ইসলাম” নামক কলংকটা শেষ হতেও যাইয়া শেষ হলো না। লাগতেছে যে জামাত-শিবির এই যাত্রায় মনে হয় বাইচা যাবে , এর দায়ভার একান্তই প্রজন্ম চত্বরের নেতাদের আর তথাকথিত প্রগতিশীলদের কাধে বর্তাবে। তথাকথিত প্রগতিশীলরা বলে হেফাজতে ইসলাম নাকি জামাতে ইসলামের সৃষ্টি, তারা মনে করতেছে ব্লগ-ট্লগে লিখতে পারে বল তারা যা ইচ্ছা তাই গুল খাওযাতে পারবে সাধারন মানুষরে। নিজে চোখ বন্ধ করে রাখছে বল সবাই কি আন্ধা নাকি। হেফাজতে ইসলাম আর জামাতে ইসলামের আদর্শের দিক দিয়া আকাশ পাতাল পার্থক্য, পানি আর তেলের মতো।

অনেকে বলে জামাত হেফাজতের সাথে কেন সংহতি প্রকাশ করছে! আমার কথা কে সংহতি প্রকাশ করল তা তো বড় কথা নয়, কারন কাল যদি কোনো হিন্দু(তাদের ছোট করতেছিনা, শুধুমাত্র দৃষ্টি ভঙ্গির কথা বলতেছি) হেফাজতের সাথে সংহতি প্রকাশ করে তার মানে নিশ্চই হেফাজতে ইসলাম, হেফাজতে হিন্দু হয়ে যাবে না! জামাত শিবির হেফাজত থেকে ফায়দা নিতে চাইবে জানা কথা, আমার প্রশ্ন এই সুযোগ দিছে কে! প্রজন্ম-চত্বর-সরকার। অবাক লাগে প্রজন্ম-চত্বর আর হেফাজতে ইসলামের মৌলিক দাবীর সাথে কোনো দন্ধ থাকার কথা নয়, কিন্তু প্রজন্ম-চত্বরের বাড়াবাড়ি আর সরকারের রঙ্গোতামাশার জন্যে আজ এই বিশাল ফারাক। প্রজন্ম-চত্বর এখন তার উদ্দ্যেশ্য গুলো গুলাইয়া ফেলে মানুষের ধর্মীয় অনুভুতি নিয়া খেলা করতে যাইয়া আজকে বেজন্মা-চত্বর বানাইয়া ফেলছে। আমি দেখেছি প্রজন্ম চত্বর কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে। ব্লগে লিখালেখি, এফবিতে স্ট্যাটাস, পত্র-পত্রিকা আর সরকারের একান্ত চেষ্টায়(শেষ দিকে সরকারী মদদে বিরিয়ানী বিলানো) মোটামুটি এক বিষাল গনবিস্ফোরনের কায়দা-যা দরকার ছিল।

কিন্তু পরে বাড়াবড়ি করার ফলে মুখ থুবড়ে পড়ার দৃশ্য। আবার আমি দেখেছি সরকারের সৃষ্টি হরতাল, ব্লগে এবং এফবিতে হেফাজতের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস, পত্র-পত্রিকা আর টিভি চ্যানালদের অসোযোগিতা, যানবাহন চলাচল বন্ধ করার পরেও এক বিশাল গনবিস্ফোরনের(নিজ জিম্মায় খাওয়া) মুহুর্ত। সারা দেশের মাত্র বিশ শতাংশ হেফাজতে ইসলামের মতাদর্শ অনুসারীদের দারাই ঢাকায় এক ঐতিহাসিক জনবিস্ফোরন। অবাক লাগে যদি সরকার হরতাল সৃষ্টি না করত , যানবাহন চলাচল সাভাবিক থাকত তাহলে কি অবস্থা হোত এই জনবিস্ফোরনের। হেফাজতের বক্তিতা আমি শুনেছি দিগন্ত চ্যানালের সুবাধে, সেখানে তো দেখলামনা জামাত-শিবির বা সাইদীরে বা যুদ্ধাপরাধীদের নিয়া একটা কথাও।

