আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভিন্ন রকমের গণজাগরণ

বিবর্ণ আরেফীন এ ছিল এক ভিন্ন রকমের গণজাগরণ। ঢাকার মানুষ এত বড় গণসমাবেশ আগে কখনো দেখেনি। একজন মানুষের পক্ষে গোটা সমাবেশ একসাথে দেখা তো সম্ভব ছিলই না; উঁচু ভবনের উপর থেকে টেলিভিশন ক্যমেরায়ও সে দৃশ্য পুরোটা ধারণ করতে পারেনি। টেলিভিশন ক্যামেরার লেন্স জুম করে যতটা দেখানো গেছে তাতে চোখে পড়েছে শুধু সাদা টুপি আর টুপি। যেন সাদা বরফে ঢেকে গেছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বর থেকে পশ্চিমে বায়তুল মোকাররম ছাড়িয়ে পল্টন মোড়, দক্ষিণে টিকাটুলি ইনকিলাবের মোড় আর উত্তরে মতিঝিল কলোনী মোড় হয়ে ফকিরের পুল।

ফজরের নামাজের পর থেকে উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম সব দিকের পথ ধরে 'নারায়ে তাকবীর,'আল্লাহু আকবার', কালেমা-জিকির আর প্রতিবাদের শ্লোগান দিতে দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজার হাজার তৌহিদি জনতা মতিঝিলের সমাবেশ স্থলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। সকাল ১১টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও সকাল ন’টার মধ্যেই গোটা মতিঝিল এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। স্বেচ্ছাসেবক: হেফাজতে ইসলামীর ডাকা মহাসমাবেশে ৩০ হাজার লোক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন বলে মহাসমাবেশের মঞ্চ থেকে জানানো হয়। তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা থেকে শুরু করে মুসল্লিদের পানি ও শুকনো খাবার সরবরাহ করে। অনেকে নিজেরাই বড় বড় ব্যাগে বা বস্তায় শুকনো খাবার নিয়ে এবং পানির বোতলের ডজন ডজন প্যাকেট ঘাড়ে বা মাথায় করে সমাবেশস্থলে আসে।

তাছাড়া, মতিঝিলমুখী সব রাস্তায় নগরবাসী ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভ্যান গাড়িতে করে বা টেবিল সাজিয়ে পানি, সরবত, লেবু, শশা, বিস্কুট, পাউরুটি ও হাল্কা খাবার সরবরাহ করে পায়ে হেটে সমাবেশে যাওয়ার পথে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত মিছিলকারিদের আপ্যায়ন করে। এদিকে, আজ দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সড়ক, রেল ও নৌপথ বন্ধ থাকে। রাজধানীর আশপাশের এলাকা থেকে পায়ে হেঁটেই ঢাকায় এসেছেন হেফাজতে ইসলামের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক। আর যানবাহনের অভাবে যাদের পক্ষে ঢাকায় আসা সম্ভব হয়নি তারা মহাসড়কেই অবস্থান নিয়েছেন। ফরিদপুরে আ. লীগ কর্মী নিহত: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় হেফাজতে ইসলাম, পুলিশ ও হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা ত্রিমুখী সংঘর্ষে এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন।

তার নাম নওশের খান (৪০)। পুলিশসহ আহত হয়েছেন আরো ১৫ জন। আজ সকালে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা লংমার্চের জন্য ঢাকা অভিমুখে রওনা দিতে চাইলে পুলিশ ও হরতাল সমর্থকরা বাধা দেয়। তারা ভাঙ্গা চৌরাস্তার মোড়ে জায়নামাজ বিছিয়ে সড়কে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ ও হরতালকারীরা হেফাজতের নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হয়।

এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে নওশের খান নিহত হন। এসময় পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোঁড়ে। চট্টগ্রাম: ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দিতে ব্যর্থ হয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রামের ওয়াসা মোড়ে আজ শনিবারও অবস্থান করছেন। ওই স্থানটিকে ইসলামী মঞ্চ ঘোষণা করে তারা জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থেকে নড়বেন না তারা। এদিকে, হেফাজতের লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর এ অবস্থান আজ সকালে আলমাস সিনেমা হল থেকে ওয়াসা মোড় পর্যন্ত এবং লালখান বাজার থেকে গরিবুল্লাহ শাহ মাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে পড়ে।

সিলেট: সিলেট থেকে সড়ক বা রেল পথে ঢাকার লংমার্চে যেতে না পেরে হেফাজতে ইসলামের হাজার হাজার কর্মী শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান করতে থাকেন। তারা সে স্থানকে ইসলামী জাগরণ মঞ্চ ঘোষণা করে জানিয়ে দেন- ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা এখানেই অবস্থান করবেন। খুলনা: খুলনার হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা লংমার্চে অংশ নিতে না পারায় নগরীর পুরাতন কাঁচাবাজারে ইসলামি মঞ্চ স্থাপন করে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেন। আজ সকাল সোয়া ১০টায় পুলিশ ইসলামী মঞ্চের কার্যক্রম বন্ধ করে সেখান থেকে তাদের উঠিয়ে দেয়। বগুড়ায়ও একই ধরনের অবস্থান কর্মসুচি পালন করা হচ্ছে।

সূত্রঃ রেতে  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.