আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা তোমাদের ভুলিনি….

দিনটি ছিল গত বছরের ২৫ জুলাই বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পুত্রবধূ ও কংগ্রেস পার্টির সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর হাতে তুলে দেন ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’। আর এই সম্মাননা জানানোর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশিদের সম্মানিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। যা একটি দেশের কৃতজ্ঞতাবোধ, মূল্যবোধকে বিশ্ব দরবারে ইতিবাচক ভাবে ফুটিয়ে তুলে। কারণ, রাষ্ট্র কি? কি দ্বারা গঠিত হয় একটি রাষ্ট্র? কিই বা এর প্রাণ? এই সকল প্রশ্নের উত্তর গুলো একটাই। মানুষ, কেবলমাত্র এবং একমাত্র মানুষই হলো রাষ্ট্রের প্রাণ ভুমরা।

যদি একজন মানুষ তার দূরদিনে, বিপদের সময় তাকে সাহায্যকারী সহযোগীতাকারী ব্যক্তিকে বন্ধুকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে, পারে তাকে বার বার স্মরণ করতে তা হলে একটি রাষ্ট্র কেন তার সৃষ্টির সময়, তার বিপদে, দূরদিনে, একাকিত্বের সময় যাকে যাদেরকে অকৃত্রিম ভাবে পাশে পেয়েছে তাদেরকে সম্মাননা প্রদান করতে পারবেনা? কৃতজ্ঞতাবোধ, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কখনও কাউকে ছোট করেনা বরং বিশ্ব দরবারে তার মহান হৃদয়ের আন্তরিকতাকে, ভালোবাসাকে তুলে ধরে। আজ সত্যিই আনন্দে আমাদের চোখে পানি এসে যায়। কারণ, যে ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানগুলো সেদিন আমাদেরকে একটি নতুন প্রভাত এনে দিতে সহায়তা করেছিল, দাড়িয়েছিল নি:স্বার্থ ভাবে, কুন্ঠা বোধ করেনি অকাতরে বিলিয়ে দিনে নিজের জীবন, আজ তাদেরকে তাদের প্রতি আমাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা জানাতে পেরে আমরা সত্যিই গর্বিত। আর যাদেরকে তাদের জীবন দসায় আমরা জানাতে পারিনি কোন প্রকার সহানুভূতি বাড়িয়ে দিতে পারিনি কোন সাহায্যের হাত, আমরা শুধু তাদের সম্মরণে একাকি অশ্রু ঝরাতে পারি। আমরা বলতে পারি আমার বন্ধু আমরা তোমাকে তোমার পাশে দাঁড়াতে পারিনি সেই দিন।

তবে আজ দেখ তুমি চেয়ে আমরা দাঁড়িয়েছি তোমাদের পাশে। ওরা কেউ ভুলেনি তোমাদেরকে আর না আমাদের নতুন প্রজন্ম। আজ স্বাধীনতার ৪০ বছর পর আমি বিশেষ ভাবে স্মরণ করতে চাই সেই বীর অকুতভয়ী মহান ব্যক্তিটিকে, যিনি নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে আমাদের পাশেতো দাঁড়িয়েছিল কিন্তু আমরা তার বিপদে তাঁর পাশে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াত পারিনি। আমরা লজ্জিত আমার বন্ধু………… তিনি হচ্ছেন “সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের নৌবাহিনীর কর্মকর্তা রিয়ার অ্যাডমিরাল জুয়েনকো”। এই অকৃত্রিম বন্ধুটি 'বাংলাদেশ, রিমেম্বার মি' (বাংলাদেশ, আমায় মনে রেখো) গ্রন্থের মাধ্যমে এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে নিজের অনন্য অবদানের কথা মনে রাখার আকুতি জানিয়েছিলেন।

জুয়েনকো সেই বিদেশি বীর, যিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে এসে চট্টগ্রাম বন্দরে মাইন অপসারণকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অথচ এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কোন অর্থ সাহায্য চাননি তিনি ও তার দল। তিনি ও তার বাহিনী যতদিন এই কাজে নিযু্ক্ত ছিলেন তারা সাধারণ বাঙালীরা যে ভাবে খাদ্য গ্রহণ করে সেই ভাবে খেয়েছেন। এমনও সময় গেছে তারা সারাদিন কাজ শেষে শুধু রুটি আর পানি খেয়ে রাত্রি যাপন করেছেন। কোন অভিযোগ করেননি না করেছেন কোন আবদার।

