আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টাইগারদের বিজয়!

বিজয়! কথাটি শুনে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কেননা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন ক্রিকেট বিশ্বের যে কোন দলকে নাকানি-চুবানি খাইয়ে সহজেই বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারে। বিজয়! এইতো সবে মাত্র শেষ হওয়া এশিয়া কাপে টাইগাররা ফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে পরাজিত হলেও বিজয় হয়েছে মূলত টাইগারদেরই? কেননা এতো দিন ক্রিকেট বিশ্বের সেরা দলগুলো বাংলাদেশকে নিয়ে সমালোচনায় মুখর ছিলো, তারাই এখন টাইগার স্ত্ততিতে ব্যস্ত। যেমন ধরুন না ক্রিকেটের বরপু্এ ব্রায়ান লারার কথাটিই। তিনি বলেছেন, ‘‘ক্রিকটে বিশ্বের নয়া আতংকের নাম বাংলাদেশ’’।

আর আফ্রিদি কিংবা চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক মিসবাহ-তো শিরোপা জয়ের পর বলেই ফেললেন, ‘‘আসলে আমরা কাপ জিতলেও সত্যিকারের বিজয়ী কিন্তু বাংলাদেশই’’। যদিও ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে নতুন করে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। পাকিস্তানের আইজাজ চিমা ইচ্ছাকৃতভাবে মাহমুদুল্লাহকে বাঁধা দেওয়ায় দুই রান নিতে পারেনি মাহমুদুল্লাহ। আইন অনুযায়ী সে বলটি ডট ও প্রতিপক্ষ দলকে ৫ রান যোগ করে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও আম্পায়ার তা মানেননি। এই নিয়ে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে আপীল করেছে বিসিবি।

যদি টাইগারদের পক্ষে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল রায় দেয় তবে একাদশতম কাপের চ্যাম্পিয়নতো বাংলাদেশই। যদিও প্রথমাবরের মতো এশিয়া কাপের আসরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে লাল-সবুজের বিজয় নিশান উড়িয়েছে বাংলাদেশ। বিজয়! টাইগারদের ক্রিকেট বিশ্বে আগমনটা এদেশের মানুষের জন্য বিজয়’ই ছিনিয়ে এনেছে। কেননা প্রতিপক্ষ দলকে হারিয়ে টাইগারা যখন সারা বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকা উঁচু করে মেলে ধরে তখন এদেশের তথা সমগ্র বাঙালীদেরইতো বিজয় নিশান পতাকা ওড়ে। টাইগারার এখন যে কোন দলের জন্যই আতংকের নাম।

তবে এই আতংক সৃষ্টি করতে পারাটা কিন্তু এতোটা সহজ ছিল না। সেই ২০০৪-০৫ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম জয় পায় টাইগারারা। তারপর ০৫-০৬ কেনিয়া ও ২০০৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্টে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে আনে টাইগারারা। টেস্টে জয়ের পাশাপশি ২০০৪-০৫ মৌসুমে একদিনের আন্তজার্তিক ম্যাচে আবারো টেস্টে হারানো প্রতিপক্ষ সে জিম্বাবুয়েকেই ৫ ম্যাচ সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনে টাইগারা। এরপর ০৫-০৬ মৌসুমে কেনিয়াকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা ও সেই সাথে অস্ট্রেলিয়ারমতো বিশ্বের এক নম্বর দেশকেও হারিয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে টাইগাররা।

টাইগাররা ভারত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো শক্তিশালী দলকেও পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। তবে টাইগাররা সবচেয়ে বেশি বিজয় উৎসব করেছে এবারের একাদশতম এশিয়া কাপের আসরে। ঘরের মাটিতে এশিয়া কাপে টাইাগারদের লক্ষ্য ছিল যে কোন একটি দলকে পরাজিত করা। কিন্তু তারাই কিনা উদ্ধোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে আর একটুর জন্য হারাতে না পারলেও পরের ম্যাচে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারিয়ে ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করে। একদিনের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ারই শুধুমাত্র রেকর্ড আছে পরপর তিন ম্যাচে টেস্ট খেলুড়ে তিন দেশকে পরাজিত করার।

সেই রেকর্ডটা আরেকটু হলেই ছুঁয়ে ফেলতো টাইগাররা। টাইগারদের এই অসাধারণ নৈপুন্য আর অকুতোভয় ইনিংস কি টাইগারদের বিজয় ছিনিয়ে আনেনি? টাইগারদের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩টি রানের ইনিংস: ১: ২০০৯ সালের ১১ আগষ্ট বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে টাইগারার ৩২০ রান সংগ্রহ করে। ২: ১৬ আগষ্ট ২০০৯ প্রতিপক্ষ আবারো জিম্বাবুয়ে। সে ম্যাচে ৪৭.৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ ৩১৩ রান। ৩: আর টাইগাররা তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন বগুড়াতে ১৭ মার্চ ২০০৬।

সে ম্যাচে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩০১ রান সংগ্রহ করে তারা। টাইগারদের টি-২০ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩টি রানের ইনিংস: ১: ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। ১৯.৫ ওভারে সব’কটি উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান। ২: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সে ম্যাচে টাইগাররা ১৮ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে। ৩: আর তৃতীয় ম্যাচটি ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বরে। সে ম্যাচে টাইগারার ২০ ওভারে ১৬১ রান করেছিল ৭ উইকেটের বিনিময়ে। সফলতম অধিনায়ক: বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এখন পর্যন্ত সফলতম একদিনের ম্যাচের অধিনায়ক বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। বাশারের নেতৃত্বে ২০০৪-০৭ মৌসুমে ৬৯টি ম্যাচ খেলে টাইগারার জয় পেয়েছে ২৯টি ম্যাচে।

এছাড়া সাকিব আল হাসান ও আশরাফুল রয়েছেন পরবর্তী দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্খানে। সাকিব ৪৭ ম্যাচে জয় পেয়েছেন ২২টি আর আশরাফুল ৩৮ ম্যাচে নেতৃত্বে দিয়ে ৮টি ম্যাচে জয় ছিনিয়ে এনেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন যারা: টেস্ট ম্যাচ: নাঈমুর রহমান (২০০০-০১), খালেদ মাসুদ (২০০১-০৪) , খালেদ মাহমুদ (২০০৩-০৩), হাবিবুল বাশার (২০০৪-০৭), মোহাম্মদ আশরাফুল (২০০৭-০৯), মাশরাফি মুর্তজা (২০০৯-০৯), সাকিব আল হাসান (২০০৯-১১), মুশফিকুর রহিম (২০১১-১২)। ওয়ানডে ম্যাচে: হাবিবুল বাশার (২০০৪-০৭), সাকিব আল হাসান (২০০৯-১১), আশরাফুল (২০০৭-০৯), খালেদ মাসুদ (২০০১-০৬), এছাড়াও, আমিনুল ইসলাম, আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ, মুশফিকুর রহিম, গাজী আশরাফ, মাশরাফি, নাঈমুর রহমান, মিনহাজুল আবেদীন. রাজিন সালেহ। (সূত্র:ক্রিকইনফো) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।