আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সীমার মাঝে অসীমের খোঁজ

আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি। কিস্তি ::৬১: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ক্লাশ হতো লেকচার থিয়েটারের দোতলায়, কোনার রুমটাতে। প্রথম যে দিন আসি রুমে ঢুকেই পরিচিতদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল ফারুক ও মুস্তাফিজ মামুনকে পেলাম। কিছুটা স্বস্তি যে ডিপার্টমেন্টে পরিচিত কেউ আছে।

ধীরে ধীরে অন্যদের সাথে পরিচিত হওয়া যাবে। এর মধ্যে মামুন আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো মাহমুদকে। চাঁদপুর বাড়ি ওদের। আমার বাড়ি নোয়াখালী শুনে, ও বলল, দাঁড়া তোর এলাকার একটা ছেলে আছে, ওরে ডাকি। বাবু ওর নাম।

আসল নাম সাইফুল করিম চৌধুরী। সেই প্রথম ওর সাথে আমার পরিচয়। আমার ঘনিষ্ঠতম বন্ধুদের একজন বাবু। প্রথম পরিচয়ে আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্কের সূচনা। ক্যাম্পাসে আমি বাবু ও মাহমুদ এক সাথে চলতাম।

আমাদের সাথে আরো কিছু ছেলে মেয়ে ছিল, তবে আমরা তিনজনই বেশির ভাগ সময় এক সাথে থাকতাম। এর মধ্যে রোকনও ছিল। পাবনার ছেলে রোকন এখন এডওয়ার্ড কলেজের মাস্টার। বিশ্ববিদ্যালয়ের যখন ক্লাশ শুরু করি তখন আমাদের এ সেকশনের যারা ক্লাশ নিতেন, তাদের প্রায় সবাই নতুন টিচার। মেধাবী।

সদ্য পাস করে জয়েন করেছেন। তাদের কথা শুনে মনে হলো আমি ভালো করতে পারবো। কারণ শন্তনু মজুমদার, মনির হোসেন সহ অন্যরা ঘোষনা করলেন গৎবাঁধা পড়াশোনা বাদ দিতে হবে। পুরনো নোট পড়ে পড়াশোনার দিন শেষ। আমি তো খুবই খুশী।

কারণ আমি গৎ বাঁধা ছকের জীবনের বাইরে সব সময় ছিলাম, এখনো আছি। আমি ক্লাশ করতাম, তবে সব সময় আসা হতো না। কারণ বাইরে আড্ডা দিতাম। ক্লাশ শুরুর দুই মাস পরের ঘটনা। আমাদের প্রথম ইনকোর্স পরীক্ষা নিলেন মনির স্যার।

তখনো ক্লাশে আমি পরিচিত নই। কিন্তু স্যারের পরীক্ষায় আমি ১০ এ সাড়ে ৮ পেয়েছি। স্যার আমাকে খুঁজলেন কাশে। এটি দুদিন পর কাশে আসার পর জানলাম। এ ঘটনার পর অনেকেই স্বেচ্ছায় আমার সাথে পরিচিত হলো।

আমিও কারো কারো সাথে আগ বাড়িয়ে গল্প করছি। আমার খুবই ভালো লাগছিল যে আমার ক্লাশের বন্ধুর সংখ্যা বাড়ছে। সবার সাথে পরিচিত হতে ভালোও লাগছিল। আমরা প্রতিদিন সকালে ক্লাশ করতে আসতাম, ৮ টা থেকে ক্লাশ ছিল। ক্লাশের ফাঁকে আড্ডা মারতাম লেকচার থিয়েটারের কার্ণিশে।

সেখানে কত রকমের আড্ডা হতো। ছেলে মেয়ে সবাই যেন কতদিনের চেনা। এর মধ্যে আমাদের বন্ধুদের ভেতর মাহমুদ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক তরুণ তরুণীর সাথে পরিচিত হয়ে গেলো। ওর থ্রোতে আমরাও অনেকের সাথে পরিচিত হলাম। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী ভর্তি হন প্রতিবছর।

সবার সবাইকে চেনা ভারি মুশকিল। ক্যাম্পাসে প্রথম কয়েকমাস এ পাড়া ও পাড়া করেই কাটলো। এর মধ্যে ক্লাশের পড়ার পাশাপাশি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাবের সাথে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কোন ধরণের কাজকে আমরা বেছে নেবো তা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। শুরুতেই আমরা তিনজই বিএনসিসিতে ভর্তি হলাম।

আমি অবশ্য এটি শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারিনি। কারণ নিয়ম নীতি আমার ভাল্লাগে না। প্রথম যে ক’দিন করেছি একেবারেই পারফেক্ট। পরে এটি চালিয়ে যাওয়াটা আমার জন্য সমস্যা হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে শুক্রবার বিএনসিসি’র কাশ।

আমি ছুটির দিনটি বরাদ্দ রাখতাম, আরামের জন্য। তাই বিএনসিসি করা হয়নি। আমার সব সময় মনে হতো, জীবনের সবটুকু কোথাও দিতে নেই। আমি দিতে চাইও না। আমি সীমার মধ্যে অসীমের খোঁজ করি।

এতেই আমার আনন্দ। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.