শুধু মাত্র আমাদের জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর আবাসভূমি রেখে যেতে বিন্দু মাত্র কুন্ঠাবোধ করেননি। আর সেই চরম ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করতে গিয়ে গুরুতর আহত হতে হারিছিল তাকে। যার ফলে তিনি তার শারীরিক সক্ষমতা হারান এবং, অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে তার চাকরি থেকেও। শেষ বয়সে নিজের দুর্দিনে নিজের অবদানের কথা লিখে বাংলাদেশ সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদনও জানিয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন সে মানুষ গুলোর জন্য এতো কিছু করলাম হয়তো তারা আজ আমার পাশে এসে দাঁড়াবে।

কিন্তু হায়! লজ্জা সমগ্র বাংলাদেশের জনগণের সেই বড় মুখটাকে ছোট করে দিল তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার। কোনো বিদেশিকে সাহায্য দেওয়ার মতো তহবিল না থাকার অজুহাতে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার জুয়েনকোর আবেদন ফিরিয়ে দিলেন। সেই বীর জুয়েনকো আজ বেঁচে নেই। বিনা চিকিৎসায় তাঁকে মরতে হয়েছে। তিনি নিজের জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগে মিনমিন করে শুধু বলে গেলেন…আমি কি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছিলাম বাংলাদেশের জনগণকে সাহায্য করতে গিয়ে? এই প্র্রশ্ন রইল সমগ্র জাতির বিবেকবান ছাত্র সমাজের কাছে? আশা করি তোমরা এর সঠিক জবাবটি দিবা।

বাংলাদেশ আজ প্রমাণ করতে যাচ্ছে, স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও অ্যাডমিরাল জুয়েনকোকে ভোলেনি এ দেশ। জুয়েনকো ও তাঁর দলকে 'মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা'য় ভূষিত করছে বাংলাদেশ। হে বন্ধু আমার জানি এটা অতি নগন্ন তোমরা যা দিয়েছো আমাদের তার তুলনায়। সায়মন ড্রিংয়ের সেই একাত্তর: মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সুহৃদ সায়মন ড্রিং। সায়মন ড্রিং বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর এবং ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাস তাঁর জীবনে অত্যন্ত স্মৃতিময় এক সময়কাল।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া অঞ্চলে। কিন্তু ঢাকায় এসে তিনি পৌঁচিয়েছেন ৬ মার্চ। ঠিক তার পরের দিনই রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিব সেই ঐতিহাসিক ভাষণটি দিলেন। তার ভাষ্য মতে, আমি সেই জনসভার মঞ্চে একদম পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমি এক হরফ বাংলা ভাষা জানি না; কিন্তু বিপুল জনসমাবেশ আর মুজিবের ভাষণের প্রতি তাদের যে প্রতিক্রিয়া লক্ষ করলাম, তাতে আমার মনে হলো বিশাল একটা ব্যাপার এ দেশে ঘটছে এবং ঘটতে যাচ্ছে।

পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার জন্য সেটা ছিল খুবই ভালো একটা পরিচয়মূলক ঘটনা (ইন্ট্রোডাকশন)। তার পরের ঘটনাগুলো তো আমার চোখের সামনেই ঘটতে থাকল। তৎকালীন সময়ে ২৭ বছর বয়সী এই দুঃসাহসী সাংবাদিক নিজের চোখের সামনে দেখেছিলেন ইতিহাসের জঘন্যতম এক গণহত্যার ভয়াবহতা। তিনি আরো বলেন, ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের 'এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম।

জয় বাংলা'- ঘোষণা পুরো জাতিকে সংঘবদ্ধ করেছিল। সায়মন ড্রিং বলেন, 'একাত্তরের ২৫ মার্চ আমরা বিদেশি সাংবাদিকরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করেছি। ২৭ মার্চ কারফিউ তুলে নেওয়ার পর আমরা যে কয়েকজন সাংবাদিক বাইরে গিয়ে প্রামাণ্য তথ্য সংগ্রহ করি, তাঁরাই প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। আজ আমি গর্বিত। কারণ আমি বাংলাদেশের গৌরবময় বিজয়ের অংশীদার।