যদিও বিএনপি ফায়দা নিতে চেয়েছিল(জানা কথা-চাইবে), অবস্থা দৃশ্যে তারাও হতাশ, হেফাজত কে তাদের মত করে ব্যাবহার করতে না পেরে। তারপরেও অনেক আবালের মতে হেফাজত জামাত-শিবিরের সৃষ্টি। আবালগুলা কি প্রমান করতে চায় যে জামাত-শিবিরের এত মানুষ, নাকি বলতে চায় ইসলাম রক্ষাকরী দলই মানে জামাত-শিবির নাকি ইসলাম মানেই জামাতে ইসলাম!!!! তাহলে তো চিন্তার বিষয়(আবালগুলার যুক্তিতে), এই দশা হলে তো জামাত-শিবিরকে বন্ধ করা সম্ভব না। এই সব গন্ডমুর্খদের সুবাদে জামাত নিজেকে অকারনে হেফাজতের নাম বেইচা পাওয়ার শো-আপ করার সুযোগ পাবে, কারন হেফাজত প্রথম থেকেই বলে আসছে তারা জামাত-শিবিরের বিপক্ষে। জনা শতেক গন্ডমুর্খদের নিয়ে “বর্তমানের” প্রজন্ম চত্বর থেকে শুনলাম তারা হেফাজতকে পতিহত করবে, এই করবে সেই করবে, তাদের হম্বি-তম্বির শেষ নাই, তারা বাল করছে।

খালি দেখছি কয়টা গন্ডমুর্খদের নিয়ে নাম সরবস্ব ব্যানার নিয়া শাহবাগের এইপার থেকে ঐ পারে লম্ফ জম্ফ করা। আর “ইমরান এইডস সরকার” নিয়া আর কি বলবো….আবালটা ঘরম কালেও কানধে চাদর ঝুলাইয়া ধর্মকে নিয়া ফাতরামী(মুখে ভাল ভাল কথা-কাজকাম উল্টো) কইরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাবসায়ী সমানে যেমনে পারতেছে সবার সামনে মুলা ঝুলার তালে ব্যাস্ত। আফসোস এইখানে যে, কিছু গন্ডমুর্খদের কারনে আজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধর্মীয় চেতনার সাথে অনেকটা সাংগর্সিক হয়ে গেছে। আমরা সাধারন মানুষ মানসিক ভাবে ধর্মীয় অনুভুতি নিয়ে খেলা আর যুদ্ধাপরাধীদের ফাসী নিয়ে টাল্টিবাল্টি সহ্য করবোনা। আন্দোলনের নামে জনবিস্ফোরোন নয় , সমাধান চাই ।

কারন চেতনাধারী আন্দোলন আমরা দেখছি, যেমন প্রজন্ম চত্বর_ প্রতিদিন স্লোগানের মাধ্যমে চিল্লাইতেছে, কিন্তু সরকার তার পক্ষ আছে বলে বলে কিছুই করে নাই, এখন খালি আছে বিরানী আর স্লোগান। কায্যকরিতা নাই। হেফাজতেরও একই অবস্থা হতে পারে !! সময়ের স্রোতে আর সব সম্ভবের এই দেশে পরে না আবার দেখতে হয় প্রজন্ম চত্বরের মত তারাও ক্ষমতালোভী কোনো দলের(বিরুধী দল) হয়ে ধাপ্পাবাজী করতেছে, যদিও এখন পযন্ত তা হচ্ছেনা, কিন্তু ভবিশ্যতে একেবারে যে এরকম গতে পারেনা-তা বলা যায় না। কারন.. “জামাত(বিএনপি) ধর্মের দোহাই দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়........... আওয়মী লীগ চায় মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিয়ে................... জামাত(বিএনপি) ধর্মান্ধ ….আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধান্ধ………… সব চোখওয়ালা অন্ধদের জন্য আজকের এই পরিনতি.......”। একজন বাঙ্গালী আর মুসলমান হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর ধর্মীয় চেতনা দুটোই শক্তিশালী হাতিয়ার।

কিন্তু হাতিয়ারকে ভুল জায়গায় ভুলভাবে বারবার ব্যাবহার করলে হাতিয়ার আর হাতিয়ার থাকেনা। আমরা তা চাইওনা। সবশেষে প্র্রজন্ম চত্বর আর হেফাজতে ইসলাম কে বলতে ইচ্ছে হয়…আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করোনা, আমাদের ধর্মবিশ্বাস বেচে দিওনা। আমাদের শ্বাস নিতে দাও। আমরা সাধারন মানুষ আজ ক্লান্ত, বিধ্বস্ত, বিভ্রান্ত।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.