আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি ছবির কথা, একদল অসহায় তরুণ সাংবাদিকের কথা...ভিন্ন চোখে ভিন্ন পাঠ

কতদিন ধরে সিনেমা হলে যাওয়া হয় না। বাংলা চলচ্চিত্র যখন থেকে জীবিত রিয়াজকে সাদা কফিন পরালো তখন থেকে। তবু সেদিন বিকালে একটু অবসরে প্রাণের বন্ধুটিকে নিয়ে বলাকায় গিয়ে দেখে আসলাম বেইলি রোড । কথিত বংলা ছবির বাইরের মনে হল ছবিটিকে। একজন নাট্যকর্মীর নির্মম জীবনের ছিটে ফোটা উঠে এসেছে কায়ানাতের নির্মানে।

আমি অসহায় নায়কের জীবনটা নিজের বাস্তব জীবনের সাথে মিলাই। চোখ ফেটে পানি আসে। সত্যিইতো সাহিত্য,সংস্কৃতি আর সাংবাদিকতার পথে যে চলতে চায় তার জীবনে অন্তত অর্থনৈতিক মুক্তি নেই। সংবাপত্রগুলো কাকে শুনায় অধিকারের বাণী। অথচ তাদের মত স্বৈরাচারি এ পৃথিবীতে ২য়টি আর নেই।

মিডিয়ায় দ্রুত প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কোন সুযোগ নেই , মিডিয়া সম্রাটরা শুষে নেয় তরুণ মিডিয়া শ্রমিকের তাজা রক্ত। বিনিময়ে কিছুই পায় না তরুণ সংবাদকর্মী বা মিডিয়াকর্মী। তবু কাজ করে পেশাকে ভালবেসে শুধু নেশার জোরে। ছবিটা দেখে নিজের ভিতরের প্রেমটাকে আবার নতুন করে চিনি। আমাদের বয়সটাতে(১৬-২৫)নাকি প্রেম আসে মিনিট কি সেকেন্ডে আর বুড়োদের জীবনে প্রেম আসে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিতে।

বৃদ্ধ পুরুষ মেয়ে মানুষ দেখে লালা ফেলে আর তরুণরা লজ্জ্বার মাথা খেয়ে গান ধরে... তবে মেয়েদের জীবন প্রেম কিভাবে আসে? বলতে গেলে এ সমাজ ছুরে ফেলে দিবে আমাকে... পুরুষ সর্বস্ব বিলিয়ে দেয় আর মেয়ে কষ্টের নদীতে ভেসেও পরম সুখে থাকে...চাইলেই খুঁজে নিতে পারে যে কাউকে। এ সামজে চাইলেই একজন ছেলে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না কিন্তু মেয়েরা পারে। ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয় দেহ... দু তিনদিন আগে মানষিক যন্ত্রণাগুলো ভুলে থাকার আশায় গেলাম রায়ের বাগের নিপুন সিনেমা হলে। ওখানে সাকিব ভাইয়ার “দুই নাম্বার” টাইটেলের ছবি চলছে। আর দেখা হল না ।

বিমর্ষ মন নিয়ে বাংলা ছবিকে আশির্বাদ দিয়ে ফিরে এলাম। আজ মনটা খারাপ। খুব করে বঞ্চনার শিকার হয়েছি এক জায়গায় । সিনেমা হলে যাব কিন্তু পকেটে টাকা নাই তাই লেখতে বসলাম...আমাদের নজরুলতো অনেক আগেই বলে গেছেন এসব কথা দেখুননা ভিতরের চোখ দিয়ে পড়ে... কুলি-মজুর দেখিনু সেদিন রেলে, কুলি ব’লে এক বাবু সা’ব তারে ঠেলে দিলে নীচে ফেলে! চোখ ফেটে এল জল, এমনি ক’রে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল? যে দধীচিদের হাড় দিয়ে ঐ বাষ্প-শকট চলে, বাবু সা’ব এসে চড়িল তাহাতে, কুলিরা পড়িল তলে। বেতন দিয়াছ?-চুপ রও যত মিথ্যাবাদীর দল! কত পাই দিয়ে কুলিদের তুই কত ক্রোর পেলি বল্‌? রাজপথে তব চলিছে মোটর, সাগরে জাহাজ চলে, রেলপথে চলে বাষ্প-শকট, দেশ ছেয়ে গেল কলে, বল ত এসব কাহাদের দান! তোমার অট্টালিকা কার খুনে রাঙা?-ঠুলি খুলে দেখ, প্রতি হঁটে আছে লিখা।

তুমি জান না ক’, কিন- পথের প্রতি ধূলিকণা জানে, ঐ পথ, ঐ জাহাজ, শকট, অট্টালিকার মানে! আসিতেছে শুভদিন, দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ! হাতুড়ি শাবল গাঁইতি চালায়ে ভাঙিল যারা পাহাড়, পাহাড়-কাটা সে পথের দু’পাশে পড়িয়া যাদের হাড়, তোমারে সেবিতে হইল যাহারা মজুর, মুটে ও কুলি, তোমারে বহিতে যারা পবিত্র অঙ্গে লাগাল ধূলি; তারাই মানুষ, তারাই দেবতা, গাহি তাহাদেরি গান, তাদেরি ব্যথিত বক্ষে পা ফেলে আসে নব উত্থান! তুমি শুয়ে র’বে তেতালার পরে আমরা রহিব নীচে, অথচ তোমারে দেবতা বলিব, সে ভরসা আজ মিছে! সিক্ত যাদের সারা দেহ-মন মাটির মমতা-রসে এই ধরণীর তরণীর হাল রবে তাহাদেরি বশে! তারি পদরজ অঞ্জলি করি’ মাথায় লইব তুলি’, সকলের সাথে পথে চলি’ যার পায়ে লাগিয়াছে ধূলি! আজ নিখিলের বেদনা -আর্ত পীড়িতের মাখি’ খুন, লালে লাল হ’য়ে উদিছে নবীন প্রভাতের নবারুণ! আজ হৃদয়ের জমা-ধরা যত কবাট ভাঙিয়া দাও, রং-করা ঐ চামড়ার যত আবরণ খুলে নাও! আকাশের আজ যত বায়ু আছে হইয়া জমাট নীল, মাতামাতি ক’রে ঢুকুক্‌ এ বুকে, খুলে দাও যত খিল! সকল আকাশ ভাঙিয়া পড়-ক আমাদের এই ঘরে, মোদের মাথায় চন্দ্র সূর্য তারারা পড়-ক ঝ’রে। সকল কালের সকল দেশের সকল মানুষ আসি’ এক মোহনায় দাঁড়াইয়া শোনো এক মিলনের বাঁশী। একজনে দিলে ব্যথা- সমান হইয়া বাজে সে বেদনা সকলের বুকে হেথা। একের অসম্মান নিখিল মানব-জাতির লজ্জা-সকলের অপমান! মহা-মানবের মহা-বেদনার আজি মহা-উত্থান, উর্ধ্বে হাসিছে ভগবান, নীচে কাঁপিতেছে শয়তান! একজন তরুণ সাংবাদিকের জীবন একজন কুলির চেয়ে ও নির্মম। পার্থক্য শুধু ভদ্রতার একটা খোলস।

যার আড়ালে সব চলে...সব... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.