' সায়মন ড্রিং বলেন, 'আমার সঙ্গে কাজ করেছিলেন ফ্রান্সের একজন ফটো সাংবাদিক। তিনি পরে ভিয়েতনাম যুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে মারা যান। বাংলাদেশ সরকার তাঁকেও যেন সম্মান জানায়। ' ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করছিলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিং। পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার প্রচ্ছন্ন হুমকির মুখেও তিনি হোটেল ছাড়তে রাজি ছিলেন না।

গা ঢাকা দিয়েছিলেন হোটেলের ছাদে। ২৭ মার্চ সকালে কারফিউ তুলে নেওয়ার পর সায়মন বেরিয়ে পড়েন ঢাকার রাস্তায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফরাসি আলোকচিত্রী মিশেল লরা। তাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরিচালিত ২৫ মার্চ রাতের ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করেন শহরজুড়ে। ৩০ রিল ছবি তুলেছিলেন মিশেল।

তাঁর টুকে নেওয়া নোট কোমরের বেল্টে আর মোজার ভেতরে গুঁজে নিয়েছিলেন সায়মন। তারপর চেপে বসেন পশ্চিম পাকিস্তানগামী বিমানে। করাচি থেকে তিনি বিমানে চলে যান ব্যাংকক। সেখান থেকেই ৩০ মার্চ প্রকাশিত ‘ট্যাংকস ক্রাশ রিভল্ট’ শিরোনামের সাড়া জাগানো প্রতিবেদনটি টেলিগ্রাফকে পাঠান তিনি। তাঁর সেই প্রতিবেদনে তিনি লিখেন, ‘ইন দ্য নেম অব “গড অ্যান্ড এ ইউনাইটেড পাকিস্তান”, ঢাকা ইজ টুডে আ ক্রাশড অ্যান্ড ফ্রাইটেনড সিটি।

আফটার টোয়েন্টি ফোর আওয়ার্স অব রুথলেস, কোল্ড ব্লাডেড শেলিং বাই দ্য পাকিস্তানি আর্মি অ্যাজ মেনি অ্যাজ সেভেন থাউজেন্ড পিপল আর ডেড...’ (‘আল্লাহ এবং পাকিস্তানের অখণ্ডতার’ নামে, ঢাকা আজ বিধ্বস্ত ও আতঙ্কের এক নগর। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঠান্ডা মাথার নির্মম হামলায় ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজারের মতো লোক নিহত হয়েছে...। ) ২৯ মার্চ সায়মন ডিং আর মিশেল ঢাকা ছেড়ে চলে যায়। তিনি ব্যাংককে গিয়ে টেলিগ্রাফ-এর জন্য একটা প্রতিবেদন পাঠায়। সেটা ৩০ মার্চ ছাপা হয়।

ঢাকার হত্যাযজ্ঞের বিবরণ ছিল সেই প্রতিবেদনে। ৩০ মার্চ ১৯৭১ ছাপা হওয়া তাঁর সেই প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার ইকবাল হলের (এখন জহুরুল হক হল) গণহত্যার তথ্যও স্থান পায়। টেলিগ্রাফে ছাপা হওয়া ’৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর জঘন্যতম গণহত্যার ‘দলিল’ সায়মনের ওই প্রতিবেদন বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার অন্যতম লক্ষ্য। মাঝরাতের পরপরই পাকিস্তানি সেনারা প্রবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। সেনারা ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি দখল করে সেটিকে ঘাঁটি বানিয়ে ছাত্রাবাস এলাকায় গোলা ছুড়তে থাকে।

ইকবাল হল ছিল সরকারবিরোধী ছাত্রসংগঠনের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেদিন মর্টারের শেল আর মেশিনগানের অবিরাম গুলিতে শুধু ইকবাল হলেই নিহত হয়েছিল ২০০ নিরপরাধ ছাত্র। টেলিগ্রাফের সেই প্রতিবেদনে ২৫ মার্চের ঢাকার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে সায়মন লিখেছিলেন, ‘নারী ও শিশুরা ঘরের ভেতর জীবন্ত দগ্ধ হয়েছে। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ঘর থেকে বের করে একসঙ্গে বাইরে জড়ো করে মারা হয়েছে। বাড়িঘর, বাজার, দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আর সব ভবনের মাথায় ওড়ানো হয়েছে পাকিস্তানি পতাকা। ’ পরবর্তীতে এই সাংবাদিক আবার বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন (যুদ্ধকালীন সময়ে)। কিন্তু টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষ তাকে আর আসতে দেয়নি। শেষে বিরক্ত হয়ে আমি টেলিগ্রাফ-এর চাকরি ছেড়ে দিয়ে নভেম্বর মাসে কলকাতায় চলে আসি। ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে সানডে টাইমস, টাইমসসহ লন্ডনের আরও কয়েকটি পত্রিকার জন্য কাজ শুরু করে।

