আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রাম বাংলার কৃষকরা কেমন আছে

যে জানেনা এবং জানে যে সে জানেনা সে সরল, তাকে শেখাও। যে জানেনা এবং জানেনা যে সে জানে না, সে বোকা-তাকে পরিত্যাগ কর। আমাদের গ্রাম বাংলার মাটির মানুষের কাছাকাছি ছুটে যেতে মন চায় না কার! শহুরে জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও মন ছুটে যেতে চায় একটু ঘুরে আসতে। মাটির মানুষের সাথে একেবারে মিশে গিয়ে গ্রামীণ জীবন উপভোগ করতে। গ্রামের একেবারে কৃষক পর্যায়ের মানুষেরা কেমন আছে- তার খোঁজ আমরা অনেকেই রাখি না।

কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্যই আমরা ভোগ করে থাকি। গ্রামে যে পণ্যদ্রব্য উৎপাদিত হয় তা কয়েক হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছায়। এতে দাম বেড়ে যায়। কৃষক ন্যয্য মূল্য পায় না। অনেক সময় কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠে আসে না।

কিন্তু মধ্যসত্ত্বভোগীরা ঠিকই মুনাফা লুটে নেয়। গত শুক্রবার আমি চলে গিয়েছিলাম মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলায়। উপজেলা থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর বিশাল চর। এই চরের কৃষকরা কেমন আছে চলুন দেখে আসি... পদ্মা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বিশাল চর পড়েছে। সেই চরের মাঝখান দিয়েই হাঁটা।

পদ্মা নদী এখান থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে। চরের মাঝখানে একটি বাড়ি দেখা যায় দূর থেকে। ধূ ধূ চরের মাঝখানে এই বাড়ির মালিক কৃষিকাজ করেন। স্ত্রী এবং দুই মেয়ে নিয়ে চারজনের পরিবার। চরে বাড়ি করেছেন প্রায় ৩ বৎসর হলো।

১৯৭২ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন। সেনাবাহিনীর চাকুরির জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু চাকুরি না করে গ্রামে কৃষিকাজ করার মনস্থির করেছেন। নদী ভাঙ্গনে তাদের সব জমি পদ্মার পেটে গিয়েছিল। নদী সরে যাওয়ায় আবার জমিগুলো পেয়েছেন।

এখন পুরোদমে কৃষি কাজ নিয়েই আছেন। বাড়িতে বিশাল বিশাল দুটি ট্রাক্টর দেখা যায়। এই ট্রাক্টরগুলো এসেছে সুদূর নড়াইল থেকে। চুক্তিভিত্তিতে জমি চাষ করার জন্য ট্রাক্টর চলে আসে শীত মৌসুমে। বৈশাখ পর্যন্ত থাকবে।

৫ টাকা শতাংশ প্রতি জমি চাষ করা হয় ট্রাক্টর দ্বারা। বিঘাপ্রতি ২ লিটার ডিজেল লাগে। জীবিকা নির্বাহের জন্য পেশাটি অদ্ভূতই বটে। এই চর এলাকার যানবাহন বলতে ঘোড়ার গাড়ি। বর্ষাকালে শুকিয়ে যাওয়া পদ্মার নিচু এলাকায় পানি উঠে।

পুরো চরে টমেটু, গম, বাদাম, ধান, মসুরি, কলাই, গাজর ইত্যাদি চাষ করা হয়। গৃহস্থরা বাড়ির আঙ্গিনায় বিভিন্ন সবজিও চাষ করে। এবার কৃষকরা টমেটু চাষ করে ভালো ফলন করতে পারেনি। আর দামেও কম পাচ্ছে। মাত্র ১০ টাকা কেজি বা ৪০০ টাকা মন বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে।

চাষের খরচটাও ওঠে আসছে না। তারপরও কৃষকরা থেমে নেই। আমাদের উৎপাদনের চাকা সচল রাখার জন্য পরবর্তী চাষে মনোনিবেশের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।