তাঁর ভাষ্য মতে, ১৬ ডিসেম্বর আমি মিত্রবাহিনীর ট্যাংকে চড়ে মুক্ত ঢাকায় প্রবেশ করি। বিজয়ের আনন্দে উল্লসিত মানুষ দেখেছি, সেই আনন্দে নিজেও অংশ নিয়েছি। বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিব যখন স্বদেশে ফেরেন, তখন বিমানবন্দর থেকে তাঁকে বহনকারী সেই ট্রাকে আমিও ছিলাম। দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ, জর্জ হ্যারিসন এণ্ড হিজ ফ্রেণ্ডস্ জর্জ হ্যারিসন, সারা বিশ্বের কাছে দুনিয়া কাঁপানো বিটলস ব্যান্ডের একজন সদস্য। কিন্তু প্রতিটি বাংলাদেশির কাছে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা।

অস্ত্র হাতে নন, গীটার আর গান দিয়ে যিনি যুদ্ধ করেছেন খুব দূরের অচেনা কিছু মানুষের জন্য। আজ লিখব সেই মুক্তিযোদ্ধার বীরগাঁথা। দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ, ১৯৭১ সালে মেডিসন স্কয়ারে এই শিরোনামে যুদ্ধ কবলিত বাংলাদেশকে রক্ষার এবং সাহায্যের হাত বাড়াতেই এই কনসার্ট আয়োজিত হয়েছিল। শ্রদ্ধেয় রবিশংকর এর অনুরোধে কিংবা উৎসাহেই কনসার্টটি আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিট জেনারেশনের সৃষ্টিকারী বিটলস-এর জর্জ হ্যারিসন। সেই কনসার্ট হয়ে গেল কিংবদন্তী।

‘১৯৬৫ সালে এক রাতে রবিশংকরের সঙ্গে পরিচয় হয় জর্জ হ্যারিসনের। জর্জ বছর তিনেক সেতার নিয়ে অনুশীলন করেছিল রবিশংকরের কাছে। রবি সংকরের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সঙ্গে জর্জের আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে রবির যন্ত্রণার সঙ্গী হয়ে কনসার্টের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিল জর্জ। জর্জ ও রবি বলেছিলেন বাংলাদেশের জন্য তাদের আরও কিছু করার ছিল।

কনসার্টটির কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একটা গভীর আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল জর্জ হ্যারিসনের। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা আর গণহত্যা তাঁর অন্তরকে গভীরভাবে স্পর্শ করে গিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে হ্যারিসনের স্ত্রী অলিভিয়া বলেছিলেন, ‘জর্জের কাছে শুনেছি, একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা, ধ্বংস আর হানাহানি বিপর্যস্ত করে তুলেছিল রবি শংকরকে। এ নিয়ে মনঃকষ্টে ছিল সে। অন্যদিকে নিজের রেকর্ডিং নিয়ে ব্যস্ত ছিল জর্জ।

সত্তরে বিটল্স ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে ক্যারিয়ার গড়তে সে মনোযোগী হয়ে ওঠে। এ সময় রবিশংকর জানায়, বাংলাদেশের জন্য তহবিল সংগ্রহে একটি কনসার্ট করতে চায়। এ উদ্যোগে সে জর্জকে পাশে পেতে চায়। জর্জেরও মনে হলো, এ কাজে তার নিযুক্ত হওয়া উচিত। তার ডাকে অনেকে সাড়া দেবে, একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোর মাঝামাঝি সময়ে ওই কনসার্ট আয়োজন সময়োপযোগী ছিল।

জর্জ তখন বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটন, বিলি প্রেস্টন, রিঙ্গো স্টার, লিওন রাসেল, ওস্তাদ আলী আকবর, ওস্তাদ আল্লা রাখা ও রবি শংকরকে নিয়ে কনসার্ট আয়োজন করে। ওই কনসার্ট দিয়েই বাংলাদেশের সঙ্গে জর্জের বন্ধন শুরু। ’ এইটি দেশের স্বাধীনতার সমর্থনে, এই দেশে চলমান জেনোসাইডের প্রতিবাদে সেই সময়ের সারা বিশ্ব কাপানো সংগীত শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন এই কনসার্টে। মূলত শরণার্থীদের আর্থিক সহযোগিতা এবং স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের সাহয্যার্থে এই কনসার্টের উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেতার সম্রাট রবিশংকর। জর্জ হ্যারিসনের 'বাংলাদেম' গানেই ফুটে উঠেছে এই কনসার্ট এর কারণ এবং আমাদের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা।

যা যারা বিশ্বকে জর্জ হ্যারিসন শুনিয়েছেন, জানিয়েছেন। তার সেই উদ্যোগ শুধু আর্থিক সহযোগিতাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং সে বাংলাদেশের অস্তিত্বের কথা, এখানে চলমান গণহত্যার কথা, লক্ষ লক্ষ দেশান্তরী শরণার্থীদের কথা সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছেন। যা পাকিস্তানের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে এবং বিশ্ব জনমত গঠনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সবচেয়ে মজার এবং অবাক করা বিষয়টি হলেো, সেই সময়ের আমেরিকান সরকার বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করলেও মার্কিন জনমত ছিল বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে। যার অন্যতম কারণ এই কনসার্ট।

জাতিসংঘের ইউনিসেফ জর্জ হ্যারিসনের সেই অবদানের স্মরণে একটি বিশেষ ফান্ড তৈরী করেছে, 'দ্য জর্জ হ্যারিসন ফান্ড ফর ইউনিসেফ'। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪০ বছর পর এই সকল মহান ব্যক্তিদেরকে সম্মান জানাতে পেরে আজ সারা দেশ গর্বিত। সুয়োশি নারা আমি অর্ধেক বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের এই বিদেশী বন্ধু-সুহূদরা বাংলাদেশকে কতটা আপন করে নিয়েছিলেন সুয়োশি নারা তার উজ্জ্বল উদাহরণ। একটি দেশের জন্মলাভের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সৌভাগ্যে গর্বিত বন্ধুদের অনেকেই। গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ’৭১-এর কথা বলতে গিয়ে কেউ কেউ ফিরে যান ৪০ বছর আগের সেই আনন্দ-বেদনা ভরা দিনে।

বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে ইংরেজিতে প্রশ্ন করতেই মৃদু হেসে অধ্যাপক সুয়োশি নারা বললেন, “আমি বাংলা জানি। বাংলায় প্রশ্ন করুন। ” তারপর নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি বাংলাদেশে নতুন নই। প্রায়ই আসা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট আমার হাতেই গড়া।

১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেছি। বঙ্গবন্ধু যখন মারা যান, তখন আমি ঢাকাতেই ছিলাম। ’ জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ এ অধ্যাপক মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তানে ছিলেন। যুদ্ধের সময় টোকিওতে কাজ করছিলেন। এমন সময় যুদ্ধের খবর পান।

খবরের কাগজে বাংলাদেশী শরণার্থীদের বেদনার্ত ছবি দেখে হৃদয়ে নাড়া দেয় তার। গঠন করেন জাপান-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি। ১২০ জন সহকর্মীকে যুক্ত করেন এর সঙ্গে। সুয়োশি নারা জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জাপান-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি গঠন করেন। সমিতির মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে তা দিয়ে ত্রাণসামগ্রী কিনে নিয়ে যান কলকাতার সল্টলেকের শরণার্থী শিবিরে।

ত্রাণ কার্যক্রম চলাকালে দু’বার কলকাতায় আসেন শরণার্থী শিবিরে ত্রাণ বিতরণে। সুয়োশি নারা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি অনেক দূর এগিয়েছে। আরও এগোতে হবে। এ জন্য মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা জরুরি। মানবতাবিরোধী অপরাধের যে বিচার শুরু হয়েছে, তা আরও আগেই শুরু হওয়া উচিত ছিল।

আমরা আশা করি এই বিচার হবে। তাকামাসা সুজুকি আরেক বন্ধু জাপানের তাকামাসা সুজুকি। তিনিও মক্তিযুদ্ধকালে সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠন ও ত্রাণ সহায়তার জন্য কাজ করেন। জাপানি ভাষায় সঙ্গী গাইডকে তিনি বলে যাচ্ছিলেন তার যুদ্ধকালীন স্মৃতির কথা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি আরও বেশ কয়েক বার বাংলাদেশে এসেছেন।

তবে এবারের আসাকে ভিন্নভাবে দেখছেন তিনি। যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষের জন্য পরম বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এবার বাংলাদেশ তার সেই বন্ধুত্বের আনুষ্ঠানিক মূল্যায়ন করছে। সুজুকি বলেন, এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। তিনি বলেন, আমি কোন ব্যক্তির জন্য বা দেশের জন্য কাজ করিনি।

আমি কাজ করেছি মানবতার জন্য। আমাকে যে সম্মান দেয়া হচ্ছে, সেটিও মানবতাকেই সম্মান করা। লিয়ার লেভিন : মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগুলো এখনো আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। ওই সব স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। সেই স্মৃতিগুলো কষ্টের, সীমাহীন দুঃখের।

শরণার্থীদের কষ্ট, দুর্ভোগ দেখে কেঁদেছি অনেক। ওই স্মৃতি আমাকে আবেগপ্রবণ করে তোলে। ' কথাগুলো বলতে বলতে লিয়ার লেভিনের চোখের কোণে ছলছল করছিল পানি। বাঙালি না হয়েও বাঙালি জাতির জন্য, এ দেশের জন্য এত ভালোবাসা কারো মধ্যে থাকতে পারে, তা লেভিনকে না দেখলে বিশ্বাস হয় না। একাত্তরের অগি্নঝরা দিনে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন বাংলার মুক্তিকামী জনগণের পক্ষে।

স্বাধীনতার ৪১ বছর পর আজ অন্যান্য বিদেশি বন্ধুর সঙ্গে তাঁকেও রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দিচ্ছে সরকার। সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে আমার পরিচয়টি মূলত ১৯৭০ সালের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়। আমি তখন আমেরিকান টেলিভিশনে কাজ করি। ঘূর্ণিঝড়-দুর্গত বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য তখন ৩০ সেকেন্ডের একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করেছিলাম, যা যুক্তরাষ্ট্রে প্রচারিত হয়েছিল। পরে একাত্তরে চলে আসি ভারতে।

শরণার্থী ক্যাম্পগুলো ঘুরে ধারণ করি বিভিন্ন ফুটেজ। ' ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ঘটনা সেলুলয়েডে বন্দি করেন। এবং ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে শরণার্থী শিবিরের মর্মস্পর্শী দুর্দশা তুলে ধরতেন চিত্রপরিচালক লিয়ার লেভিন। তিনি বলেন, আমি ক্যাম্প থেকে ক্যাম্পে ঘুরে বেরিয়েছি মুক্তি সেনাদের বিনোদন দেয়ার জন্য। আমার উদ্দেশ্য ছিল এসব মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা।

পাকিস্তানি সেনাদের হত্যা-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করা। কারণ তখন বেশিরভাগ মানুষ অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছিল। শিশুরা মারা যাচ্ছিল। এসব দৃশ্য আমি কখনো ভুলতে পারি না। প্রয়াত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ নিউ ইয়র্কে তাঁর বাসা থেকে ওই ছবিগুলো উদ্ধার করেন এবং পরবর্তী সময়ে সেই ছবির ভিত্তিতেই নির্মাণ করেন 'মুক্তির গান' চলচ্চিত্র।

লিয়ার লেভিন বলেন, 'সীমান্তে বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছি। অর্থ সরবরাহ করেছি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যও। ' লিয়ার বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে এক ধরনের স্বতঃস্ফূর্ততা রয়েছে। এই দেশের জনগণের জয় হবেই। আমি উচ্চারণ করতে চাই সেই সেস্নাগান 'জয় বাংলা'।

বিমান মল্লিক: বিমান মল্লিক। বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটের নকশাকার। লন্ডনে বসে তিনি বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটের নকশা করে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ এই যুদ্ধবন্ধুকেও এবার সম্মাননা জানাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ঘুরে ঘুরে তিনি দেখছিলেন সে সময়ের স্মৃতি।

সম্মাননার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যখন এই সম্মাননার কথা প্রথম আমার মেয়েকে জানাই, তখন প্রথমেই সে বলে- বাবা তুমি তো অনেক আগেই বড় সম্মান পেয়ে গেছ। তুমি বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটের নকশা করেছো। এর চেয়ে বড় সম্মাননা আর কি হতে পারে? তার ওপর আমি আনুষ্ঠানিভাবে সম্মান পাচ্ছি। এটিও আমার জন্য অনেক গৌরবের। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে এই যুদ্ধবন্ধু বলেন, কেউ অন্যায় করলে তার বিচার যথাযথ আইনে হবে।

তবে কাউকে ক্ষমা করে দেয়াটা হলো সবচেয়ে ভাল। ডা. রথীন দত্ত : মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সার্জন অধ্যাপক ডা. রথীন দত্তের ভূমিকাও ছিল অতুলনীয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন ত্রিপুরায়। সেখানকার চিফ সার্জন ছিলেন। রেড ক্রসের সেক্রেটারিও ছিলেন।

তিনি বলেন, শরণার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য সরকার আমাকে দায়িত্ব দেয়। যুদ্ধের সময় ১৫ লাখ মানুষ ছিল ত্রিপুরায়। শরণার্থী ছিল ১৬ লাখ। কিন্তু সব মিলিয়ে নিবন্ধন হওয়া শরণার্থী ছিল ২৪ লাখ। ৮ লাখ শরণার্থী আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ছিল।

কিন্তু সব সাহায্য তারা নিত। তারা ক্যাম্পে থাকত না। রথীন দত্ত বলেন, আমি একা ২ হাজার ২৫০টি মেজর অপারেশন করেছি। সব মিলিয়ে ১০ হাজারের অধিক অপারেশন হয়েছে। এ খবরগুলো কেউ জানে না।

আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় পাকিস্তান আর্মির বাঙালি এক লেফটেন্যান্ট গুরুতর আহত হয়ে আমার চিকিৎসা নিয়েছিলেন। ঢাকায় এসে তার সঙ্গে দেখা হলো। জিজ্ঞাসা করলাম, কেমন আছেন? তিনি বললেন, আপনি কে? আমি আগরতলা কখনো যাইনি। পরদিন তিনি আমার সঙ্গে দেখা করে বললেন, আমার ভুল হয়ে গেছে। এ আচরণের পর আমি কখনো কাউকে বলিনি, আমি বাঙালিদের চিকিৎসা করেছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার একদিন দেখা হয়েছিল। যুদ্ধের পর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে খুব আদর-যত্ন করেছিলেন। এরপর ফিরে এসেই শুনলাম তিনি নেই। র্যা লফ জ্যাকব : মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মিত্রবাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড জেনারেল (অব.) র্যা লফ জ্যাকব বলেন, ১৬ ডিসেম্বর তখন ঢাকায় পাকিস্তানের ২৬ হাজার সেনা ছিল, আমাদের ছিল ৩ হাজারের মতো।

তারপরও জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণের কথা মেনে নেন। আমি নিয়াজিকে বলেছিলাম আপনারা তাদের সামনেই আত্মসমর্পণ করেবেন যাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। এর পরই রেসকোর্সে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে কোন সেনাবাহিনীর একমাত্র প্রাকাশ্যে ও জনসম্মুখে আত্মসমর্পণের ঘটনা। তিনি বলেন, তবে এই জয়ের জন্য আমি বাংলাদেশের মানুষের অবদানকেই গুরুত্ব দেই।

কারণ সমগ্র জাতি পাকিস্তানিদের নৃশংসতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠেছিল। দারুণভাবে মুক্তিবাহিনী লড়াই করেছিল। আর ভারতীয় বাহিনীর কাজ করেছিল বাংলাদেশের এ অর্জনে সহায়তার জন্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে এবং তা হওয়া দরকার। মাইকেল বারনেস: বৃটেন থেকে সম্মাননা নিতে এসেছেন সাবেক এমপি মাইকেল বারনেস।

স্বাধীনতার পর আরও একবার তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বিশাল ক্যানভাসের ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, কি বিশাল মানুষ। বড় মন ছিল তার। তিনি বড়ো ভালবাসতেন দেশের মানুষকে। বৃটিশ এমপি হিসেবে স্বাধীনতার পর একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন বারনেস।

সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার সেই সময়ের স্মৃতি এখনও মনে পড়ে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.